
দু’বছর আগেও জানতেন না আর কোনও দিন গলফ খেলতে পারবেন কিনা। পিঠ আর পায়ের চোটে এতটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন, ভেবেছিলেন পেশাদার গলফ জীবন হয়তো শেষ। কিন্তু কে জানত, তার হাত ধরেই খেলাধুলোর দুনিয়ায় সর্বকালের অন্যতম সেরা প্রত্যাবর্তন দেখবে বিশ্ব!
১১ বছর পরে গলফ কোর্সে ফের ফিরল তার দাপট। রবিবার অগাস্টা মার্স্টার্সে খেলোয়াড় জীবনের পঞ্চম মাস্টার্স এবং ১৫তম মেজর জিতলেন বিশ্বখ্যাত গলফার টাইগার উডস।
এদিন শুরুতে ফ্রানসেস্কো মলিনারির চেয়ে দুই শট পিছনে ছিলেন উডস। কিন্তু চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৩ আন্ডারে ৭০ স্কোর করে মোট ২৭৫ পয়েন্ট এবং ওয়ান শটে ডাস্টিন জনসন, জ্যান্ডার শ্যফেল ও ব্রুকস কোয়েপকাকে হেলায় পিছনে ফেলে দেন তিনি। শেষ শটটা নিয়েই মুষ্টিবদ্ধ হাতটা শূন্যে ছুড়ে দিয়ে গর্জন করে ওঠেন উডস।
এর পরেই গলফ ক্লাব ও নিজের মুঠি শূন্যে উঁচিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন গলফ সম্রাট। তারপর মা ও দুই সন্তানকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। ততক্ষণে 'টাইগার' 'টাইগার' চিৎকারে উল্লাসে মেতেছেন দর্শকরা।
২০০৯ সালে ব্যক্তিগত জীবনে একের পরে এক ঝামেলায় জড়িয়ে যাওয়ার পর থেকে বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বরের খেলোয়াড় জীবনের লেখচিত্র ক্রমশ তলানিতে এসে ঠেকেছিল। সঙ্গে জুড়েছিল চোট-আঘাত, ব্যাথা নিরাময়কারী ওষুধের নেশা। যার প্রভাবে গাড়ি চালাতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার পর্যন্ত করেছিল।
সে সব অতীত পেরিয়ে ফের গলফ আকাশে টাইগারের উদয়। ১৯৮৬ সালে ৪৬ বছর বয়সী জ্যাক নিকোলাসের মেজর জয়ের পরে ৪৩ বছর বয়েসে দ্বিতীয় বয়স্কতম মাস্টার্স জয়ী হিসেবে নাম লেখালেন টাইগার উডস।
এক সময় উডসকেই ধরা হতো জ্যাক নিকোলাসের ১৮ মেজরের রেকর্ড ভাঙার এক নম্বর দাবিদার। খেলোয়াড় জীবনের প্রথম ১১ বছরে ১৪ মেজর জিতে ফেলেছেন তখন টাইগার। কিন্তু ২০০৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওপেন জয়ের পর থেকে সেই ছবিটা ক্রমশ ঝাঁপসা হতে শুরু করেছিল। ১১ বছর পরে আবার সেই সম্ভাবনা উজ্জ্বল হল। স্বয়ং নিকোলাসও তাই বলেছেন, টাইগারকে অনেক অভিনন্দন। আমি ওর জন্য, গলফ খেলাটার জন্য খুব খুশি। সত্যিই অসাধারণ লাগল।