কালাইয়ে টুং টাং শব্দে মুখোরিত কামারপল্লী | Daily Chandni Bazar কালাইয়ে টুং টাং শব্দে মুখোরিত কামারপল্লী | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৮ আগস্ট, ২০১৯ ২০:৫৭
কালাইয়ে টুং টাং শব্দে মুখোরিত কামারপল্লী
কালাই(জয়পুরহাট)প্রতিনিধি:

কালাইয়ে টুং টাং শব্দে মুখোরিত কামারপল্লী

কালাইয়ে কোরবানীর ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে কামার পল্লীর কারিগরদের ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। কয়লার চুলোয় দগদগে আগুনের ফুলকি আর গরম লোহায় ওস্তাদ-সাগরেদের ছন্দময় পিটুনিতে টুংটাং শব্দে মুখোরিত হয়ে উঠেছে কামারশালাগুলো। সরাদিনের পর রাতেও তাদের বিশ্রাম নেই পর্যায়ক্রমে কারিগররা দিনরাত বিরামহীন পরিশ্রম করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কাজ। কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে তারা প্রতিদিন কোরবানীর পশু জবাইয়ে ব্যবহিত দা,বটি,চাকু,ছুরি,চাপাতি,কুড়াল ইত্যাদি সরঞ্জাম তৈরী করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন কামার পল্লী ঘুরে একই চিত্র চখে পরে ।

পুনট কর্মকার পাড়া কামার পল্লীর নারায়ন চন্দ্র কর্মকার(৫৫),নিবারন চন্দ্র কর্মকার(৪১),নিমাই চন্দ্র কর্মকার(৪৫), সন্তোষ চন্দ্র(৪৭),প্রশান্ত কর্মকার(৫২),নিখিল কর্মকার(৪৬),গোপীনাথ কর্মকার(৫৮) এবং কালাই কর্মকার পাড়ার কামার পল্লীর গোবিন্দ চন্দ্র কর্মকার,সুকুমার চন্দ্র কর্মকার,তারা চন্দ্র কর্মকার,তাপস চন্দ্র কর্মকার,গৌরাঙ্গ চন্দ্র কর্মকার সহ আরো অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে সারা বছরের তুলনায় কোরবানীর ঈদে কাজের চাপ বেশী থাকে বেচাবিক্রি ও লাভ ভাল হয়। এ ধরনের সরঞ্জাম তৈরীর কাচামাল অর্থাৎ লোহা ও কয়লার দাম গত বছরের চেয়ে বেশী হওয়ায় সরঞ্জাম তৈরীর ব্যয় বেড়ে গেছে তাই এবছর লাভ কমহবে। প্রতি কেজি চাপাতি ৬ থেকে ৮শ টাকা পর্যন্ত,ছোট চাকু ৮০ থেকে ১৩০টাকা পর্যন্ত, লোহার তৈরী চাকু ১শ থেকে২৫০ টাকা পর্যন্ত,জবাই কাজের ছুরি ৫ থেকে৬শ টাকা,পাগলু দা ১শ থেকে ১৫০টাকা,কুড়াল ১৫০-২শ টাকা পর্যন্ত ।

এ পেশাই জীবনের ঝুকি নিয়ে কাজ করতে হয়, তারপরও বাব-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য কোন পেশায় যেতে মন চায়না। তাদের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতেই আমরা এই পেশার সাথে জড়িত রয়েছি। ঈদ যত কাছে আসছে বেচাবিক্রি ততই ভাল হচ্ছে। খুরচা বিক্রির পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন হাটে পাইকারি ও বিক্রয় হচ্ছে। দা-বটি ,চাকু-ছুরি ক্রয় করতে আসা ডিংরাপাড়া গ্রামের তৈয়ব আলী(৫৫) ও তবিজ উদ্দিন(৪৮), চাকুলমুয়া গ্রমের মোশারফ হোসেন(৫৮), পুনট পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমান(৩২),কালাই কাজীপাড়ার রফিকুল ইসলাম তারা সকলেই জানান গতবারের তুলনায় এবছর জবাই করার হাতিয়ার এর দাম অনেক বেশী। আবার কেউ কেউ আসছেন পুরাতন হাতিয়ার মেরামত এবং নতুন ভাবে ধার দিতে। কামার পল্লীর কারিগরদের আকুতি উত্তোরাধীকার সূত্রে পাওয়া তাদের এ দেশীয় শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকার সহ সকলেরই সহযোগীতা করা উচিৎ।