আগামী মাসের শেষের দিকে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য আজ ১৫ সদস্যের বাংলাদেশ দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দলে নতুন মুখ আবু জায়েদ রাহি। জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট-টি-টোয়েন্টি খেললেও এখনও ওয়ানডে খেলতে পারেননি তিনি। ঘোষিত বাংলাদেশ দলের মধ্যে রাহী ছাড়া আরও ৬ ক্রিকেটারের প্রথম বিশ্বকাপ হবে ইংল্যান্ড আসর। সেই ৬ জন হলেন- লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ মিথুন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
২০১৫ সালের জুনে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় ডান-হাতি ব্যাটসম্যান লিটনের। এরপর ২৭টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ১টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরিতে ৫০৮ রান করেছেন ২৪ বছর বয়সী এই হার্ডহিটার। উইকেটকিপার তথা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত লিটন ১৮টি ডিসমিসালও করেছেন। এছাড়া ১৫টি টেস্ট ও ১৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।
২০১৪ সালের ওয়ানডে অভিষেক হয় ডান-হাতি ব্যাটসম্যান মিথুনের। ভারতের বিপক্ষে দেশের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ২টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন তিনি। একটি ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে ২৬ রান করেন মিথুন। এরপর দল থেকে বাদ পড়েন। দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকার পর ২০১৮ সালে আবারো জাতীয় দলে ফিরে নিয়মিত সদস্য বনে যান তিনি। দলের বিপদের সময় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন এ পর্যন্ত ১৫ ম্যাচে ৪টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৩৬০ রানের মালিক এই তারকা। জাতীয় দলের হয়ে ৫টি টেস্ট ও ১৩টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি।
২০১৬ সালের টেস্ট অভিষেকের পরের বছরই ওয়ানডে জার্সি গায়ে পড়েন অফ-স্পিনার মিরাজ। টেস্টে আগুন ঝড়ানো পারফরমেন্সে করতে পারলেও ওয়ানডেতে এখনও নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। ২৫ ম্যাচে ২৬ উইকেট রয়েছে তার। ব্যাট হাতে ১টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ২৯১ রান করেন মিরাজ। এছাড়া ১৯টি টেস্ট ও ১৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছেন এই ডান-হাতি।
টি-টোয়েন্টি দিয়ে ২০১৬ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় মোসাদ্দেকের। একই বছর ওয়ানডে ও পরের বছর টেস্ট অভিষেক হয় তার। অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত মাত্র ২৪টি ওয়ানডে খেলেছেন মোসাদ্দেক। কিন্তু পারফরমেন্সে মোটেও উজ্জ্বল ছিলেন না তিনি। করেছেন মাত্র ১টি হাফ-সেঞ্চুরি। রান করেছেন ৩৪১। সংযুক্ত আরব আমিরাতে সর্বশেষ এশিয়া কাপের পর দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। তবে চলমান প্রিমিয়ার লিগে ১২ ম্যাচে ১টি সেঞ্চুরি ও ৪টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৪২৮ রান করেছেন মোসাদ্দেক। তাই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ যাত্রা হয়ে যাচ্ছে তার।
২০১৫ সালের জুনে দেশের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ দিয়ে ওয়ানডে অভিষেক হয় মুস্তাফিজুর রহমানের। নিজের অভিষেক ওয়ানডে সিরিজেই রেকর্ড গড়েন তিনি। তিন ম্যাচে ১৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। অভিষেকে পারফরমেন্সের উজ্জ্বলতা ধরে রেখেছিলেন ফিজ। মাঝে ইনজুরি বাগড়া বাধায় তার পথ চলায়। কিন্তু তারপরও কাটার মাস্টারকে দমিয়ে রাখা যায়নি। ঘাড়ের-পায়ের ইনজুরিকে জয় করে মাঠে ফিরেছেন মুস্তাফিজ। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ম্যাচে ৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ৪৩ ম্যাচে ৭৭ উইকেট ঝুলিতে রয়েছে দেশের শীর্ষ এই পেসারের।
২০১৭ সালে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে অভিষেক হয় সাইফউদ্দিনের। পেস অল-রাউন্ডার হিসেবে দলে সুযোগ ঘটে তার। কিন্তু সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে ব্যাট হাতে তিন ম্যাচে ৯৫ রান ও বল হাতে মাত্র ১ উইকেট নেন। তবে চলমান ঘরোয়া লিগে বেশ উজ্জ্বল সাইফউদ্দিন। ৯ ম্যাচে ১৭ উইকেট রয়েছে তার। এখন পর্যন্ত ১০টি ওয়ানডেতে ১৭৫ রান ও ৭ উইকেট নিয়েছেন। ওয়ানডের পাশাপাশি ৯টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন এই তরুণ তুর্কী।
গত বছর টি-টোয়েন্টি দিয়ে প্রথম বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়ান আবু জায়েদ রাহি। এরপর গায়ে ওঠে সাদা পোশাকও। এখনও বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে খেলতে পারেননি তিনি। ৫ টেস্টে ১১ ও ৩ টি-টোয়েন্টিতে ৪ উইকেট শিকার করেছেন রাহি। চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোটিং ক্লাবের হয়ে এখন অবধি ৯ ম্যাচে ৪০০ রানে ১২ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। তাছাড়া রাহির রয়েছে গতি ঠিক রেখে বল সুইং করনোর সহজাত ক্ষমতা। ইংল্যান্ডের কন্ডিশন বিবেচনায় তাই রাহি নির্বাচকদের মন জয় করতে পেরেছেন।