‘বাংলাদেশে চেপে বসেছে ভয়ের সংস্কৃতি’ | Daily Chandni Bazar ‘বাংলাদেশে চেপে বসেছে ভয়ের সংস্কৃতি’ | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৯ এপ্রিল, ২০১৯ ১৮:০৫
মার্কিন মিডিয়কে শহিদুল আলম
‘বাংলাদেশে চেপে বসেছে ভয়ের সংস্কৃতি’
অনলাইন ডেস্ক

‘বাংলাদেশে চেপে বসেছে ভয়ের সংস্কৃতি’

আলোকচিত্রী, সাংবাদিক, সমাজকর্মী এবং দৃক ফটো গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম। তিনি ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগাজিনের টাইম বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব ২০১৮ হিসেবে নির্বাচিত হন। সম্প্রতি, তিনি নিউইয়র্কে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ফটোগ্রাফি সেন্টারে সম্মানিত হয়েছেন। 

নিউইয়র্কে শহিদুল আলমের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যাম আর্টনেট নিউজ। এই সাক্ষাৎকারে তার বিরুদ্ধে চলা মামলা সম্পর্কে বলেন, ইন্টারনেটে ভীতি ও সন্ত্রাস ছড়াতে উস্কানিমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগে করা মামলাটি এখনো চলছে। অভিযোগ পত্র এখনো তৈরি হয়নি। যখন জামিনে খালাস দেওয়া হয় তখন প্রসিকিউশনের আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। তারপর আমরা মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট জারি করেছিলাম। এখন আদালতের নির্দেশে তিন মাসব্যাপী তদন্ত চলবে। গ্রেপ্তারের আট মাস হওয়ার পরেও এখনো অভিযোগ গঠন করতে পারেনি তারা। 

শহিদুল আলমের মামলাটি ছিল বাংলাদেশের চলমান অব্স্থার বড় একটি প্রতিচ্ছবি। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মূলত, আমি মনে করি এটি একটি বার্তা দেওয়া হয়েছিল। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। দেশের মানুষের প্রতি এটি একটি স্পষ্ট সংকেত। বিষয়টি আসলে এরকম যে, আমরা প্রধান বিচারপতির সাথে এরকম করতে পারি, কল্পনা করুন আমরা আপনার সাথে কী করতে পারি। এটি একটি ভয়ের পরিবেশ। 

যাইহোক, আমি মনে করি, বাংলাদেশ একটি পুলিশি রাষ্ট্র। এই অবস্থায় আমার গ্রেপ্তার হলো মানুষকে চুপ করিয়ে রাখার একটি বিবৃতি। এটা আমার ক্ষেত্রে কাজ করে না। আমি যা করি তা অব্যাহত রাখি। আমি সত্য কথা বলি। এটি আমার অধিকার। তাই তারা এখন অন্য কোনো কৌশল নিয়ে আসতে পারে, কিন্তু এটা তাদের সমস্যা।

তার বিষয়টিতে আন্তর্জাতিক সংহতি ছিল যা ছিল বিষ্ময়কর বলেও জানান তিনি। 

বাংলাদেশের বর্তামান অবস্থার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, স্পষ্টতই বাংলাদেশে ভয়ের সংস্কৃতি চলছে। সেখানে অবরুদ্ধ অবস্থা চলছে। কারাগারে ছিল এমন কয়েকজনের সাথে আমি সাক্ষাৎ করেছি। তাদের অপরাধ ছিল আমার ফেসবুক পোস্টে লাইক দেওয়া এবং শেয়ার করা। 

আমার উদ্বেগগুলো মধ্যে একটি হল যে, বর্তামানে শিল্পীরা ও ছাত্ররা অন্যায়ের বিরুদ্ধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নীরব ভূমিকা পালন করছে। যারা প্রতিবাদ করবে আশা করছেন তারা কথা বলছেন না। 

ক্রসফায়ার, গুম ও নিপীড়নের মতো ঘটনাই ভয় পাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এইসব পরিস্থিতিতে যাদের আশা করেন প্রতিবাদ করবে তারা কথা বলছেন না। আমি মনে করি, গণমাধ্যম বিক্রি হয়ে গেছে। নির্বাচনে ও উপ-নির্বাচনে সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তাদের প্রতিরোধ করার পক্ষে খুব কম সংখ্যাই রয়েছে। 

তিনি বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি আমার আগ্রহ রয়েছে। আর সেই বিষয়টিতে আমি ফটোগ্রাফি ব্যবহার করি কারণ এটি খুব শক্তিশালী হাতিয়ার। আর আমি এটির ব্যবহার চালিয়ে যাব সামাজিক ন্যায়বিচার স্থাপন করতে। 

সূত্র-আর্টনেট নিউজ