ফুলবাড়ীতে পিতৃহারা দুই শিশুর উর্পাজনের পথ ঝুঁকিপূর্ণ গাছে উঠা | Daily Chandni Bazar ফুলবাড়ীতে পিতৃহারা দুই শিশুর উর্পাজনের পথ ঝুঁকিপূর্ণ গাছে উঠা | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৪ মে, ২০১৯ ১৭:০৬
ফুলবাড়ীতে পিতৃহারা দুই শিশুর উর্পাজনের পথ ঝুঁকিপূর্ণ গাছে উঠা
ইউনুছ আলী আনন্দ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) ঃ

ফুলবাড়ীতে পিতৃহারা দুই শিশুর উর্পাজনের পথ ঝুঁকিপূর্ণ গাছে উঠা

পিতৃহারা দুই শিশু হলো একজন আব্দুল কুদ্দুস (বাদল) অপরজন  রাশিদুল ইসলাম। এরা দু’জনেই একে অপরের পরম বন্ধু। এদের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের চাঁদেরহাট বিদ্যাবাগীশ গ্রামে। শিশু আব্দুল কুদ্দুস (বাদল) বিদ্যাবাগীশ গ্রামের মৃত-আকরাম আলীর ছেলে। সে স্থানীয় একতা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। সে বর্তমান মা বানেছা বেগমসহ বসবাস করছেন। অপর শিশু রাশিদুল ইসলাম একই গ্রামের মৃত- আফাছ আলীর ছেলে। সে স্থানীয় আবেদীয়া মাদ্রাসার ৩য় শ্রেণির ছাত্র। সে তার মাসহ ৬ বোনকে নিয়ে বসবাস করছেন। এই দুই শিশুর জন্ম হয় অভাবি সংসারে। শিশু থাকাকালীণ অবস্থায় তারা তাদের পিতাকে হারান। রোগাক্রান্ত হয়ে অকালে মারা যায় তাদের পিতা। এতে অভাব আরও গ্রাস করে দুই শিশুর জীবনে। যে বয়সে তারা হাসি-খুশিতে পথচলবে সেই বয়সেই নেমে আসে তাদের জীবনে বেঁচে থাকার চিন্তা। এই চিন্তা থেকেই শিশু আব্দুল কুদ্দুস (বাদল) ও রাশিদুল ইসলাম একটি দুঃসাহসিক কাজ শুরু করেন। তারা সুপারি, কাঁঠাল, নারিকেলসহ বিভিন্ন গাছের মালিকদের কাছে যান। তাদের অনুমতিতে গাছে উঠে ফল-ফলাদি পেরে দেয়ার কাজ শুরু করেন। এতে গাছ মালিকরা যা পারিশ্রমিক দেন তা তারা অভাবি সংসারে সহযোগিতা ও নিজের প্রয়োজন মিটান।

স্থানীয় এক সুপারি বাগানের মালিক বৃদ্ধা দোলেনা বিবি জানান, তার সুপারি বাগানের সুপারি পাড়ার জন্য এই দুই শিশু নিজ ইচ্ছা পোষণ করলে তিনি তাদের কাছ থেকে সুপারি পেরে নেন। বিনিময়ে দুটি গাছের জন্য ১০ টি সুপারি দেন। শিশু দু’জনকে দেখে মায়া হওয়ায় তিনি তাদের জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। দোলেনা বিবি আরও জানান, অভাবের কারনে এই দুই শিশু আজ দুঃসাহসিক এই কাজ করছেন। যদিও এটি নিরাপদ কাজ নয়। যে কোনদিন শিশুরা গাছ থেকে পড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে। তিনি শিশু দু’টির সাহায্যার্থে ও তাদের এই দুঃসাহসিক কাছ থেকে সরে আনতে দেশ-বিদেশের স্ব-হৃদয়বান মানুষের সু-নজর কামনা করেন। শিশু আব্দুল কুদ্দুস (বাদল)  জানায়, আমরা ছোট মানুষ। আমাদের ওজন কম হওয়ায় আমরা বড় বড় সুপারি, কাঁঠাল, নারিকেলসহ বিভিন্ন গাছে উঠতে পারি। তারা ৮০ ফিটেরও বেশি উঁচু গাছে উঠতে পারেন। এজন্য অনেকে তাদের গাছের সুপারিসহ বিভিন্ন ফল পারতে আমাদের ডাকে। আমরা তাদের গাছ থেকে ফল-ফলাদি পেরে দিয়ে ২/৪ টাকা যা পাই তা গরিব সংসারের কাজে লাগাই। লেখা পড়ার জন্য কলম খাতা কিনি।