বগুড়া জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্তর পর | Daily Chandni Bazar বগুড়া জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্তর পর | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৬ মে, ২০১৯ ০২:১৬
বগুড়া জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্তর পর
পদ পেতে চলছে লবিং, গ্রুপিং
ষ্টাফ রিপোর্টার

বগুড়া জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্তর পর

খুব দ্রুত আহবায়ক কমিটি পাচ্ছে বগুড়া জেলা বিএনপি। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বগুড়া জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে শনিবার রাতে। জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে স্থান পেতে কেন্দ্রের নেতাদের সাথে যোগাযোগ করছে জেলা বিএনপির কিছু নেতাকর্মী। প্রায় ৮ বছর পর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় পদ বঞ্চিত কিছু বিএনপি নেতারা কেন্দ্রের নেতাদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন। জেলার নেতাকর্মীরা নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছে। চলছে এখন লবিং, গ্রুপিং।

বগুড়া জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন নিয়ে তোড়জোড় একরকম জোরেসরেই শুরু হয়েছে। কে থাকছে আর কে বাদ যাচ্ছেন তা নিয়ে জেলা কমিটির পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও নতুন কমিটির দিকে তাকিয়ে আছেন। তৃণমুল নেতাকর্মীরা চাইছেন নতুন কমিটি গঠনের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় দাবী দাওয়া নিয়ে জোরদার আন্দোলন যেন বগুড়ায় হয়। আন্দোলনের জন্য তৃণমূল নেতারা শক্তিশালী জেলা কমিটি চাইছে।

বগুড়া শহরের নবাববাড়ি সড়কে অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয়ের নেতাকর্মীরা বলছেন, নতুন কমিটি গঠন নিয়ে দলের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের নেতৃত্ব পেতে পদ প্রত্যাশীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। অনেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে ঘনঘন যোগযোগ শুরু করেছেন। দলীয় কোন কর্মসূচি দেয়ার আগে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ঘনঘন পরামর্শ গ্রহণ করছেন। কে হবেন জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক তা নিয়ে বিএনপি পাড়ায় চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। নেতাকর্মীদের কেউ রাখছেন বর্তমান কমিটির উপর আস্থা, আবার কেউ থাকছেন নতুন মুখের সন্ধানে। অনেক নেতাকর্মীই আবার জেলা কমিটিতে শুধু স্থান পেতেই লবিং গ্রুপিং করে যাচ্ছেন।

জানা যায়, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান হিসেবে বগুড়াকে বিএনপির দূর্গ বলা হয়। জেলার ৭টি আসনেই বিএনপি বেশিরভাগ সময় ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসতো। কিন্তু গত এক দশকে বগুড়ায় সেই পরিবেশের বেশ পরিবর্তন হয়েছে। ২০০৮ সালের পর থেকে বগুড়ায় বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া বিএনপি তেমন শক্তিশালী আর হয়ে উঠেনি। এইসময় থেকেই বগুড়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা একাধিক মামলা হামলার শিকার হয়েছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন চানও মামলার হাজিরা দিতে হয়েছে একাধিকবার। আর আওয়ামী লীগ ধীরে ধীরে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরী করেছে। এই শক্ত অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে সমর্থক, উন্নয়ন ও ভোটার বৃদ্ধি করেছে।

বগুড়া জেলা বিএনপির কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে তিন বছরের জন্য ভিপি সাইফুল ইসলামকে সভাপতি ও জয়নাল আবেদীন চাঁনকে সাধারণ সম্পাদক ও মীর শাহে আলমকে সাংগঠনিক করা হয়। এরপর ১৭২ সদস্য বিশিষ্ট জেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটি ৪ মে বিলুপ্ত করা হয় কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল সোমবার দুপুরে শহরের নবাববাড়িস্থ জেলা কার্যালয়ে জেলা বিএনপি আয়োজিত সাধারণ সভায় উপস্থিত সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে ভিপি সাইফুল ইসলাম কে আহবায়ক ও জয়নাল আবেদীন চাঁন কে যুগ্ম আহবায়ক প্রস্তাব করে একটি তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে। এ আহবায়ক কমিটি হবে ৪৫ সদস্য বিশিষ্ট। ঠিক একই দিনে আরো একটি প্রস্তাবিত আহবায়ক কমিটি করে কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়। সেই পাল্টা আহবায়ক কমিটির আহবায়ক করা হয় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এ্যাড: মাহবুবর রহমানকে এবং বিএনপি নেতা ফজলুল বারী তালুকদার বেলালকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করে ৪৭ সদস্যের নাম প্রস্তাব করা হয়। ২৯ এপ্রিল রাতে বগুড়া শহরের রিয়াজ কাজী লেনের বিএনপির সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদারের বাসভবনে এক পরামর্শ সভা থেকে আহবায়ক কমিটির জন্য নাম ঘোষণা করা হয়। এনিয়ে বিএনপির ভিতরের গ্রুপিং প্রকাশ্যে চলে আসে। এসবের মধ্যেই ৪ মে শনিবার রাতে জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এখন আহবায়ক কমিটি ঘোষণা হবে যে কোন সময়।

গত ৪ মে রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন, বগুড়া জেলা বিএনপির বর্তমান নির্বাহী কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় উক্ত কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। গঠনতন্ত্র মোতাবেক অতি শিঘ্র বগুড়া জেলা আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে। রাজশাহী বিভাগীয় সাংগাঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু জানান, আগামী কমিটিতে দলের ত্যাগী নেতাদের মুল্যায়ন করা হবে। যারা এতদিন নানা প্রকার মামলা হামলার শিকার হয়ে দলকে ধরে রেখেছে তারাই কমিটিতে স্থান পাবে। যত দ্রুত সম্ভব বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়া জেলা বিএনপির বিষয়ে অবগত আছেন। তার পরামর্শ নিয়েই সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।