প্রথমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপ: রংপুরের ফারজানা ইয়াসমিন মেধার স্বপ্নপূরণের পথে একধাপ
এবারেই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী এশিয়া কাপ। টুর্নামেন্টটি শুরু হবে আগামী রোববার, ১৫ ডিসেম্বর, মালয়েশিয়ায়। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল সেখানে পৌঁছে গেছে এবং প্রস্তুতি শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ঘোষিত ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে জায়গা করে নিয়েছেন রংপুরের দুই কৃতি নারী ক্রিকেটার ফারজানা ইয়াসমিন মেধা এবং জান্নাতুল মাওয়া। ফারজানা একজন প্রতিভাবান অলরাউন্ডার। তার বাড়ি রংপুর নগরীর গুড়াতিপাড়া এলাকায়।
মেধার ক্রিকেটার হয়ে ওঠার গল্প
ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের প্রতি মেধার গভীর টান ছিল। রংপুর ক্রিকেট গার্ডেনের কোচ মুন্না ও সাকিলের তত্ত্বাবধানে ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয় তার। পরবর্তীতে বিকেএসপি (বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান)-তে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হন মেধা। বর্তমানে তিনি দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
মেধা প্রথমবার দেশের বাইরে গিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ খেলছেন। এর আগে তিনি রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের হয়ে খেলেছেন এবং রাজশাহী বিভাগের হয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচসহ বিভিন্ন পুরস্কার জিতেছেন।
কঠিন সংগ্রামের মাঝে এগিয়ে যাওয়া
ফারজানা ইয়াসমিনের মা মনোয়ারা বেগম জানান,
"খুবই কষ্টের সংসার আমাদের। তারপরও মেধার স্বপ্ন পূরণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। সে জাতীয় দলে খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করুক—এটাই আমার চাওয়া। আপনারা সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।"
ফারজানার বাবা দুলাল হোসেন একজন দিনমজুর। স্ট্রোকজনিত কারণে বর্তমানে তিনি শয্যাশায়ী। পরিবারে তার বড় ভাইয়ের পাশাপাশি ছোট ফারজানাই এখন তাদের গর্ব।
স্বপ্নপূরণের আকাঙ্ক্ষা
ফারজানা ইয়াসমিন নিজেও রংপুরবাসীসহ সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি বলেন,
"আমি অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে ভালো খেলার মাধ্যমে জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে চাই। দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে চাই।"
ফারজানার কোচ মুন্না বলেন,
"ছোটবেলা থেকেই মেধার মধ্যে ক্রিকেটের প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহ দেখেছি। তার খেলার প্রতি নিষ্ঠা ও পরিশ্রমই তাকে এতদূর নিয়ে এসেছে। যদি এভাবে এগিয়ে যায়, তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।"
ফারজানা ইয়াসমিন মেধা এবং জান্নাতুল মাওয়ার মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা এশিয়া কাপে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন—এটি শুধু রংপুর নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্যই গর্বের বিষয়।