প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি চান সরকারি পলিটেকনিকের প্রায় ৯ শ শিক্ষক | Daily Chandni Bazar প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি চান সরকারি পলিটেকনিকের প্রায় ৯ শ শিক্ষক | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০১৯ ১৯:৫৪
প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি চান সরকারি পলিটেকনিকের প্রায় ৯ শ শিক্ষক
অনলাইন ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি চান সরকারি পলিটেকনিকের প্রায় ৯ শ শিক্ষক

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি চেয়ে চাকরি সরকারি করণের দাবি জানিয়েছেন চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তায় থাকা সরকারি পলিটেকনিকের প্রায় ৯ শ শিক্ষক। “কারিগরি শিক্ষার অগ্রযাত্রায় ‘স্টেপ’ প্রকল্পে নিয়োজিত শিক্ষকদের ভূমিকা” শীর্ষক আলোচনা সভায় এই দাবি করেন বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন (বিপিটিএফ)।

সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, মনোটেকনিক, গ্রাফিকস্, আর্টস, বাংলাদেশ সার্ভে ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলোজিতে শিক্ষক সংকট প্রকট। আর সে কারণেই কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণে স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (স্টেপ)-এর আওতায় থাকা শিক্ষকদের চাকরি রাজস্বখাতে আত্মীকরণের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।

আইডিইবির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি একেএমএ হামিদ বলেন, আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনায় সপ্তম পঞ্চম বার্ষিকী পরিকল্পনার প্রতিটি বারবার বলা হয়েছে দক্ষ কর্মশক্তির অভাব, দক্ষ কর্মীর অভাব। অথচ আপনারা আছেন মাত্র ৮৭৬ জন শিক্ষক। লাখ লাখ দক্ষ কর্মীর অভাব, সেখানে আপনারা মাত্র ৮৭৬ দক্ষ কর্মী যাদের কর্মক্ষেত্র থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। আসলে তাদেরকে প্রয়োজন আমাদের। এ সময় তিনি আরো বলেন, কারিগরি শিক্ষকদের এক প্লাটফর্মে আসতে হবে। এখানে কোনো বিভেদ হবে না।

আইডিইবির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান বলেন, ২০১২ সালে আইডিবি যখন আন্দোলন করছিল শিক্ষক স্বল্পতা নিয়ে, সে সময় সরকার স্টেপ প্রকল্পের আওতায় ১০১৫ জনকে নিয়োগ করে। সে সময় এই শিক্ষকদের নিয়োগ না দিলে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখা সম্ভব ছিলো না। রাজস্ব খাত থেকে বর্তমানে ৬৫০ জনের মত কারিগরি শিক্ষক রয়েছেন। আর সে কারণেই এখন এই ৮৭৬ জন শিক্ষক না থাকলে আবারো ধসে পড়বে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা। আর সে কারণেই আমরা সরকারকে ২২০০টি পদ তৈরির আহ্বান জানাই। সেখানে অগ্রধিকার পাবে স্টেপের শিক্ষকেরা। ৬-৭ বছরে তৈরি হওয়া এই শিক্ষকদের কোনভাবেই সরকার বাদ দিতে পারে না। এই শিক্ষকেরা আমাদের সম্পদ।

এ সময় উপস্থিত স্টেপ প্রকল্পের আওতায় থাকা শিক্ষকরা জানান, দুই বছরের প্রকল্পের মেয়াদ দুই ধাপে বৃদ্ধি করে ৭ বছরে উন্নীত করা হয়। কিন্তু আগামী ৩ মাস পর হঠাৎ করেই প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়া হবে। আমাদের ৮৭৬ শিক্ষক ও তাদের পরিবারের ভবিষ্যতের কী হবে, আমাদের কর্মসংস্থানের কী হবে? আমাদের অধিকাংশদের বয়স এখন ৩০ বছরের বেশি। আমরা কী করব? তাই দাবি জানাচ্ছি আমাদেরকে রাজস্বখাতে আত্মীকরণ করা হউক।

বাপশিস কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি হাফিজ আহম্মেদ সিদ্দিকি বলেন, আপনাদের প্রতি বাপশিস-এর অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। আপনাদেরও রাজস্বখাতে আত্মীকরণ হবে এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী।

বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী খবির হোসেন বলেন, যে মার্চে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছে, যে মাস উদযাপনের, সেই মাসে আহাজারি করছে প্রায় ৯ শ শিক্ষক। জুন মাস থেকে যদি স্টেপের শিক্ষকরা না থাকেন তাহলে ৪৯ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটিতে ১৭/১৮ জন শিক্ষক থাকবে না। এভাবে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী যদি ১০-১২ লাখ রোহিঙ্গাকে খাওয়াতে পারেন, তাহলে এই ৮৭৬ শিক্ষকের জন্যও ব্যবস্থা করবেন তিনি।

বিপিটিএফ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন যেখানে বড় অবদান রাখছে কারিগরি শিক্ষা। আর সেই কারিগরি শিক্ষার অগ্রযাত্রায় 'স্টেপ' প্রকল্পের শিক্ষকদের রয়েছে বড় অবদান। এ কারণেই ৮৭৬ শিক্ষক ও তাদের পরিবারের রুটি-রুজির বিষয় নিয়ে সকলের ভাবা উচিত। তারা না থাকলে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা বড় ক্ষতির মুখে পড়বে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা করা ভিশন ২০৪১, এসডিজি ও ডেলটা প্লান বাস্তবায়নে কারিগরি শিক্ষা অন্যতম এক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ, মানোন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দেশ- বিদেশে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রাণালয়াধীন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (স্টেপ) গ্রহণ করে। সরকার কারিগরি শিক্ষার হার ২০২০ সালে ২০%, ২০৩০ সালে ৩০% এবং ২০৪১ সালে ৫০% এ উন্নীত করার জন্য বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।