শেরপুরে কোটি টাকার সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার অভিযোগ | Daily Chandni Bazar শেরপুরে কোটি টাকার সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার অভিযোগ | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৯ আগস্ট, ২০১৯ ২২:৪৫
শেরপুরে কোটি টাকার সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার অভিযোগ
শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ

শেরপুরে কোটি টাকার সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার অভিযোগ

বগুড়ার শেরপুরে ভূয়া দলিল সৃষ্টি করায় বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলমান অবস্থা উপেক্ষা করে কোটি টাকার সম্পত্তি দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুর পৌর শহরে স্যানালপাড়ায়। অভিযোগ পাওয়া গেছে কোটি টাকা মুল্যের ১৪ শতক জায়গা দির্ঘদিন ধরে দখলের চেষ্টা করে আসছিল একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এর ধারাবাহিকতায় ৯ আগস্ট শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ওই জায়গা জোর পূর্বক দখল করতে গেলে সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সংঘবদ্ধ চক্র পালিয়ে যায়। 

ভূক্তভোগী পরিবার ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বাগড়া বসতি এলাকার মৃত এলাহি বক্সের তিন পুত্র সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সালাম ও মো: সাত্তার। জায়গার মালিক সাত্তার বিগত বছরের ২৪ জুনে দুরারোগ্য ব্যাধিতে মৃত্যু বরন করেন। এদিকে আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী সন্তান না থাকায় ওয়ারিশসুত্রে ওই সমস্ত সম্পত্তির মালিক তার সহোদর দুই ভাই সাইফুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম প্রাপ্ত হয়।

অথচ মৃত সাত্তারের নামে শেরপুর শহরের শেরপুর মৌজার জেএলনং ১০৯, এম আরআর খতিয়ান ৬৩০, ডিপি খতিয়ান ৫৬৬, দাগ নং ২২৪০/৩৮০৫ এর মূল্যবান ১৪ শতাংশ সম্পত্তি বেদখল দেয়া এবং নিজেদেরকে স্বত্ব মালিকানা দাবী করে বাগড়া গ্রামের মৃত খোরশেদ আলমের মেয়ে রুবিয়া খাতুন, মালাইকারপাড়া গ্রামের কাশেম মাস্টারের ছেলে মেহেদী হাসান বাবলু, শহরের উত্তর সাহাপাড়ার মৃত মান্নান বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল নুর, শান্তিনগরের মৃত সিরাজের ছেলে কাবিল খন্দকার ওয়াই, টাউন কলোনীর এন্তাজ আলীর ছেলে সেলিম রেজাসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে একটি ভূয়া দলিল নং ৪১০৬ সৃষ্টি করে। এর প্রেক্ষিতে বগুড়ার বিজ্ঞ আদালতে বিগত ২০ জুন মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত শুনানী অন্তে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর ভুয়া দলিলটি বাতিল করে প্রকৃত মালিকানায় সম্পত্তি বলবৎ করে রায় দেন বলে ওয়ারিশান মুলে প্রাপ্ত মালিক আব্দুস সালাম ও সাইফুল ইসলাম জানান।

এদিকে বিজ্ঞ আদালতে ওই সম্পত্তির দলিল ভূয়া প্রমানিত হলেও ওই প্রতিপক্ষ সংঘবদ্ধ চক্র স্থানীয় পেশী শক্তি ব্যবহার করে জোরপূর্বক গত ১৯ জুলাই সকালে উক্ত সম্পত্তির পুনরায় দখল নিতে আসে এবং এসময় তাদেরকে বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকীসহ নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে গত ২৩ জুলাই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ওই সম্পত্তির বর্তমান মালিক সাইফুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের বড়ভাই আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী-সন্তান বিহীন এবং ষাটোর্ধ বৃদ্ধ লিভার ক্যান্সারের রোগী ছিলেন। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসা শাস্ত্রতে তার আরোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছিলেন। সেই মৃত্যুপথযাত্রীর নামে পৌর শহরের কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত ও জালিয়াতি দলিল করতে আমাদের বাড়ির কাজের মেয়ে রুবিয়াকে বিগত বছরের জুনের ২/৩ মাস আগে ভূয়া নিকাহনামা তৈরী করে ক্যান্সার রোগীর স্ত্রী বানিয়ে দেয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র। সেই মোতাবেক সক্রিয় সংঘবদ্ধ চক্ররা ক্যান্সার রোগীর অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী থাকলে তার অনুপস্থিতিতেই জাল স্বাক্ষর ও টিপসহি দিয়ে কোটি টাকার সম্পত্তি রুবিয়ার নামে দলিল রেজিষ্ট্রি করে নেয় ।

এবং পরবর্তীতে তাদের পছন্দমত ব্যাক্তির নামে পুনরায় দলিল করে নেয়ার ফন্দি আটে এবং দখল করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তাছাড়া ওই সম্পত্তির বেদখলের চেষ্টা ও ভূয়া দলিল সৃষ্টিসহ নামজারি করনের চেষ্টা সংক্রান্ত খবর বিগত বছরের একাধিক পত্র পত্রিকায় প্রকাশ হলে প্রশাসনের দৃষ্টি পড়ে। ওই সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য রুবিয়া খাতুন ভূয়া কাবিনে স্ত্রী সেজে কৌশলে আব্দুল সাত্তারের সম্পত্তি দাতাবিহীন জমি রেজিষ্ট্রি ও আবার খারিজি নামজারির প্রচেষ্টা কালে ওই কাজের মেয়ে রুবিয়া বিগত ১ জুলাই তার নাম স্বাক্ষর জাল ও সুকৌশলে ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে মর্মে নিজ উপস্থিতিতে ওই নামজারি বাতিলের একটি লিখিত অভিযোগ দিলে তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: লিটন সরকার আবেদনকারী রুবিয়া লিখিত ও মৌখিক জবানবন্দিতে গত ২ /৭/১৮ইং তারিখের নামজারির আদেশ ও তৎমুলে সৃষ্ট ১০৯নং শেরপুর মৌজার ৮৯৩৯ নং হোল্ডিং বাতিল করে তফসীলি সম্পত্তি পূর্বের হোল্ডিং এ ফেরত প্রদানের আদেশ দেন।

এ ব্যাপারে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত বুলবুল ইসলাম অভিযোগ প্রাপ্তীর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই স্থানের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।