ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস: ৬৪ বছরের পুরোনো দালানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে কার্যক্রম
সিরাজগঞ্জ জেলার প্রধান ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটির কার্যক্রম চলছে ৬৪ বছরের এক পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে। যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা মাথায় নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত কাজ করছেন এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দীর্ঘদিন ধরে ভবনটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে, খসে পড়ছে পলেস্তারা এবং বেরিয়ে এসেছে পিলারের রড।
সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার ইলিয়ট সেতুর পাশে ১৯৬১ সালে এই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একতলা এই ভবনের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। গ্যারেজ, অফিস কক্ষ, এবং কর্মচারীদের থাকার ব্যারাকের দেয়াল ও ছাদে মারাত্মক ফাটল ধরেছে। জানালার গ্রিল বেঁকে গেছে এবং দরজার চৌকাঠগুলোও ভাঙা। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে, যা অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও সরঞ্জাম নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে।
কর্মচারীরা জানান, জেলার অন্য উপজেলায় নতুন ও আধুনিক ফায়ার স্টেশন থাকলেও সদর দপ্তরের এই করুণ দশা। অথচ এটি একটি প্রথম শ্রেণির জেলার প্রধান স্টেশন। ফায়ার ফাইটার আব্দুর সবুর তালুকদার বলেন, "ব্যারাকে থাকার মতো পরিবেশ নেই। ছাদ খসে পড়ে, দেয়ালে পানি জমে। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়।" তাদের আশঙ্কা, মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলেই ভবনটি ধসে পড়তে পারে, যা বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হবে।
স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম জানান, ভবনটি কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এই বিষয়ে সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান বলেন, "ঝুঁকি নিয়েই আমাদের সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য আমরা গণপূর্ত বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি এবং প্রক্রিয়াটি চলমান রয়েছে।"
সিরাজগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমাদুল হাসান ভবনটি পরিদর্শন করে এর ভয়াবহ অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, নতুন ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
জনগণের জরুরি সেবা প্রদানকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। দ্রুত নতুন ও নিরাপদ ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
