ব্রুনেইয়ের সমকামী আইন: 'হাতের পাথরটা যেন বেশি বড় না হয়...' | Daily Chandni Bazar ব্রুনেইয়ের সমকামী আইন: 'হাতের পাথরটা যেন বেশি বড় না হয়...' | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৭ এপ্রিল, ২০১৯ ১৭:৪৪
ব্রুনেইয়ের সমকামী আইন: 'হাতের পাথরটা যেন বেশি বড় না হয়...'
অনলাইন ডেস্ক

ব্রুনেইয়ের সমকামী আইন: 'হাতের পাথরটা যেন বেশি বড় না হয়...'

বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক এবং সমকামিতা নিয়ে ব্রুনেইয়ের সুলতানের ঘোষণা নিয়ে এখন আলোচনার তুঙ্গে রয়েছে দেশটি। গত বুধবার দেশটির একচ্ছত্র অধিপতি সুলতান হাসানাল বোলখিয়া এ ধরনের সম্পর্কের বিষয়ে কঠোর বিধান কার্যকরের ঘোষণা দেন। এ নিয়ে গোটা বিশ্বে সমালোচনা শুরু হয়। দেশটির সমকামীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কিছু অপরাধের শাস্তিতে পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা বলা হয়। 

এ ঘোষণার পর পরই দেশ ছেড়েছেন ব্রুনেইয়ের দুই সমকামী। দেশটিতে সমকামী হিসেবে বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতার বয়ান করেছেন। 

বিবিসি'র এক ভিডিওবার্তায় দেশ ছেড়ে আসা এক সমকামী শাহিরাম বলছেন, ছোটবেলা আমাদের শিক্ষা দেয়া হতো হাতের পাথরটি যেন খুব বড় না হয়। কারণ এটা ছুড়ে মারলে মানুষটি খুব দ্রুত মারা যাবে। ভাবতে গেলে এটা রোমহর্ষক বিষয়।

জোয়েলা নামের আরেকজন বলছেন, আমি জীবন নিয়ে বাঁচতে চাই। যদি শরণার্থী হিসেবে আমার শুনানী নেতিবাচক হয়, তবে আমাকে ব্রুনেই ফিরে যেতে হবে। আমি রূপান্তরিত হতে পারবো না। সম্ভবত আমার জন্যে মৃত্যুই হবে দ্রুততম সমাধান। 

ব্রুনেই সমকামীদের বিষয়ে কঠোর আইন করার পর তাদের জীবনটা দেশে ফেরার পর কেমন হবে তা নিয়ে কথা বলে বিবিসি। 

জোয়েলা আরো বলেন, আমি একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। সাবেক মুসলমান। আমি বাইরে থেকে নারীদের মতো নিজেকে তুলে ধরতে পারবো না। কারণ নারীত্বকে পুরোপুরি উপড়ে ফেলা হয়েছে। সরকারের হাত থেকে বাঁচতে আমাকে এভাবেই চলতে হবে। যাতে করে শেষ পর্যন্ত আমি পালিয়ে বাঁচতে পারি। আমাকে আমার মতোই বন্ধুদের খুঁজে বের করতে হবে। যারা ঠিক ইসলাম চর্চা করেন না। দেশে ফেরার পর আমি হয়তো ধরা পড়বো। সেখানে সিক্রেট পুলিশ আছে। সেখানে পরিবার আমার বিষয়টি হয়তো মেনে নিতেন। কারণ, আমি তাদের একমাত্র সন্তান। কিন্তু এখনো ভীত। ওখানে গেরে তারা আমাকে মেরে ফেলবে। আমি সেখানে এক বছরের উপার্জন জমিয়ে সোজা ভ্যানকুভার চলে এসেছি।  

শাহরিন জানান, সমকামী হিসেবে আমি নিজেকে মেনে নিতে পারছিলাম না। পরে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার আমি নিজেকে বুঝতে পারি। দেশে ফিরে আমি সমকামিতায় জড়িয়ে পড়ি। কিন্তু মনে ভয় কাজ করতো। ব্রুনেইয়ে আমরা খুব কাছাকাছি একটা সমাজের মতো বাস করতাম। হয়তো একে অপরকে খুব ভালো করে চিনতামও না। কিন্তু এখন যে আইনটি আসছে, দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর কেউ যদি কারো মধ্যে এমন কিছু দেখে তো আমি বুঝতেই পারছি কী ঘটবে। আমি ভেবেছিলাম সেখানে কেউ আমাকে বুঝতে পারবে না। আমি দেশ ছেড়েছি কারণ সেখানে আমার রাজদ্রোহের অপরাধে বিচার চলছিল। ব্রুনেই সরকারের বিরুদ্ধে  আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। 

এভাবে ব্রুনেই থেকে অনেক সমকামী এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলো দেশ ছাড়ছেন। এদের অনেকেই দেশে ফিরতে চান না প্রাণের ভয়ে। কে বা পাথর ছুড়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে চায়।