বগুড়া–সিরাজগঞ্জ রেলপথে ৮ নতুন স্টেশন, আসছে আধুনিক ডিজিটাল সিগন্যালিং ব্যবস্থা
বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত নতুন ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ৮ ধারা নোটিশ প্রদান শুরু হয়েছে, আর অবশিষ্ট নোটিশসমূহের স্বাক্ষর চলতি সপ্তাহেই সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নোটিশ হাতে পেলেই ভূমি মালিকরা ক্ষতিপূরণ উত্তোলনের আবেদন করতে পারবেন। কারও আপত্তি থাকলে তা আইনানুগভাবে দাখিলের সুযোগও থাকবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি ২৪.৫০ শতাংশ, আর আর্থিক অগ্রগতি ৩৪.৮৯ শতাংশ। পাশাপাশি প্রকল্পের বিকল্প অর্থায়নের জন্য দাতা সংস্থাসমূহের সাথে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
৮টি নতুন স্টেশন নির্মাণ
নতুন রেলপথে নিম্নোক্ত ৮টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে—
সিরাজগঞ্জ জংশন
কৃষ্ণদিয়া স্টেশন
রাজগঞ্জ স্টেশন
চান্দাইকোনা স্টেশন
ছোনকা হল্ট স্টেশন
শেরপুর স্টেশন
আরিয়া বাজার
রানিরহাট জংশন
এছাড়া প্রকল্প এলাকায় ১০৬টি লেভেল ক্রসিং গেট এবং ১১টি স্টেশনে কম্পিউটার বেইজড আধুনিক ডিজিটাল সিগন্যালিং ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। সিরাজগঞ্জ জংশন থেকে বগুড়া স্টেশন পর্যন্ত নতুন রেলপথের মোট দূরত্ব হবে ৭২.২৮ কিলোমিটার।
রেল যোগাযোগে আসবে যুগান্তকারী পরিবর্তন
বাংলাদেশ রেলওয়ে বাস্তবায়নাধীন এ বৃহৎ প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে বগুড়া–সিরাজগঞ্জ রেল যোগাযোগে আসবে ঐতিহাসিক পরিবর্তন। নতুন ডুয়েল গেজ রেলপথ চালু হলে দু’জেলার মধ্যে যাতায়াত দূরত্ব ১১২ কিলোমিটার কমে যাবে, আর যাত্রা সময় কমবে প্রায় ৩ ঘণ্টা। এতে উত্তরের পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের গতিশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
সরকারের কঠোর নির্দেশনা
ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ ব্যবহারে নির্ধারিত বিধি-বিধান কঠোরভাবে অনুসরণ করার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
ভূমি অধিগ্রহণ অগ্রগতি
বগুড়া এলএ শাখার সার্ভেয়ার মো. ফিরোজ আহমেদ বলেন,
“৮ ধারা নোটিশ প্রদান শুরু হয়েছে। কিছু নোটিশের স্বাক্ষর বাকি আছে, যা চলতি সপ্তাহেই শেষ হবে। এরপর বাকিগুলো বিতরণ করা হবে। নোটিশ পেলে ভূমি মালিকরা ক্ষতিপূরণের আবেদন করবেন; কারও আপত্তি থাকলে তা আইন অনুযায়ী জমা দিতে পারবেন।”
এর আগে প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ১,৯২০.১০ কোটি টাকা সরকারি বরাদ্দ অবমুক্ত করে রেলপথ মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের রেল অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হবে।
গত ৭ এপ্রিল থেকে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন, ২০১৭–এর ৭ ধারা মোতাবেক নোটিশ প্রদান শুরু হয়। চলতি মাসে ৮ ধারা নোটিশ প্রদানের মধ্য দিয়ে ক্ষতিপূরণ বিতরণ প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে, যা বর্তমানে চলমান।
