২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ ও চীন নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক বাড়াতে কয়েকটি সমঝোতায় পৌঁছে। চীনের ভূ-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক করিডোর 'ওবিওআর' (ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড) এর আওতায় ওই সমঝোতায় পৌঁছে দেশ দুটি।
'ওবিওআর' এর আরেক নাম বিআরআই (বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ)। চীনের অর্থায়নে এশিয়ার দেশগুলোকে 'সিল্ক রোড' নামের মহাসড়কে সংযোগ স্থাপন করাই এই এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
এদিকে, বাংলাদেশের আরেকটি প্রকল্পে বিশেষভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। সেটি হলো পায়রা গভীর-সমুদ্র বন্দর। এই বন্দরটি বর্ধিতকরণ ও উন্নয়নের অংশীদার হতে চায় চীন।
এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান ৬০০ মিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো-চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি (সিএইচইসি) এবং চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসসিইসি)। ৬০০ মিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তির আওতায় পায়রা গভীর-সমুদ্র বন্দরের মৌলিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন-সংস্কার করা ছাড়াও গৃহনির্মান, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি বিষয়গুলোও রয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআই-কে ওই প্রকল্পে নিযুক্ত দাপ্তরিক সূত্র জানিয়েছে, চীনের এই বিনিয়োগের কৌশলগত অভিপ্রায় হলো-বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরটিতে সার্বভৌম কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। শ্রীলংকায় হামবানতোতা বন্দর তৈরীতে একই ধরনের কৌশল অবলম্বন করেছিল চীন।
শ্রীলংকার মাহিন্দা রাজাপাকসে সরকারের আমলে 'ওবিওআর' প্রকল্পের অধীনে কয়েক কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছিল চীনের সরকার। এই প্রকল্পে হামবানতোতা বন্দর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেয়েছিল বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে 'সফট লোন'-র নামে চীন যে সহায়তা দিয়েছিল তা শ্রীলংকার ওপর 'গোদের ওপর বিষফোঁড়া' হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে ওই বন্দরের ওপর সার্বভৌম নিয়ন্ত্রণ হারায় শ্রীলংকা। এক পর্যায়ে ২০১৭ সালে ৯৯ বছরের জন্য বন্দরটি চীনকে লিজ দিয়ে দেয় শ্রীলংকার সরকার।
একইভাবে, এর আগে পাকিস্তানের গাওদার বন্দরে সার্বভৌম কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে চীন।
অন্যদিকে, মায়ানমারের লাতপাতুং কপার খনিতে বিনিয়োগ করে চীন। সেখানে ব্যাপকভাবে চীনের কর্মীদের নিয়োগ করা হয়। এক পর্যায়ে সেখানে ব্যাপক সহিংস ঘটনা ঘটে। এবং ওই অঞ্চলে রাজনৈতিক সহিংসতা দেখা দেয়।
সূত্র : এএনআই