১৬ বছর পর প্রাণ ফিরল বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে - আলো ছড়ালেন কালাম ও ইমন
অবহেলা আর অযত্নে ধুঁকে ধুঁকে মরতে বসেছিল বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। রাজনীতির ঘূর্ণাবর্তে ১৬ বছর ধরে উপেক্ষিত ছিল এক সময়ের গৌরবময় এই মাঠ। অবশেষে সেই নীরবতা ভেঙে ফিরেছে ক্রিকেট, ফিরেছে দর্শকদের উন্মাদনা।
গত মাসে জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) দিয়ে স্টেডিয়ামে ক্রিকেটের প্রত্যাবর্তনের পর এবার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ ক্রিকেট দলের ম্যাচে মুখর হয়ে উঠেছে গ্যালারি। মঙ্গলবার আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব–১৯ দলের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে উপচে পড়া দর্শক সমাগমে মুখরিত ছিল পুরো মাঠ। আলো স্বল্পতার কারণে ডাকওয়ার্থ–লুইস (ডি/এল) পদ্ধতিতে ম্যাচটি ৫ রানে জিতেছে বাংলাদেশের যুবারা।
ম্যাচে বল হাতে জ্বলে উঠেছেন তরুণ পেসার ইকবাল হোসাইন ইমন, ৫ উইকেট শিকার করে হয়েছেন ম্যাচসেরা। ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন যশোরের কালাম উদ্দীন অ্যালেন, যিনি দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে বগুড়ার দর্শকদের মাতিয়েছেন। তাঁর ব্যাটে আফগানিস্তানের উজাইরুল্লাহ নিয়াজাইয়ের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ম্লান হয়ে যায়।
স্পোর্টিং উইকেটের জন্য পরিচিত এই স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং নেয় আফগান অনূর্ধ্ব–১৯ দল। শুরুটা ভালো হলেও বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে থামতে হয় ২৬৫ রানে। ওপেনার খালিদ আহমেদজাই করেন ৩৪ ও ওসমান সাদাত ১৫ রান। এরপর উজাইরুল্লাহ নিয়াজাই একাই লড়েছেন—১৩৭ বলে ১৪০ রানের অপরাজিত ইনিংসে ১৬টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান।
জবাবে বাংলাদেশ দলের শুরুটা ছিল হতাশাজনক। ১৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনার জাওয়াদ আবরার (১৪) ও অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম (০) আউট হয়ে যান। এরপর ৬০ রানে রিফাত বেগ (২৬) বিদায় নিলে চাপে পড়ে দল। তবে চারে নামা কালাম উদ্দীন অ্যালেন (১০১) ও পাঁচে নামা রিজান হোসেন (৭৫)* ১৩৯ রানের জুটি গড়ে দলকে ঘুরে দাঁড় করান।
শেষ ৪ ওভারে জিততে ৩৫ রান দরকার থাকলেও আলো স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ডাকওয়ার্থ–লুইস মেথডে বাংলাদেশ ৫ রানে জয় পায়।
এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে শুধু অনূর্ধ্ব–১৯ দলের জয়ই নয়, ১৬ বছর পর শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে প্রাণ ফিরে পাওয়া ক্রিকেটপ্রেমী বগুড়াবাসীর মুখেও ফিরেছে হাসি।
