বাহরাইনের সামনে বাংলাদেশ
যে কোনো টুর্নামেন্টের আগে দলের আত্মবিশ্বাসটা জরুরি। বাংলাদেশের বেলায় তা ব্যতিক্রম। ফুটবলে খেলোয়াড়দের যে মনোবল দেখা যায় তাতে মনে হয় ম্যাচের আগেই হেরে বসে আছে। সেই দৃশ্যটা কিছুটা হলেও পাল্টে গেছে। বাহরাইনে আজ শুরু হচ্ছে এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ বাছাইপর্ব। উদ্বোধনী দিনেই বাংলাদেশ লড়বে স্বাগতিক বাহরাইনের বিপক্ষে। গ্রুপে অন্য দুই প্রতিপক্ষ হচ্ছে ফিলিস্তিন ও শ্রীলঙ্কা। শক্তির বিচারে বাহরাইন ও ফিলিস্তিনকে এগিয়ে রাখা হয়। যে কোনো একটি দলের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শুধুমাত্র শ্রীলঙ্কাকে হারানোর সামর্থ্য রাখে বাংলাদেশ।
শক্তি ও পারফরম্যান্সের বিচারে তাই বলে। পুরুষরা কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া মানেই খালি হাতে ফিরে আসা। সত্যি বলতে কি ফুটবলে দীর্ঘদিন ধরেই হাহাকার চলছে। উন্নয়নের কোনো লক্ষণ নেই। ২০১০ সালে এস এ গেমসে সোনা জয়ের পর জাতীয় বা যুবদলের কোনো সাফল্য নেই। মাঝে অবশ্য বয়সভিত্তিক সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
এত ব্যর্থতা ও হতাশা। তবু ফুটবলে কিছুটা আশার আলো দেখা দিয়েছে। হারাটাই যেন বাংলাদেশের সঙ্গী হয়ে পড়েছিল। সেখান থেকে বের হওয়ার আভাস মিলেছে। গত কয়েকদিনে দেশের বাইরে বাংলাদেশ তিনটি প্রীতিম্যাচে অংশ নিয়েছে। হার নয়, দুই জয় আরেকটিতে ড্র করেছে লাল-সবুজের দল। কম্বোডিয়ার মাটিতে কম্বোডিয়াকে ১-০ ও ফুটবলে এশিয়া সেরা কাতারে শীর্ষস্থানীয় ক্লাব আল শাহানিয়াকে হারানো। অপর ম্যাচে শক্তিশালী আল আরবির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে।
টানা তিন ম্যাচে অপরাজিত থেকেই যুবারা এএফসি মিশনে নামছে। আল আরবির বিপক্ষে পিছিয়ে থেকেও ড্র করেছে। জিতলে অনেকদিন পর হ্যাটট্রিক জয়ের গৌরব পেত বাংলাদেশ। যাক অপরাজেয় থেকে বাহরাইনের বিপক্ষে নামছে এটাই বা কম কীসের। একটু বদলে যাওয়া বাংলাদেশ কোনো টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হচ্ছে।
নামে অনূর্ধ্ব-২৩ হলেও মূলত এটাই বাংলাদেশের জাতীয় দল। কোচ জেমি ডের কাছে পছন্দ এই তরুণরাই। জেমি দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ কোনো ট্রফি জেতেনি ঠিকই। কিন্তু অনেক কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা জয় পেতে শুরু করেছে। ৯০ মিনিটের লড়াইয়ে ৪৫ মিনিটও খেলার দম নেই বলে যে দুর্নামটা ছিল তা কাটতে শুরু করেছে। আগে দম হারিয়ে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হারে মাঠ ছাড়তো বাংলাদেশ। এখন উল্টো শেষ মুহূর্তের গোলে জয় পাচ্ছে। গতিময় ফুটবল খেলছে বাংলাদেশ।
এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ টুর্নামেন্টে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে শ্রীলঙ্কায় শুধু বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে। ফিলিস্তিন ১০০ ও বাহরাইন ১১১তম স্থানে আছে। কোচ জেমি ডে বলেন, র্যাঙ্কিং কোনো ফ্যাক্টর নয়। তাহলে ক্রোয়েশিয়া বিশ্বকাপ রানার্স হতো না। জিততে হলে ভালো খেলার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের প্রস্তুতি ভালো। ছেলেদের অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। আমি তাদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট। বাহরাইন, ফিলিস্তিন এতটা শক্তিশালী দল নয় যে তাদের হারানো যাবে না। ভালো খেললে অবশ্যই জয় সম্ভব