ঈদের বাকি আর ১ দিন। তাই তো একদম শেষ সময়ে পোষাকের সকল কেনাকাটার পর্ব শেষে তরুণী আর সকল গৃহিণীরা ব্যস্ত সাজসজ্জার সামগ্রী কিনতে। বগুড়াতেও এর ব্যতিক্রম নয়, সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত মার্কেট, শপিং মল আর কসমেটিকস্ এর দোকানগুলোতে তাইতো নারী ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। আর বিক্রেতারাও ব্যস্ত তাদের কাছে থাকা দেশী-বিদেশী নানা ডিজাইনের নানা মূল্যের মালা, কানের দুল, আংটি, মেকআপ এর সকল আইটেম সহ একজন নারীকে পরিপূর্ণ সাজাতে প্রয়োজনীয় সকল কিছু বিক্রি করতে। তবে এবারের ঈদ মার্কেটে তরুণীদের বেশী আগ্রহ দেখা গেছে মেটালের অলংকার আর লেয়ার ঝুমকার প্রতি।
বগুড়া নিউমার্কেট, জলেশ^রীতলার বিভিন্ন শোরুম, রানার প্লাজা, চুড়িপট্টি, আড়ং, টাচ এন্ড টেক সহ বিভিন্ন কসমেটিকস্ এবং গহনার দোকানগুলোতে পোষাক কেনার পরবর্তী তার সাথে ম্যাচিং করে গহনা আর বিভিন্ন সাজসজ্জার সামগ্রী কিনতে এবারের ভিড় গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেশী আর ব্যবসা ভাল হওয়াতে খুশি বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও। বগুড়ার বিভিন্ন মার্কেট পর্যবেক্ষণে লক্ষ্য করা যায় সোনার গহনার তুলনায় এ্যান্টিক এবং বাহারী ডিজাইনের গহনার প্রতি আগ্রহ বেশী নারী ক্রেতাদের। তাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে মেটাল এর মালা, কানের দুল, আংটি, লং মালা বা ফ্যাশানেবল মালা, ব্রেসলেট, লম্বা চেইন এর ঝুমকা, গলার চিক, বাহুবলী টানা, ডায়মন্ড কার্টের চুড়ি, দুল, ডায়মন্ড কার্টের স্টোনের মালা, কুন্দন রিং, বালি প্রভৃতি। তবে ঈদ মার্কেটে এবার সবচেয়ে বেশী চলেছে মেয়েদের পোষাক সারারা এবং তার সাথে ম্যাচিং করে একটি গহনার নাম দেয়া হয়েছে সারারা তাই পোষাকের সাথে ম্যাচিং করেও চলছে এই গহনায়।
তবে গতানুগতিক গহনার পাশাপাশি এবারের মার্কেটেও রয়েছে উচ্চবিত্ত আর সৌখিন মানুষের জন্য কিছু নতুন ও ভিন্ন নামের গহনাসেট যার মধ্যে হোয়াইট স্টোন নেকলেস, মেটাল ঝুমকা, বাহারি রঙের স্টোন চুড়ি ও দুলের সেট, কুন্দন গলার সেট, ইন্ডিয়ান জয়পুরী নেকলেস, টিকলী, চুড়ি, পার্ল রঙের নানা ডিজাইনের সেট প্রভৃতি অন্যতম। আবার দামের দিক থেকে কিছুটা কম হওয়ায় নি¤œবিত্ত আর মধ্যবিত্ত সকলে ভিড় জমিয়েছে বগুড়া নিউ মার্কেট আর চুড়িপট্টিতেই। বগুড়ার বিভিন্ন শোরুমে এবারের ঈদ কালেকশনের গহনা ও সাজসজ্জার সামগ্রীর মূল্য এবারের ঈদে একদম হাতের নাগালেই আছে বলে মনে করছেন ক্রেতারা।
এবার ঈদ মার্কেটে সাজসজ্জার সামগ্রীর মূল্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাব্বী কসমেটিকস্ এর সত্ত্বাধিকারী ফজলে রাব্বী জানান, এবার মার্কেটে মালার সেট রয়েছে সর্বনি¤œ ১৮০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত, ডায়মন্ড কার্টের চুড়ি রয়েছে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত, কানের দুল অক্সিমেটালের ২’শ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত, বাহুবলী-২ কানের টানা ২’শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত, ডায়মন্ড কার্ট ও মেটালের শিশু ও তরুণীদের বাহারী গহনা ১’শ টাকা থেকে ৫’শ টাকা, সুতা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন মালা ১’শ টাকা থেকে ৩’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও নিউমার্কেটের এই ব্যবসায়ী জানান গত বারের তুলনায় এবার ব্যবসা ভাল। গ্রাম তথা শহর সাজসজ্জার সামগ্রী কিনতে সকল বয়সের নারী ক্রেতাদের ভীড় এবার চোখে পড়ার মতো। আবার ভিন্ন ডিজাইনের সোনা এবং ইমিটেশন এর মিশ্রণ দিয়ে নানা বাহারের গহণা বিক্রি হচ্ছে বগুড়ার রানার প্লাজাতে অবস্থিত আড়ং এ। এখানেও ভিড় চোখে পড়ার মতো ৪ হাজার থেকে উপরে মূল্যের নানা গহনা কিনতে ব্যস্ত উচ্চ মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত নারী ক্রেতারা। গহনার পাশাপাশি ঈদে নিজেকে সকলের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে মেকআপ এর শোরুমগুলোতেও ভালোই ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।
বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় এবং ইউরোপের বিভিন্ন নামী-দামী ব্যান্ডের পণ্য যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যান্ডের মেকআপ পণ্য বিক্রয় হচ্ছে প্যারিসের গারনিস, ফ্লোরমার, ন্যাকেড হ্যারেস বিউটি, লরিয়াল, মিস রোজ, ভেলমেট ম্যাট, রেভলন, নিক্স কোম্পানীর বললেন রানার প্লাজার মেকআপের শোরুম এনজেলস স্টুডিও’র ম্যানেজার জিন্নাত আরা। তিনি আরও জানান প্রতি বছরের ন্যায় শেষ সময়ে মেকআপ ও সাজসজ্জার সামগ্রী বিক্রি বরাবরই ভাল হয়। ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন গহনা ও সাজ-সজ্জার সামগ্রী ছাড়াও তরুণীরা বছরে একবার হলেও ভাল ব্যান্ডের মেকআপ আইটেম কিনতেই পছন্দ করে। যার মধ্যে স্কিন কেয়ার, ফাউন্ডেশন, কনসিলার, আই শ্যাডো, হাই-লাইটার, দেশী বিদেশী ফেস পাউডার, নানা রঙের নেইল পলিশ, লিপস্টিক এবং ভারতীয়সহ বিদেশী পারফিমের বেশী চাহিদা রয়েছে।
আবার সাথে রয়েছে ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন ব্যান্ডের মেকআপ আইটেমের উপর ২০% থেকে ৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ড অফার যা আরও সোনায় সোহাগা হয়েছে নারী ক্রেতাদের জন্য। সবমিলিয়ে বৃষ্টির মধ্যে ঈদে সাজসজ্জার মার্কেট খুব ভালভাবেই সম্পন্ন করতে পেরে খুশি বিভিন্ন মার্কেটে দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ ক্রেতারাও। তবে রানার প্লাজা অভিজাত মার্কেট হওয়ায় সেখানে সামর্থ্যবান ক্রেতাদেরই বেশী দেখা যায়।