বগুড়ায় শীতকালিন সবজি উৎপাদন হবে ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন | Daily Chandni Bazar বগুড়ায় শীতকালিন সবজি উৎপাদন হবে ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট, ২০১৯ ০২:২০
বগুড়ায় শীতকালিন সবজি উৎপাদন হবে ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন
এইচ আলিম

বগুড়ায় শীতকালিন সবজি উৎপাদন হবে ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন

সবজি উৎপাদনে বগুড়া সব সময় এগিয়ে। গত বছর রবি মৌসুমে সবজি চাষের রেকর্ড গড়ার পর এবছরও ভাল সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চাষিরা। আগামজাতের শীতকালিন সবজি চাষ শুরু হয়েছে। কৃষি অফিস বলছে এবার শীত মৌসুমে সবজি উৎপাদন হবে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, বগুড়ায় শীত (রবি) ও গ্রীস্মকালিন (খরিপ) সবজি চাষাবাদ করা হয়। গ্রীস্মকালিন সবজি উত্তোলন শেষ হয়েছে। মাঠে মাঠে এখন শীতকালিন সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছে চাষিরা। আগামজাতের সবজি কিছু এলাকায় চাষ হয়েছে। কৃষি অফিস বলচে এখন পর্যন্ত আগামজাতের শীত সবজি চাষ হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে। সবজি চাষিরা এখন জমির যত্ন নিচ্ছে আর সবুজ স্বপ্নের আশায় বুক বেঁধে আছে।

২০১৮ সালে বগুড়া জেলায় রবি মৌসুমে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে শবজি চাষ করা হয়। আর ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন। আর খরিপ মৌসুমে প্রতিবছর চাষ হয়ে থাকে ৫ থেকে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে। গ্রীষ্মকালিন বা খরিপ মৌসুমে বগুড়ায় মোট সবজি উৎপাদিত হয় প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। আর ২০১৯ সালে রবি মৌসুমে জেলায় ১২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে রকমারি সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা থেকে ফলন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। হিসেব অনুযারি ফলন ধরা হলেও চাষিরা আগামজাতের উচ্চ ফলনশীল চারা রোপন করেছে। এতে করে ফলন আরো বৃদ্ধি পাবে। 

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন অনেক কৃষকই বাড়তি লাভের আশায় এখন শীতকালিন আগাম সবজি চাষে মাঠে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। মুলা, শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাধাকপি, লালশাক, পালংশাক, করলা, লাউ, কাঁচা মরিচ, ঢেঁড়স, গাঁজর, মিষ্টি কুমড়া, টমেটোসহ নানা জাতের সবজি চাষ করছেন কৃষকরা। বগুড়ার ১২ টি উপজেলার মধ্যে সদর, শাজাহানপুর, শেরপুর, শিবগঞ্জ, সারিয়াকান্দি গাবতলী উপজেলা সবজি এলাকা হিসেবে পরিচিত। এসব উপজেলায় বছরের বারো মাসই রকমারি সবজি ফলান কৃষকরা। 
বগুড়ার সবজি চাষিরা বলছেন, শীতকালিন আগামজাতের সবজি চাষে যেমন লাভ রয়েছে তেমনি ঝুঁকিও আছে। বীজতলার ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা আরও বেশি। কমবেশী বৃষ্টি লেগেই আছে। পাশাপাশি রোদের সঙ্গে রয়েছে ভ্যাপসা গরম। এতে বীজতলা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিটা অনেক বেশি। তবু ঝুঁকি মেনেই আগামজাতের সবজির বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত বগুড়ার কৃষকরা।

বগুড়ার ভাটকান্দি বটতলা এলাকার সবজি চাষিরা জানান, সারা দেশেই বগুড়ার সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখন সবজি চাষ শুরু হয়েছে। কোথাও শীম চাষ করা হয়েছে। কেউ বা আবার শীতের শাক বুনেছে। বাধাকপিও কয়েকদিনের মধ্যে চাষ শুরু হবে। তবে আগামজাতের পাতা ও ফুলকপি চাষ হয়েছে। 
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানান, জেলা সদর, শাজাহানপুর, শেরপুর, শিবগঞ্জ, গাবতলী, সারিয়াকান্দি উপজেলায় বছরের বারো মাসই কমবেশি সবজি চাষ হয়ে থাকে। দেশের প্রচুর পরিমানে সবজির চাহিদা রয়েছে। বগুড়ায়র কৃষকরা সারা বছর সবজি চাষ করে এই চাহিদা পূরণে চাষবাস করে যাচ্ছে। সামনের রবি মৌসুমকে ঘিরে সবজি চাষে ব্যস্ত আছে কৃষকরা। রবি মৌসুমের আরো কিছুটা সময় থাকলেও কিছু চাষি আগামজাতের সবজি চাষ শুরু করে দিয়েছে। সবজি চাষিদের ভাল সবজি উৎপাদনে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। 

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, জেলা সদর, শাজাহানপুর, শেরপুর, শিবগঞ্জ উপজেলায় প্রায় সারা বছরই সবজি চাষ হয়। সারাদেশে এখন বগুড়ার সবজির বেশ চাহিদা হয়েছে। একারণে সবজি চাষিরা দ্রুত আয় করতে পারে। সবজিতে সারা বছর একরকম আয় ভাল হয় বলে বগুড়ার চাষিরা সবজি চাষে ঝুঁকেছে বেশি। এবার আবহাওয়া এখন পর্যন্ত পক্ষে থাকায় এবছর ভাল সবজি উৎপাদনের আশা করছেন।