বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত যে ব্রিটিশ স্কুলবালিকা বাড়ি থেকে পালিয়ে ইরাক ও সিরিয়া ভিত্তিক আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগে চেয়ে বলেছেন, জঙ্গিরা তার মগজধোলাই করেছিলো।
গত মার্চে তার তৃতীয় শিশুর মৃত্যুর পর প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় ১৯ বছর বয়সী শামীমা বেগম জানান, ‘তিনি তার কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতপ্ত’ এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ চান।
শামীমা জানান, তিনি ২০১৫ সালে লণ্ডন ছেড়ে সিরিয়ায় পাড়ি জমান। কারণ তখন তাকে তার ধর্ম সম্পর্কে জঙ্গিরা যা বলেছে তার সবই তিনি বিশ্বাস করেছেন। কেননা তিনি আসলে তখন নিজ ধর্ম সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানতেন না। ধর্ম সম্পর্কে কম জানা-শোনার কারণেই তিনি জঙ্গিদের কথায় বিশ্বাস করে তাদের দলে যোগ দেন।
সিরিয়ায় গিয়ে তিনি নেদারল্যান্ডস থেকে আসা আইএস যোদ্ধা ইয়াগো রিয়েডজিককে বিয়ে করেন। ২০১৮ সালের মধ্যে তাদের দুটি সন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু তাদের প্রথম দুই সন্তানই মারা যায়। এরপর চলতি বছরের শুরুতে বাঘুজে আইএস এর সর্বশেষ ঘাঁটি ধ্বংস হওয়ার পর তিনি উদ্বাস্তু হয়ে পড়েন।
ওদিকে, ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাজিদ জাভেদ তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়েছেন।
দ্য টাইমস এর সঙ্গে নতুন সাক্ষাতকারে শামীমা বলেন, ‘বাঘুজের পতনের পর আমি আমার আগের কর্মকাণ্ড নিয়ে সত্যিই খুব অনুতপ্ত। আমি যুক্তরাজ্যে ফিরে যেতে চাই এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য একটি সুযোগ চাই। জঙ্গিরা আমার মগজধোলাই করেছিলো।’
অথচ গত ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ার আল হাওল উদ্বাস্তু ক্যাম্পে থাকার সময় দেওয়া সাক্ষাতকারে শামীমা জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কোনো অনুতাপ প্রকাশ করেননি। এমনকি সেসময় তিনি ২০১৭ সালে ম্যানচেস্টারের সন্ত্রাসী হামলাকেও ন্যায্য বলে দাবি করেন। ওই হামলায় নারী ও শিশু সহ ২৩ জন নিহত হন।
কিন্তু এখন তিনি বলছেন সেসময় তিনি জঙ্গিদের ভয়ে এমন কথা বলেছিলেন। শামীমা বলছেন তিনি যদি সেসময় আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কথা বলতেন তাহলে জঙ্গিদের হামলার শিকার হতেন। আর সে ভয়েই তিনি সেসময় আইএস এর বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেননি।
এদিকে, যুক্তরাজ্যে শামীমার পরিবার তার নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা করে দেখার জন্য আবেদন জানাতে আইনী প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট