বগুড়ায় ডিবির অভিযানে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্য গ্রেফতার
বগুড়ায় জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বগুড়া জেলার মোকামতলা-জয়পুরহাট সড়কে শিবগঞ্জ থানার আমতলী ব্রিজের পার্শে অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিগ্রহণ কালে আগ্নেয়াস্ত্র, ডাকাতি করার সরঞ্জামসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পরিচালিত এই অভিযানে ডাকাত দলের সাথে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধও সংগঠিত হয়েছে। এতে বগুড়া, নওঁগা ও দিনাজপুর এলাকায় হত্যা, ডাকাতি সহ মোট ১৪ টি মামলার আসামী এজাহারের ১ নং আসামী কাহালু থানার পশ্চিম ভুগোইল এলাকার মৃত আবির উদ্দিন এর ছেলে রমজান (৪৫) এবং এজাহারের ২ নং আসামী শিবগঞ্জের আমজাদ হোসেনের ছেলে মাদক, ডাকাতি ও হত্যা সহ মোট ৮ টি মামলার আসামী আব্দুর রাজ্জাক (৩৮) গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যারা বর্তমানে বগুড়া শজিমেকে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের ৩ সদস্য আহত হন যারা প্রত্যেকেই পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহত সদস্যরা হলেন যথাক্রমে গোয়েন্দা শাখার এএসআই রুহুল, কনস্টেবল সেলিম মিয়া ও রুহুল আমিন। অভিযানে গ্রেফতারকৃত আরও ৪ ডাকাত সদস্যরা হলো এজাহারের ৩ নং আসামী মৃত আবির উদ্দিনের ছোট ছেলে ও ১ নং আসামী রমজানের ভাই হত্যা ও ডাকাতিসহ মোট ৬ টি মামলার আসামী মো: করিম (৩৭), ৪ নং আসামী কাহালুর ভুগোইল এলাকার সামছু মিয়ার ছেলে চুরি, ডাকাতিসহ মোট ৪ টি মামলার আসামী মুক্তার হোসেন (২২), ৫ নং আসামী নামুজার শাজাহান আলীর ছেলে ২ টি মামলার আসামী ইউছুফ আলী (৩২) এবং ৬ নং আসামী গাইবান্ধা পলাশবাড়ি থানার মোকছেদুর রহমানের ছেলে রায়হান কবির (২৫)।
অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সদ্য যোগদানকৃত বগুড়া জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি আছলাম আলী পিপিএম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সন্দেহজনক সংঘবদ্ধ মানুষ শিবগঞ্জ আমতলী ব্রিজের পার্শে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ করছে এমন সংবাদে জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার) এর দিকনির্দেশনায় ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছা মাত্রই ডাকাতদলের সদস্যরা পুলিশ সদস্যদের উপর এলোপাথারি গুলি চালায়। পরে পুলিশ পাল্টা গুলি চালিয়ে ২ চিহ্নিত ডাকাত সদস্যকে গুলিবিদ্ধ করে ঘটনাস্থল থেকেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। সেই সাথে ঘটনাস্থল থেকেই তাদের সাথে থাকা একটি ওয়ান শুটারগান, ২ রাউন্ড রাবার বুলেট, ২ টি রামদা/হাসুয়া, ২ টি গ্রিল কাটার যন্ত্র, ১ টি কাঠের বাটযুক্ত হাতুড়ি সহ ডাকাতির করার নানা সরঞ্জামাদী উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশের ঐ টিম।
ডিবির ওসি আছলাম আলী আরও জানান, ইতিমধ্যেই আসামীদের বিরুদ্ধে শিবগঞ্জ থানায় অবৈধভাবে অস্ত্র গুলি নিজ হেফাজতে রাখার দায়ে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনে এবং ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ, সরকারি কাজে বাধাদান, পোষাকধারী পুলিশের উপর হামলা ও গুলি বর্ষণ করার দায়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে বিকেলে আসামীদের কোর্টে হাজির করে পুলিশের পক্ষে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আসমা মাহমুদ দুটি মামলায় আসামীদের মোট ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এই চক্রের আরও সদস্যদের সম্পর্কে বিস্তর তথ্য পাওয়া যাবে বলেও বলেন জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতের ঐ অভিযান প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার) বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামীরা বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলায় দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি, চুরি সহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিল। প্রতিটি বড় ধর্মীয় উৎসবের আগে এই ডাকাত চক্রগুলো সক্রিয় হয়ে উঠে যা প্রতিহত করতে জেলা পুলিশের প্রতিটি ইউনিট তৎপর আছে। এছাড়াও জেলা পুলিশের পক্ষে আন্ত:জেলা এই ডাকাতদলগুলোর অন্যান্য সদস্যদেরও খুব দ্রুত গ্রেফতারে অভিযান চলমান থাকবে। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিধানে জেলা পুলিশ জিরো টলারেন্স থাকবে বলেও সকলকে নির্বিঘেœ ঈদ উদযাপনের বার্তা দেন জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার)।