রাজধানীতে পাঁচতলা থেকে ‘জঙ্গির’ লাফ!
জঙ্গি দমনে ঢাকা মহানগর পুলিশের বিশেষায়িত শাখা কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ভবনের পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছেন নব্য জেএমবির এক সদস্য। সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, লাফিয়ে পড়া ওই আসামির নাম শেখ গোলাম হোসেন ওরফে মিলাদ (২৬)। ঘটনার সময় তাঁকে ওই ভবনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল।
রাজধানীর মিন্টো রোডে পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ কার্যালয়ের সীমানার ভেতরে সড়কের ধারে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের আটতলা ভবন। ভবনটির মাঝ বরাবর বারান্দায় কাচের দরজা আছে। তবে কোনো রেলিং বা গ্রিল নেই। বেশির ভাগ সময় কাচের দরজা খোলা থাকে। পাঁচতলার ওই খোলা বারান্দা দিয়ে গোলাম হোসেন লাফ দেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ঘটনার সময় ওই ভবনের আটতলার ছাদ থেকে দড়ির মই লাগিয়ে এসি মেরামতের কাজ করছিলেন কয়েকজন শ্রমিক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে হঠাৎ একটি বিস্ফোরণের মতো শব্দ হয়। শব্দ শুনে পাশের ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন ঘুরে দেখেন, একটি গাড়ির ছাদ থেকে রাস্তার ওপর কেউ একজন এসে পড়লেন। লোকজন দৌড়ে গিয়ে তাঁকে শুশ্রূষার চেষ্টা করেন। এরপর তাঁকে পুলিশের একটি গাড়িতে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ওই ব্যক্তি প্রথমে বিদ্যুতের তারের ওপর পড়েন। সেখান থেকে রাস্তার পাশে পুলিশের জব্দ করা একটি প্রোবক্স গাড়ির ছাদে, তারপরে রাস্তার ওপর ছিটকে পড়েন। তাঁর জিনস প্যান্ট কোমরের দিকে ছেঁড়া অবস্থায় দেখা যায়। তিনি কথা বলছিলেন না, তবে তাঁর জ্ঞান ছিল। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গাড়ির ছাদটি কিছুটা দেবে আছে।
প্রথমে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই ভেবেছিলেন, এসি মেরামতকারীদের কেউ ওপর থেকে পড়ে গেছেন। কিন্তু তাঁদের একজন জানান, পড়ে যাওয়া লোকটি তাঁদের কেউ নন।
এ বিষয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, গোলাম হোসেনকে হেফাজতে (রিমান্ডে) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। এ সময় তিনি পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়েন। ভাগ্য ভালো যে তিনি প্রথমে বিদ্যুতের তারে ও পরে একটি গাড়ির ওপর পড়েন। বিদ্যুতের তারে পড়ে তাঁর একটি পা পুড়ে গেছে। এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে হেফাজত থেকে পালানোর অভিযোগে মামলা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা জানান, কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি বিভাগের কর্মকর্তারা ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ডেমরার স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে শেখ গোলাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার দুর্লভপুর গ্রামে। নব্য জেএমবির সিলেট এলাকার আঞ্চলিক কমান্ডার আল আমিনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোলাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছিলেন বলে ১৬ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।