নিউজিল্যান্ড থেকে ভয়াবহ স্মৃতি নিয়ে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন কোর্টনি ওয়ালশ। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপাতত বিরতি থাকায় তিনি বেশ জমিয়েই ছুটি কাটাচ্ছেন। বিভিন্ন দেশ ঘুরে এখন তিনি ভারতে। যেখানে চলছে বিশ্বের সবচেয়ে জাঁকজমক ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের আসর আইপিএল। কদিন আগেই এই আসরে 'মানকড় আউট' করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। পাঞ্জাব অধিনায়কের এই আচরণকে কীভাবে দেখছেন বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ?
১৯৮৭ বিশ্বকাপে ইমরান খানের পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ওভারের শেষ বলে অশ্বিনের মতোই মানকড় আউট করার সুযোগ পেয়েছিলেন ওয়ালশ। মানকড় আউট হচ্ছে, বোলার বল করতে গিয়ে যদি দেখে নন-স্ট্রাইকার প্রান্তের ব্যাটসম্যান ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছে, তা হলে তাকে রান আউট করে দিতে পারে। এমন আউট আইনসিদ্ধ হলেও খেলোয়াড়ি মনোভাবের বিরোধী বলে মত রয়েছে। আউটের ভঙ্গির নাম 'মানকড়'। কারণ ১৯৪৭ সালে অস্ট্রেলিয়াতে ভারতের প্রয়াত অল-রাউন্ডার ভিনু মানকড় প্রথমবার এ রকম আউট করেছিলেন।
শেষ বলটা করার ঠিক আগের মুহূর্তে ওয়ালশ দেখেন, নন-স্ট্রাইকে সেলিম জাফর ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন। তিনি বলটা না করে দাঁড়িয়ে পড়েন। সেটাই ছিল পাকিস্তানের শেষ উইকেট এবং জাফরকে মানকড় আউট করে দিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতে যায়। ওয়ালশ তা করেননি। জাফরকে সতর্ক করে ফিরে যান রান-আপে। তার শেষ বলে প্রয়োজনীয় রান তুলে নিয়ে জিতে যায় পাকিস্তান। ওই হারের ফলে ১৯৮৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি। কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটে নন্দিত হয়েছেন ওয়ালশ।
৩২ বছর পর ক্রিকেট অনেক পাল্টে গেছে। পাল্টায়নি ওয়ালশের দর্শন। অশ্বিনের এই কাণ্ড নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি নিজের ইতিহাস টেনে এনে বলেন, 'জাফরকে আউট না করার আক্ষেপ আমার মাঝে কখনই ছিল না। সবসময় বিশ্বাস করেছি, অসৎ ভাবে বা অখেলোয়াড়ি মনোভাব দেখিয়ে খেলার মাঠে জয় করা যায় না। এখনও তাই মনে করি। লাহোরে সেদিন শেষ বলে সেলিম জাফরকে রান আউট করিনি বলে অনুশোচনা হয়নি। এখনও মনে করি, ঠিক কাজ করেছিলাম। অবশ্যই জয়ের জন্য খেলব; তবে খেলোয়াড়ি মনোভাব বিসর্জন দিয়ে নয়। এই সময়ের ক্রিকেটারদের মাঝে এমন মানসিকতাই দেখতে চাই।'