প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল, ২০১৯ ১৭:৫১

২০ মিনিটেই ৫ গোল! সিটিকে টপকে সেমিতে টটেনহাম

অনলাইন ডেস্ক
২০ মিনিটেই ৫ গোল! সিটিকে টপকে সেমিতে টটেনহাম

চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের উঠার লড়াইয়ে প্রথম ২০ মিনিটেই ৫ গোল। এর চেয়ে উত্তেজনাকর ম্যাচ হয় না! এর পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকল নাটক আর রোমাঞ্চ। শ্বাসরুদ্ধকর এক লড়াইয়ের সাক্ষ্মী হলো ইতিহাদ স্টেডিয়াম। 

তবে ম্যানচেস্টার সিটি শেষ পর্যন্ত জয় পেল তাতেও লাভ হলো না। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য ছুঁতে না পারায় চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের টিকিট কাটা হলো না সিটিজেনদের। বরং হারের হতাশা ভুলে মূল্যবান অ্যাওয়ে গোলের ভেলায় চেপে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে উঠল টটেনহ্যাম হটস্পার। 

দ্বিতীয় লেগ ৪-৩ গোলে জিতেও কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হলো গার্দিওলার দলকে। এই নিয়ে টানা তিনবার ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে সেমির দরজাই খুলতে পারলেন না বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচ।

 

চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটের ম্যাচের প্রথম লেগে ১-০ গোলে জয় পেয়েছিল টটেনহাম। ফিরতি লেগে যেন পালা করে একে অন্যকে গোল বন্যায় ভাসানোর খেলা খেললো দুই দল। তাতে দুই লেগ মিলে ৪-৪ গোলে ড্র করেও অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে সেমিফাইনালে পা রাখলো স্পাররা।

এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে পা রাখলো টটেনহাম। এর আগে ১৯৬১-৬২ মৌসুমে এই সৌভাগ্য হয়েছিল তাদের। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ আয়াক্স। কোয়ার্টারে জুভেন্টাসকে হারিয়ে সেরা চারের টিকিট হাতে পেয়েছে ডাচ দলটি।

ম্যানসিটি-টটেনহ্যাম দুই পর্বের লড়াইয়ে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন মূলত সন হিউং-মিন। প্রথম পর্বে জয়সূচক গোলটি করেছিলেন তিনি। ফিরতি পর্বে প্রতিপক্ষের মাঠে করলেন মহামূল্যবান দু'টি গোল। রাহিম স্টার্লিংয়ের জোড়া গোলে শেষ চারের স্বপ্ন জেগেছিল সিটির। তবে শেষ পর্যন্ত সেটি বাস্তবে রূপধারণ করেনি।

খেলার শুরুর চতুর্থ মিনিটেই সিটিকে এগিয়ে দেন রহিম স্টার্লিং। কেভিন দে ব্রুইনার পাস থেকে বল পেয়ে কাইরেন ত্রিপিয়ারকে বোকা বানিয়ে স্পার গোলরক্ষক হুগো লরিসকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন এই ইংলিশ উইঙ্গার।

গোল শোধ করতে মাত্র ৩ মিনিট সময় নেন মাউরিসিও পচেত্তিনোর শিষ্যরা। গোল পোস্টের মাত্র ৮ গজ থেকে নেওয়া সন হিউং-মিনের শট ঠেকাতে পারেননি সিটি’র ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এদারসন। প্রথম লেগের একমাত্র গোলটিও এসেছিল এই দক্ষিণ কোরিয়ান স্ট্রাইকারের পা থেকেই।

গোল শোধের মাত্র ৩ মিনিট পর ফের সন ঝলক। ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ১৭ গজ থেকে বুলেট গতির এক শটে এদারসনকে পরাস্ত করেন সন। কিন্তু স্পারদের এগিয়ে থাকার আনন্দ স্থায়ী হয় মাত্র ১ মিনিট। মাত্র ১১ মিনিটের মধ্যে ৪ গোল! এবার সিটির হয়ে গোল করে সমতা ফেরান স্ট্রাইকার বার্নান্দো সিলভা। তখনও দুই লেগ মিলে ৩-২ গোলে এগিয়ে স্পাররা।

২১তম মিনিটে ফের এগিয়ে যায় সিটি। দে ব্রুইনার ব্যাক পোস্টে পাঠানো বল অনায়াসে জালে জড়িয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পান সেখানে অপেক্ষমান অবস্থায় থাকা স্টার্লিং। বিরতিতে যাওয়ার আগে ৩-২ গোলে এগিয়ে থাকার স্বস্তি সঙ্গী হয় ইংলিশ লিগের অন্যতম শিরোপার দাবিদার সিটি।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর প্রায় মিনিট পনেরো পরেই স্কোর লাইন ৪-২ বানিয়ে দেন সিটির সার্জিও আগুয়েরো। এবারও অ্যাসিস্টে দে ব্রুইনা। প্রায় একাই বল টেনে নিয়ে আগুয়েরোর পায়ে পৌঁছে দেন দে ব্রুইনা, যদিও ওই কোণ থেকে গোল করাটা দুরূহ, কিন্তু কঠিন কাজটাই সহজে করে ফেললেন আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার।

খেলার স্কোর ৪-২ দেখে যারা ভেবেই বসেছিলেন খেলার ফলাফল নিশ্চিত, তাদের জন্য তখনও বিস্ময় অপেক্ষা করছে। খেলার ৭৩তম মিনিটে সিটির ত্রিপিয়ারের বাড়িয়ে দেওয়া বলে ডি-বক্সের জটলায় থাকা ফার্নান্দো লোরেন্তের গায়ে লেগে জালে প্রবেশ করে। যদিও সিটি আপিল করে ওটা হ্যান্ডবল ছিল। রেফারি ভিএআর’র সহায়তা নিয়ে দেখেন বলটা লোরেন্তের হাতে লাগলেও তা ইচ্ছাকৃত ছিল না। গোলের বাঁশি বাজতেই আনন্দে মেতে ওঠে স্পার সমর্থকরা। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয় ওই গোলটিই।

উপরে