প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:০৫
রায়গঞ্জে নও মুসলিম বিধবা রহিমা বেওয়ার মানবেতর জীবনযাপন
উপজেলা সংবাদদাতা, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জঃ
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ধামাইনগর ইউনিয়নের বাঁকাই (শিকারপুর) গ্রামের নও মুসলিম বিধবা রহিমা বেওয়া (৬৫) জীর্ণ-শীর্ণ একটি মাটির ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ঘরটির অধিকাংশ অংশ ধসে পড়েছে, টিনের চালা মরিচা ধরে জায়গায় জায়গায় খসে পড়েছে। টিনে অসংখ্য ফুটো থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের ভেতর পানি ঢুকে পড়ে। ঘরে নেই আলো, টিউবওয়েল ও লেট্রিনের কোনো ব্যবস্থা।
রহিমা বেওয়া সাত বছর বয়সে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং পাশের গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের দীর্ঘ সময়েও তাদের কোনো সন্তান হয়নি। প্রায় ১৬–১৭ বছর আগে স্বামী মারা গেলে জীবনের সব অবলম্বন হারান তিনি। এরপর থেকে একাই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
বর্তমানে অর্থাভাবে চিকিৎসাও করাতে পারছেন না রহিমা বেওয়া। বয়সের ভার ও অসুস্থতার কারণে এখন আর কাজ করতেও পারেন না। চোখে কম দেখেন, শারীরিক অবস্থাও দুর্বল। অন্যের দয়ায় কখনো আধা পেট খেয়ে, কখনো না খেয়েই দিন পার করেন এই অসহায় নারী।
বুধবার (১২নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধসে পড়া ঘরের এক পাশে পলিথিন ও খড়খুটো দিয়ে ঠেকিয়ে রেখেছেন রহিমা বেওয়া। ঘরের চারপাশে কাদা পানি, ভিতরে অন্ধকার ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ।
কাঁদতে কাঁদতে রহিমা বেওয়া বলেন, আমি অনেক কষ্টে দিন কাটাই। সরকার আর সমাজের বৃত্তবানদের কাছে মিনতি করি আমার যেন একটা টিনের ঘর আর সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে দেয় সেই সঙ্গে তাকে যেন গরু ছাগল পালনের মতো ব্যবস্থা করে দেওয়া হলে আর অন্যের বাড়িতে ভিক্ষা করতে না হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ বলেন, বৃদ্ধ রহিমা বেওয়া খুব কষ্টে আছেন। বর্ষা বা শীতের সময় ওই ঘরে থাকা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়ে। সমাজের বৃত্তবান ব্যক্তি কিংবা প্রশাসন যদি সহায়তার হাত বাড়ায়, তাহলে অন্তত একটি নিরাপদ আশ্রয় পেতে পারেন তিনি।
এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে খুব দ্রুতই তার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।
