নওগাঁয় এফিডেভিট করে বাবার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন মেয়ে | Daily Chandni Bazar নওগাঁয় এফিডেভিট করে বাবার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন মেয়ে | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২০ আগস্ট, ২০১৯ ০৮:৫৫
নওগাঁয় এফিডেভিট করে বাবার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন মেয়ে
সান্তাহার (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

নওগাঁয় এফিডেভিট করে বাবার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন মেয়ে

বগুড়ার সান্তাহার ইউনিয়নের ছাতনীর মাতোপাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে কলেজ পড়–য়া ছাত্রী রজনী আক্তার। রজনীর লোভী বাবা টাকার জন্য মেয়ের সংসার ভাঙার হুমকি দিয়ে নগ্ন ছবি সংগ্রহ করে ব্ল্যাকমেইল করায় অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন মেয়ে। গত রোববার নওগাঁ জজ কোর্টের আইনজীবী হারুন-অর রশীদ এবং নোটারি পাবলিক মো. সোলাইমান আলী চৌধুরী স্বাক্ষরিত তিনশ টাকার দলিলে এফিডেভিটের মাধ্যমে বাবার সম্পর্ক ছিন্ন করেন রজনী আক্তার। বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার ইউনিয়নের ছাতনী মাতোপাড়ার জাহাঙ্গীর আলম এবং জুলেখা বানুর মেয়ে রজনী সান্তাহার সরকারি কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

এফিডেভিট সূত্রানুযায়ী, রজনীর মা মারা যাওয়ার পর বাবা জাহাঙ্গীর আলম নতুন করে বিয়ে করে সংসার করছেন। রজনী ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করা অবস্থায় তার বাবা লেখাপড়ার সব খরচ বন্ধ করে দেন। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পড়াশোনা করে এসএসতিতে জিপিএ-৫ পান তিনি। টিউশনি করে নিজের খরচ চালান। সেই সঙ্গে বাবাকে সহযোগিতা করেন। কিন্তু তার বাবার টাকার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাকে প্রবাসী ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে চাপ প্রয়োগ করেন। এতে রাজি না হওয়ায় তার ওপর চলতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এ অবস্থায় ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর নওগাঁর শিমুলিয়া গ্রামের প্রবাসী সৈকত আলীর সঙ্গে দুদিন রজনীকে একটি ঘরে আটকে রেখে ২৭ অক্টোবর ওই বৃদ্ধের সঙ্গে জোর করে রজনীর বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের সময় রজনীর বাবা সৈকতের কাছ থেকে দু’দফায় ৭০ হাজার টাকা নেয়াসহ বিভিন্ন সময় তার জামাইয়ের কাছে টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে স্বামী তাকে গালিগালাজ ও মারধর করতেন। এমনকি তাকে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষাও দিতে দেননি।

এসবের মধ্যেই ২০১৮ সালের ৯ নভেম্বর মালয়েশিয়া যান স্বামী সৈকত আলী। এরপর থেকে রজনী আক্তার তার নানার বাড়িতে মামাদের আশ্রয়ে রয়েছেন। প্রায় একমাস হলো সৈকত আলী বাড়িতে এসেছেন এবং রজনী আক্তারকে নিতে চান। কিন্তু তিনি আর বৃদ্ধ স্বামীর সংসার করতে চান না। একইসঙ্গে বাবার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।

এ বিষয়ে রজনী আক্তারের বাবা জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়েকে কোনো প্রকার নির্যাতন করিনি। টাকা নিয়েও প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়নি। মেয়ে নিজে থেকেই বিয়ে করেছে। চারমাস থেকে মেয়ের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। এখন যদি এফিডেভিট করে আমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তাহলে আর কি করার?
রজনী আক্তারের স্বামী সৈকত আলী বলেন, মেয়ের বাড়িতে ঘটক পাঠিয়ে প্রস্তাব দিয়ে বিয়ে করেছি। বিয়েতে এক লাখ টাকা মোহরানা দেয়া হয়েছিলো। আমি বিদেশ যাওয়ার পর চিকিৎসার নাম করে রজনী বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। দেশে এসেছি প্রায় একমাস হলো। স্ত্রীর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নাই। এখন স্ত্রী যদি চায় তাকে গ্রহণে আমার কোনো আপত্তি নাই। তবে মেয়ের বাবা চিটার প্রকৃতির মানুষ বলেই জানি।