বগুড়ার ধুনটে যৌতুকের টাকা না পেয়ে রুবেল আকন্দ (৫৫) নামে এক দিনমজুরকে হত্যার পর লাশ খালের পানিতে নিক্ষেপ করার অভিযোগ উঠেছে জামাতা নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে। নিহত রুবেল আকন্দ ধুনট উপজেলার নিমগাছী ইউনিয়নের শিয়ালি গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে। এছাড়া জামাতা নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে বড় বোনকে হত্যার পর ছোট বোনকে বিয়ে করারও অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে রুমা আকতার বাদী হয়ে তার স্বামী নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে ধুনট থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার নিমগাছি গ্রামের জাহেদুর রহমানের ছেলে নাহিদ হাসানের সঙ্গে প্রায় ১০ বছর আগে শিয়ালি গ্রামের দিনমজুর রুবেল আকন্দের মেয়ে রুমি আকতারের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে এক কণ্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু হঠাৎ রুমি আকতারের মৃত্যু হয়। একারনে তার সন্তানকে দেখাশোনা করতে গত দেড় বছর আগে রুমির ছোট বোন রুমা আকতারকে বিয়ে করে নাহিদ। বিয়ের সময় নাহিদ হাসান কৌশলে তার শ্বশুরের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক নেয়। কিন্ত ২ বছর যাবত নাহিদ হাসান তার শ্বশুরের কাছে আরো ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। কিন্ত দিনমজুর শ্বশুরের পক্ষে জামাইয়ের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে শ্বশুর ও জামাইয়ের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
এ অবস্থায় বুধবার সকালের দিকে নাহিদ হাসান তার শ্বশুরের সাথে অসুস্থ্য শাশুড়িকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য বাড়ী থেকে বের হয়। পরে সে তার শ্বাশুড়িতে হাসপাতালে ভর্তি করে শ্বশুরকে নিয়ে ধুনটের উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু এরপর থেকেই জামাই ও শ্বশুরের কোন সন্ধান মেলেনি। এদিকে শুক্রবার শুক্রবার সকালের দিকে আতিকুল ইসলাম নামে এক যুবক খালের পানিতে অজ্ঞাত ভাসমান লাশের ছবি তুলে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। পরে ফেসবুকে ছবি দেখে নিহতের মেয়ে রুমা আকতার ও তার স্বজনরা রুবেলের লাশ সনাক্তের পর বিষয়টি ধুনট থানায় জানায়।
নিহতের মেয়ে রুমা আকতার জানান, নাহিদ প্রথমে তার বড় বোনকে বিয়ে করে। কিন্তু হঠাৎ তার বোন অসুস্থ হয়ে মারা যায় বলে সে বাড়ীতে খবর দেয়। পরে তার বোনের সন্তানকে লালন পালন করতে তাকে বিয়ে করে নাহিদ। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত যৌতুকের টাকার জন্য দাবি করে। টাকা দেওয়ায় সে অনেক বার তার বাবাকে হত্যার হুমকিও দিয়েছে। তাই তার বড় বোনকেও নাহিদ হত্যা করেছে দাবি করে রুমা।
ধুনট থানার অফিসার ইনাচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, রুবেলের মৃতদেহ ফেসবুকে দেখে তার স্বজনরা সনাক্ত করেছে। লাশ সলঙ্গা থানা এলাকায় ভেসে গেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে ঘটনাস্থল ধুনট এলাকায় না হওয়ায় এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা এলাকায় অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে।