বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলায় দুই দরিদ্র কৃষকের সরকারি বন্দোবস্ত পাওয়া জমি দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার সকালে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন উপজেলার ছাতনী পূর্বপাড়া গ্রামের কৃষক সামিদুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সামিদুল ইসলাম বলেন, ১৯৯৫ সালে আদমদিঘী উপজেলার হালালিয়াহাট স্টেশন সংলগ্ন ৭৪ শতাংশ জমি তার বাবা মৃত আফজাল হোসেন, চাচা মৃত ইসমাইল হোসেন ও মৃত রিয়াজ উদ্দিন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ বন্দোবস্ত (লিজ) নেন। তারপর থেকে ওই জমির খাজনা পরিশোধ করে তাঁরা সেখানে চাষাবাদ ও মাছ চাষ করতেন। জমিটিতে বছরে ছয় মাস পানি জমে থাকায় সেখানে ছয় মাছ কৃষি চাষাবাদ ও ছয় মাস মাছ করা যায়। তিনি আরও বলেন, জমিটির মূল বন্দোবস্তকারীরা মারা যাওয়ার পর ওয়ারিশ সূত্রে সামিদুল ও কামরুজ্জামান সেই জমি দখলে রেখে চাষাবাদ করে আসছিলেন।
২০১৪ সালে একই গ্রামের আব্দুল মান্নান নামের এক ব্যক্তির কাছে তাঁর জমিটি ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে দুই বছরের জন্য বর্গা দেন। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত জমিটি ভোগদখল করার চুক্তি ছিল তাঁর সঙ্গে। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর জমির দখল ছেড়ে দিতে বললে ওই বর্গাদার জমিটির দখল ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান এবং ওই জমি তাঁর নিজের বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও থানায় লিখিত অভিযোগ করলে বিষয়টি তদন্ত করে সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক থানার সহযোগিতায় ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে জমিটি বর্গাদার মান্নানকে জমিটি তাঁদের কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশ দেন।
পরবর্তীতে তাঁরা ওই জমির দখল বুঝে নেন। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জমিতে পানি থাকায় ৫০ হাজার টাকার পোনা মাছ ছাড়েন সামিদুল ও কামরুজ্জামান। পোনা ছাড়ার কিছুদিন পর আব্দুল মান্নান সমস্ত মাছ নিধন করে জমিটি আবারও দখল করে নেয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান বলেন, জমিটির প্রকৃত মালিক তিনি। তিন বছর আগে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তার নামে জমিটি পত্তন দিয়েছে। পত্তন পাওয়ার পর থেকে ওই জমিটি বৈধভাবে তিনি ভোগ দখল করছেন।
আর তিনি ওই জমি কখনই তাঁদের কাছ থেকে বর্গা নেননি। আদমদিঘী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিবদমান ওই জমি নিয়ে একবার থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে জমির প্রকৃত মালিককে জমিটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আর কোন অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।