প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় নুসরাতের ময়নাতদন্তের মুহূর্ত | Daily Chandni Bazar প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় নুসরাতের ময়নাতদন্তের মুহূর্ত | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১১ এপ্রিল, ২০১৯ ১৯:২৯
ফেসবুকে ভাইরাল
প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় নুসরাতের ময়নাতদন্তের মুহূর্ত
অনলাইন ডেস্ক

প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় নুসরাতের ময়নাতদন্তের মুহূর্ত

ডাক্তারদের প্রাণপণ চেষ্ট, কোটি মানুষের প্রার্থনা ব্যর্থ করে দিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। পাষণ্ড মাদ্রাসা শিক্ষকের সমর্থকগোষ্ঠীর দেওয়া আগুনে ঝলসে মরতে হয়েছে তাকে। নুসরাতের ময়নাতদন্তের সময় তার বোন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফাতিমা তাসহিন, সহ-সাধারন সম্পাদক, শামসুন নাহার হল সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন হৃদয়বিদারক সেই মুহুর্তের বর্ননা।

'সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ঢাকা মেডিকেলে। সকাল সাড়ে ৮টায় হিমাগার থেকে বডিটা বের করে এমারজেন্সি মর্গে নিয়ে গেছে। মৃত মানুষটা মেয়ে হলে তার ময়নাতদন্ত করার সময় মা অথবা বোনের থাকতে হয়। রাফির মা অসুস্থ আর আপন কোনো বোন না থাকায় আমাকে বোন হিসেবে রেখেছিলো ময়নাতদন্তের সময়।'

'মেয়েটার পেটে কোনো মাংস নেই, মুখ দিয়ে লালা ঝরছে, যৌনাঙ্গ পুড়ে বীভৎস অবস্থা, পায়ের নখের লাল টুকটুকে মেহেদী রঙটুকু এখনো চোখে পড়ে।' 

'রাফির মা ভীষণ অসুস্থ গতকাল রাত থেকে , মেয়ে মারা যাওয়ার পর শেষবার একটু দেখতেও পারেননি। আঙ্কেল শোকে পাথর হয়ে গেছে আর মা মা বলে চিৎকার। ভাই দুইটা একটু পর পর অজ্ঞান হয়ে পড়ছে। মর্গের সামনে দুই-তিনশো সাংবাদিক দাঁড়িয়ে আছে, নেই শুধু রাফি।'

'কান্না থামিয়ে রাখতে পারেননি প্রধানমন্ত্রীর পিএস , মেডিকেল বোর্ডের চেয়ারম্যানও। অ্যাম্বুলেন্সে করেই এসেছিল ঢাকায়, আবার ফিরেও যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সে।'

'বোন, পৃথিবীর চেয়ে ভালো জায়গায় থাকবি নিশ্চয়ই। আমরা যেই নরকে আছি সেখানে এখনও তোর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে, তোর পক্ষে কথা না বলার জন্য আদেশ দিচ্ছে, তোর পাশের এলাকায় গতকাল রাতে তোর মত করে আরেকটা ছেলের গায়ে আগুন দিয়েছে।'

'আহ! কী সুন্দর! তুইই ভালো আছিস নরক থেকে চলে গিয়ে। শেষবার তোকে লাইফ সাপোর্টে দেখে আসলাম , গতকাল ব্ল্যাড ম্যানেজ করে দিলাম নয়ব্যাগ। আর যেতে হবে না তোকে দেখতে, রক্ত দিতে....। ক্ষমা করিস না আমাদেরকে!'

 

**এই লেখাটির দায়-দায়িত্ব একমাত্র লেখকের।