প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:১৮

রংপুরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নিরলস পুলিশ: সচেতনতাই পারে বদলে দিতে নগর চিত্র

জালাল উদ্দিন, রংপুর প্রতিনিধি:
রংপুরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নিরলস পুলিশ: সচেতনতাই পারে বদলে দিতে নগর চিত্র

রংপুর মহানগরে প্রতিদিন বাড়ছে যানবাহনের চাপ, অথচ সড়কের পরিধি সেই তুলনায় বাড়ছে না—ফলে নগরীর ট্রাফিক পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। এই কঠিন বাস্তবতায়ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করছে নগরবাসীর নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে।

ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি ট্রাফিক) লিমন রায় বলেন, “সকাল ছয়টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত, কখনো বিশেষ প্রয়োজনে আরও বেশি সময় আমাদের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। সীমিত জনবল ও প্রতিকূল পরিবেশেও তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন।”

তিনি জানান, নগরীর ব্যস্ততম মোড়গুলো—পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানির মোড়, মডার্ন মোড়, সাতমাথা ও বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়—এ অতিরিক্ত জনবল মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা ও ডিজিটাল মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ট্রাফিক পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।

লিমন রায় বলেন, “অপ্রত্যাশিত যানজট দেখা দিলে আমরা দ্রুত অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করি, যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা যায়।”

ক্লিনিক এলাকার অবৈধ পার্কিং নিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক মোড় থেকে মেডিকেল মোড় পর্যন্ত অনেক ক্লিনিকের নিজস্ব পার্কিং না থাকায় সড়ক দখল হচ্ছে। আমরা রোগী ও অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজনে সাময়িক পার্কিং কনসিডার করি, তবে বেশি সময় থাকলে মামলা দিই।”

গত অক্টোবর মাসে রংপুর মেট্রোপলিটন ট্রাফিক বিভাগ ৫০১টি মামলা করেছে এবং চার শতাধিক যানবাহন আটক করেছে বলে জানান ডিসি ট্রাফিক। “আমাদের লক্ষ্য কাউকে কষ্ট দেওয়া নয়; মানুষকে সচেতন করা ও সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা,” তিনি যোগ করেন।

বর্তমানে নগরীতে সাত থেকে আটটি চেকপোস্ট পরিচালিত হচ্ছে, বিশেষ করে মেডিকেল মোড়, পায়রা চত্বর, সাতমাথা, জাহাজ কোম্পানি ও মডার্ন মোড়ে। পাশাপাশি শহরের ২৭টি প্রবেশপথে নিয়মিত অভিযান চলছে, যাতে গ্রামীণ নাম্বারপ্লেটবিহীন যানবাহন প্রবেশ করতে না পারে।

ডিসি ট্রাফিক জানান, “রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় ২৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ট্রাফিক বিভাগের জনবল মাত্র ১০১ জন। জনবল বৃদ্ধি প্রয়োজন, তবে নাগরিক সচেতনতা ছাড়া শুধুমাত্র পুলিশ দিয়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।”

তিনি আরও বলেন, “ট্রাফিক সিগন্যালগুলো দ্রুত সচল করা হলে যানজট অনেকাংশে কমে আসবে। এছাড়া রাত ১০টার আগে কোনো ভারী যানবাহন শহরে প্রবেশ করতে পারে না—নিয়ম ভাঙলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

নগরবাসীর উদ্দেশ্যে ডিসি ট্রাফিকের আহ্বান, “রাস্তার মাঝখানে গাড়ি থামিয়ে কেনাকাটা বা যাত্রী ওঠানামার অভ্যাস পরিহার করুন। কয়েক মিনিটের অসচেতনতা পুরো এলাকায় যানজট তৈরি করে।”

সবশেষে তিনি বলেন, “আমরা চাই নাগরিকরা নিজের ও অন্যের নিরাপত্তার জন্য ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। সবাই সচেতন হলে রংপুর হবে একটি আরামদায়ক ও নিরাপদ নগর।”

উপরে