প্রকাশিত : ১৩ নভেম্বর, ২০২২ ১০:৫৫

যেভাবে ফাইনালের মঞ্চে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান

অনলাইন ডেস্ক
যেভাবে ফাইনালের মঞ্চে ইংল্যান্ড-পাকিস্তান

দীর্ঘ এক মাস চলার পর আজ পর্দা নামছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসরের। ফাইনাল ম্যাচে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। এর আগে ১৬ দলকে নিয়ে গত ১৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

প্রথম রাউন্ডে দুই গ্রুপে অংশ নেয় আটটি দল। সেখান থেকে দুই গ্রুপের সেরা চারটি সুপার টুয়েলভে খেলার টিকিট পায়। তাদের জন্য সুপার টুয়েলভে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলো টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ের সেরা আটে থাকা দলগুলো।

সুপার টুয়েলভের আট দলের সাথে প্রথম রাউন্ডের সেরা চার দল যোগ দেয়। সুপার টুয়েলভে দুই গ্রুপে ১২ দলের লড়াইয়ের পর সেরা চার দল সেমিতে উঠে। সেমির লড়াইয়ে জিতে এবার বিশ্বকাপের সেরা দুই দল হিসেবে ফাইনালের মঞ্চে ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান।

যেভাবে ফাইনালের মঞ্চে ইংল্যান্ড
সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম খেলায় গত ২২ অক্টোবর পার্থে ইংল্যান্ড মুখোমুখি হয় আফগানিস্তানের। সেই ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে ৫ উইকেটে জয় তুলে নেন বাটলাররা। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই ইংলিশরা ধাক্কা খায় আয়ারল্যান্ডের কাছে।বৃষ্টিবিঘ্নিত সেই ম্যাচে আইরিশদের কাছে ৫ রানে পরাজয় বরণ করতে হয় তাদের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে বৃষ্টির কারণে তারা মাঠেই নামতে পারেনি। ফলে কঠিন হয়ে যায় সেমিতে ওঠার সমীকরণ।

দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর চতুর্থ ও পঞ্চম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০ রানে এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪ উইকেটে জেতে জস বাটলারের দল। সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে রানরেটও ঠিক রাখতে হয়েছে ইংলিশদের। তাদের সমান ৭ পয়েন্ট নিয়েও রানরেটে পিছিয়ে বাদ পড়ে অস্ট্রেলিয়া।

সেমিতে উঠেই যেন আসল চেহারায় হাজির হয় বাটলার বাহিনী। তবে ব্যাপারটা চমকে যাওয়ার মতো কিছু ছিল না। কারণ বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগেই নিজেদের সক্ষমতা সম্পর্কে জানিয়েছিলো ইংল্যান্ড। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে। অ্যাডিলেডে ভারতের মত টপ ফেবারিট দলকে ১০ উইকেটে হারের লজ্জা দিয়েই তৃতীয়বারের মত ফাইনালের মঞ্চে পা রেখেছে ইংলিশরা।

যেভাবে ফাইনালের মঞ্চে পাকিস্তান
পাকিস্তানের এবারকার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুটা মোটেও সুখকর ছিলো না। প্রথম ম্যাচেই মাঠে নামতে হয় চিরপ্রতিদ্বন্দী দেশ ভারতের বিপক্ষে। এই ম্যাচে শেষ ওভার অবধি লড়াইয়ে টিকে থাকলেও ৪ উইকেটের হার সঙ্গী হয় বাবর আজমের পাকিস্তানের। দ্বিতীয় ম্যাচে তারা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খায় হোঁচট। পার্থে মাত্র ১৩১ রান তাড়া করতে গিয়ে ১ রানে হেরে যায় পাকিস্তান।

ফলে সেমিতে যাওয়ার স্বপ্ন প্রায় ভাঙতেই বসেছিল আনপ্রেডিক্টেবলদের। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ তিন ম্যাচে জয় নিয়ে (নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৬ উইকেটে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩ রানে এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫ উইকেটে) সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

অবশ্য নেদারল্যান্ডস অঘটন ঘটাতে না পারলে এই তিন জয়ও কোনো কাজে আসতো না পাকিস্তানের। শেষ ম্যাচে সেমিতে উঠার লড়াইয়ে টিকে ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান। এমন সমীকরণে এগিয়ে ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের শেষ খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকা জয় পেলেই উঠে যেত তারা।

কিন্তু ডাচরা তা হতে দেয়নি। গত ৬ নভেম্বর দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো নেদারল্যান্ডস আর দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ম্যাচে অঘটন ঘটায় ডাচরা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দেয় ১৩ রানে।

ফলে সেমিতে যাওয়ার দৌড়ে টিকে থাকে শুধুমাত্র পাকিস্তান আর বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকা বাদ পড়ায় এ দিন দ্বিতীয় ম্যাচে এমন সমীকরণ দাড়ায় যে, যারাই জিতবে তারাই পাবে সেমিফাইনালের টিকিট। আর এ সুযোগটি লুফে নেয় পাকিস্তান। বাংলাদেশকে হারায় ৫ উইকেটে।

সেমিফাইনালে পাকিস্তান মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ডের। যারা কিনা আগের আসরের রানার্স আপ দল এবং চলতি আসরেও ছিলো দারুণ ছন্দে। তবে পাকিস্তান বরাবর এর মত নিজেদের আনপ্রেডিক্টেবল দল প্রমাণ করে তাদের সঙ্গেও ৭ উইকেটে জয় পায়। আর এই জয়ে তৃতীয়বারের মত ফাইনালে উঠে তারা।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে