সাঘাটায় চার মাস পর খুললো ঐতিহ্যবাহী শিমুলবাড়ী মাদ্রাসা, প্রশাসনের হাতে চাবি হস্তান্তর
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিমুলবাড়ী আলমাহাদ ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) মাদ্রাসাতুস সালাফিয়া ওয়াতাহফিজুল কুরআন ওয়াদারুল ইয়ামিন চার মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে। আধিপত্য নিয়ে বিরোধের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এ মাদ্রাসার চাবি আনুষ্ঠানিকভাবে কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করেছে প্রশাসন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল কামাহ্ তমাল-এর নেতৃত্বে এবং সাঘাটা ও ফুলছড়ি দুই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর উপস্থিতিতে মাদ্রাসাটির চাবি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে এবং স্থবির থাকা পাঠদান ও কুরআন হিফজ কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।
দীর্ঘ প্রায় দুই শত বছরের পুরনো এই প্রতিষ্ঠানটি সাঘাটাসহ আশপাশের অঞ্চলে একটি ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় শিমুলবাড়ী গ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মাদ্রাসাটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে।
তবে সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী গ্রামের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি মহল মাদ্রাসার জমি ও অবকাঠামো দখলের চেষ্টা চালায়। তারা ‘অন্য জ্ঞানের ভবন’ নামে নতুন প্রতিষ্ঠান চালুর উদ্যোগ নিলে স্থানীয়রা বাধা দেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ, মামলা-মোকদ্দমা ও উত্তেজনা দেখা দেয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ১০ জুন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর প্রশাসন মাদ্রাসাটি তালাবদ্ধ করে চাবি নিজ নিয়ন্ত্রণে নেয়।
অবশেষে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে মাদ্রাসাটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে।
মাদ্রাসার সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুশফিকুর রহমান মশিউর বলেন,
“এই ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসাটি তাওহীদ ট্রাস্টের আওতায় পরিচালিত। প্রফেসর ড. মো. আসাদুল্লাহ আল গালিবের পাওয়ার অব অ্যাটর্নি অনুযায়ী প্রশাসনের কাছ থেকে আমি চাবি গ্রহণ করেছি।”
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সম্পাদক হেবাতুর রহমান এবাদুর বলেন,
“একটি কুচক্রীমহল মাদ্রাসার ২৮ বিঘা জমি দখল করে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু এলাকার মানুষ তাদের সেই উদ্দেশ্য সফল হতে দেয়নি।”
অর্থ সম্পাদক ছাইদুর রহমান বলেন,
“তারা দীর্ঘদিন ধরে অন্য এলাকার একটি মাদ্রাসা এনে এখানে চালানোর পাঁয়তারা করছিল।”
স্থানীয়রা বলেন,
“প্রশাসনের মাধ্যমে কাগজপত্র যাচাই করে প্রকৃত কর্তৃপক্ষের হাতে চাবি হস্তান্তর হওয়ায় আমরা খুশি। এতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ হলো।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল কামাহ্ তমাল বলেন,
“দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা মাদ্রাসার বৈধ কাগজপত্র যাচাই করে প্রশাসন মধ্যস্থতা করেছে। এখন থেকে স্বাভাবিকভাবে পাঠদান কার্যক্রম চলবে।”
