যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও বাড়তে শুরু করেছে বগুড়ার শেরপুরে বাঙালি ও করতোয়া নদীর পানি। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অতিবর্ষণে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ দু’নদীর তীরবর্তী এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। এছাড়া নদী ভাঙনও অনেকটা প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে স্থানীয় উপজেলার বিনোদপুরসহ অন্তত বিশটি গ্রামের বাড়িঘর ও জমিজমা হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া চরম উৎকন্ঠার মধ্যে দিনরাত যাপন করছেন এসব গ্রামসহ নদীপাড়ের মানুষ।
এদিকে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া বাঁধটি গতকাল রোববার (২১জুলাই) বিকেলে পরিদর্শন করেছেন বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ হাবিবর রহমান ও জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মকবুল হোসেন। এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খাদিজা খাতুন, শেরপুর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির, সুঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ, আ.লীগ নেতা আবু তালেব আকন্দ, সুঘাট ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান জিন্নাহসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শনকালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন ও এমপি হাবিবর রহমান দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি মেরামত ও সংস্কারের নির্দেশ দেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের সাহেববাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একাংশ (সাড়ে চারশ মিটার) বাঙালি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়া যমুনা নদীর পানি অনেকটা কমতির দিকে থাকায় বাঙালি ও করতোয়া নদীতে যে হারে পানি বাড়ছে, তাতে যে কোন সময় ক্ষতিগ্রস্থ এই বাঁধটি ধ্বসে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নদীর তীরবর্তী এলাকাবাসী। তাছাড়া নদীর এ অংশের বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে উপজেলার সুঘাট, সীমাবাড়ী, বিশালপুর, ভবানীপুরের একাংশসহ তাড়াশ, রায়গঞ্জ উপজেলাসহ সিরাজগঞ্জের বিশাল এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে। বিনষ্ট হয়ে যাবে হাজার হাজার বিঘা জমির রকমারি ফসল।
সুঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ জানান, গেল কয়েকদিন ধরেই বাঙালি ও করতোয়া নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে করে সাহেববাড়ি ও মইশনটি বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে মেরামত ও সংস্কার করা প্রয়োজন। নইলে যে কোন সময় এই বাঁধটি ধ্বসে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে। বাসা-বাড়ি তলিয়ে যাবে। অসংখ্য মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন এই চেয়ারম্যান।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ বাঁধের একাংশ বাঙালি নদীগর্ভে ধ্বসে যাওয়ার সত্যতা স্বীকার কওে বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এই বাঁধটি এলজিইডি নির্মাণ করেছিল। তাদের দপ্তরের নয়। এরপরও ক্ষতিগ্রস্থ এই বাঁধটি দু-একদিনের মধ্যেই মেরামতের কাজ শুরু হবে। তাই শঙ্কার কোন কারণ নেই বলেও দাবি করেন তিনি