জিম্বাবুয়েকে হারাতে যা করতে হবে বাংলাদেশকে
কাগজে কলমে এখনো সম্ভাবনা আছে। গাণিতিক সমীকরণে এখনো বলা যায় বাংলাদেশের সেমিতে খেলার সুযোগ আছে। তবে সে সম্ভাবনা জিইয়ে রাখতে ৩০ অক্টোবর, রোববার ব্রিসবেনের দ্য গ্যাবায় জিম্বাবুয়েকে হারাতে হবে বাংলাদেশকে।
টাইগাররা কি তা পারবে? এইতো কয়েক মাসে জিম্বাবুয়ের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে নুরুল হাসান সোহান আর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের নেতৃত্বে জিম্বাবুয়ের কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এবার বিশ্বকাপে জিম্বাবুইয়ানদের সঙ্গে কি পেরে উঠবে সাকিব আল হাসানের দল?
ভক্ত-সমর্থকদের মনে রাজ্যের সংশয়, শঙ্কা। জিম্বাবুয়ের মাটিতে সর্বশেষ সিরিজে ১-২ ব্যবধানে হারের পরও তাদের বিপক্ষে বিশ্বকাপে জেতার আশায় বুক বেঁধেছেন অগণিত টাইগার ভক্ত-সমর্থক। কারণ, ওই সিরিজের আগে জিম্বাবুয়েকে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রায় বলে কয়েই হারিয়েছে টাইগাররা। তাই ভক্ত-সমর্থকদের আস্থা ও বিশ্বাসটা ছিল প্রবল।
কিন্তু গত ২৭ অক্টোবরের পর ভক্ত ও সমর্থকদের আস্থা ও বিশ্বাস অনেকটাই গেছে কমে। কেন কমবে না?
বাংলাদেশ যেদিন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে চরমভাবে হেরেছে ঠিক সেদিন রাতে শক্তিশালী পাকিস্তানকে ১ রানে হারিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে।
তাই জেগেছে প্রশ্ন, বাংলাদেশ কি এখন আর জিম্বাবুয়েকে হারাতে পারবে? বাবর আজম, রিজওয়ান, সান মাসুদ আর শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হারিস রউফদের হারিয়ে আকাশে উড়তে থাকা জিম্বাবুয়েকে কি মাটিতে নামাতে পারবে সাকিবের দল?
বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশ ৪৮ ঘণ্টা আগে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। নেদারল্যান্ডসের সাথে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে জেতা বাংলাদেশ ঠিক আগের ম্যাচে রাইলি রুশো আর কুইন্টন ডি ককের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের কাছে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে।
যে হার শুধু বিশ্বকাপে নয়, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার। এমন এক করুণ পরিণতির পর নিজেদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলাটাই স্বাভাাবিক নয় কি!
কাজেই বাংলাদেশের জন্য জিম্বাবুয়েকে হারানোটা এখন আরও কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং হয়ে গেছে। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে উন্নতির জোর তাগিদ তো আছেই। ব্যাটারদের ব্যাটে রান নেই। নেদারল্যান্ডস আর দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ম্যাচে কোন ব্যাটারের ফিফটি পর্যন্ত নেই । একটি বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউ।
বোলাররা ডাচদের বিপক্ষে দুর্বার হয়ে উঠলেও রাইলি রুশো আর কুইন্টিন ডি ককের উত্তাল উইলোবাজির মুখে খেই হারিয়ে ফেলেছিলেন। কাজেই ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই উন্নতি একান্তই জরুরি। পাশাপাশি নিজেদের আত্মবিশ্বাস ও সামর্থ্যের প্রতি আস্থা ফিরে পাবার প্রবল সংগ্রামও করতে হবে সাকিব বাহিনীকে।
জিম্বাবুয়ে এখন মনের দিক থেকে অনেক বেশি চাঙ্গা। মনোবলটাও জিম্বাবুইয়ানদের অনেক বেশি। তাদের হারাতে হলে ব্যাট ও বলে শ্রেয়তর নৈপুণ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশকে মনের লড়াইয়েও জিততে হবে।
আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যাচ্ছেতাই ভাবে হেরেছি। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে তেমন ভাল খেলিনি। তবে জিম্বাবুয়েকে হারানোর সামর্থ্য আছে। সে সামর্থ্যের প্রয়োগটা আমরা ৩০ অক্টোবর ব্রিসবেনের মাঠে করে দেখাবো। ক্রিকেটারদের এ দৃঢ় সংকল্পটা এখন খুব জরুরি।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন