পবিত্র ঈদে-মিলাদুন্নবী ﷺ: মানবতার মুক্তির আলোয় উদ্ভাসিত এক পুণ্যদিন

আজ শুক্রবার দিবাগত রাত ও শনিবার, ১২ রবিউল আউয়াল—ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে এক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ দিনেই দু-জাহানের নবী হযরত মুহাম্মাদ ﷺ এ দুনিয়ায় আগমন করেন এবং একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। তাঁর জন্ম ও ওফাতের দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে পবিত্র ঈদে-মিলাদুন্নবী ﷺ হিসেবে সুপরিচিত।
প্রায় ১৪০০ বছর আগে, আরব উপদ্বীপের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত, হযরত মুহাম্মাদ ﷺ। সে সময় গোটা আরব জাহান অজ্ঞতার অন্ধকারে আচ্ছন্ন ছিল। সমাজে ছিল হানাহানি, বর্বরতা, নারী অবমাননা এবং মূর্তিপূজার বিস্তার। এই যুগকে বলা হতো ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’—অজ্ঞতার যুগ। এই গাঢ় অন্ধকার দূর করে মানবজাতিকে সত্য, ন্যায় ও আলো দেখাতে আল্লাহ তাআলা প্রেরণ করেন তাঁর প্রিয় রাসূল হযরত মুহাম্মাদ ﷺ-কে।
শৈশব থেকেই হযরত মুহাম্মাদ ﷺ ছিলেন চিন্তাশীল, দৃঢ় নৈতিকতায় বলীয়ান ও সত্যনিষ্ঠ। তিনি প্রায়ই হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। ২৫ বছর বয়সে তিনি সম্মানিতা নারী হযরত খাদিজা (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ৪০ বছর বয়সে হেরা গুহায় ওহির মাধ্যমে নবুয়তের সূচনা ঘটে। তখন থেকে শুরু হয় মানবতার মুক্তির এক বৈপ্লবিক অধ্যায়।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে:- “আপনাকে তো আমি প্রেরণ করেছি বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ।” (সূরা: আম্বিয়া, আয়াত: ১০৭)
একটি হাদীসে বলা হয়েছে:- “হে মুহাম্মাদ, যদি আপনাকে সৃষ্টি না করতাম, তবে আমি সৃষ্টিজগৎই সৃষ্টি করতাম না।”
পবিত্র ঈদে-মিলাদুন্নবী ﷺ কেবল উৎসবের দিন নয়, বরং এটি আত্মশুদ্ধি, মানবকল্যাণ এবং রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর আদর্শে জীবন গড়ার শপথ গ্রহণের এক মহামূল্যবান সুযোগ।