বগুড়ায় পাটের দাম থাকলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৮ হাজার হেক্টর | Daily Chandni Bazar বগুড়ায় পাটের দাম থাকলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৮ হাজার হেক্টর | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৮ আগস্ট, ২০১৯ ০২:৩৮
বগুড়ায় পাটের দাম থাকলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৮ হাজার হেক্টর
এইচ আলিম

বগুড়ায় পাটের দাম থাকলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ৮ হাজার হেক্টর

বগুড়ায় পাটের দাম থাকলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চাষিরা। জেলায় পাট কাটার সময় হলে বন্যা দেখা দেয়ায় এই ক্ষতির শিকার হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় ১২ হাজার হেক্টরে পাট চাষ হয়েছে। বন্যায় ৮ হাজার ৬৮৯ হেক্টর জমির ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর জেলায় মোট ফলন পাওয়া গেছে প্রায় ৪২ হাজার বেল। 

বগুড়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরুতে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বেড়ে প্রথম বন্যা দেখা দেয়। এরপর জেলার ধুনট, সোনাতলা, গাবতলী, শাজাহানপুর, শিবগঞ্জ, শেরপুর উপজেলায় পর্যায়ক্রমে বন্যার পানিতে ফসল তলিয়ে যায়। জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে ৭টি উপজেলায় বন্যায় পাট, আউশ, আমন, শাকসবজি, আখসহ অন্যান্য ফসল মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার হেক্টর ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই পরিমান ফসলের জমির সাথে জড়িত আছে প্রায় অর্ধলাখ কৃষক। এরমধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলাতেই পাটের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৯৫ হেক্টর। সব মিলিয়ে প্রায় ৯ হাজার হেক্টর পাটের ক্ষতি হয় বন্যায়। 

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানান, জেলায় এবছর প্রাথমিকভাবে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৫ হাজার ৪৫০ হেক্টর। আর ফলন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় প্রতি হেক্টরে ১২ বেল করে। সেখানে চাষ হয় প্রায় ১২ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৮ হাজার ৬৮৯ হেক্টর জমির পাট। বন্যা শুরু হলে কিছু সংখ্যাক কৃষকরা পাট কেটে সংগ্রহ করতে পারলেও বেশিরভাগই বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমির ফলন পাওয়া গেছে। জেলার মধ্যে বেশি পাট আবাদ হয়ে থাকে সারিয়াকান্দি উপজেলায়। এই উপজেলাতেই যমুনা নদী থাকায় বন্যায় পাটের ক্ষতি হয়েছে বেশি। গত ২০১৮ সালে চাষের লক্ষ্যমাত্রা একই থাকলেও চাষ হয়েছিল ১২ হাজার ২৭০ হেক্টর। আর ফলন পাওয়া যায় ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৩০ বেল। (পৌনে ৫ মনে এক বেল)। 
এদিকে বগুড়ার কয়েকটি হটে নতুন পাট বেচাকেনা শুরু হয়েছে বেশ কয়েকদিন আগে। পাট চাষিরা এবার হাটে পাট তোলার পর দেশি পাট ১৬০০ থেকে ১‘৮০০ টাকা মন এবং তোষা পাট বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা মন। গত বছরও প্রায় একই দামে পাট কেনাবেচা হয়েছে বগুড়ায়। বগুড়ায় হাটে পাটের দাম থাকলে বন্যার কারণে পাটের ভাল উৎপাদন হয়নি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম চাষের কারণ হিসেবে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, পাট চাষের পর বাজার বিপনন ও পাট কাটার পানি না পাওয়ার কারণে অনেক চাষি আগ্রহ কম দেখায়। ফলে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে একসময় বগুড়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি পাট উৎপাদন হতো।
বগুড়ার জেলার ধুনট, সারিয়াকান্দি ও সদর উপজেলার চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বগুড়া জেলায় পাট চাষিরা সময়মত পাট চাষ করেন। পাট কাটার সময় হলে জুলাই মাসে শুরুতে বন্যা দেখা দেয়। বন্যা চলাকালে কিছু পাট চাষি পূর্ন পাট কেটে জাগ দিলেও সেটিও ভেসে যায়। আর অপূর্ন পাটগুলো পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ^াস জানান, জেলার কৃষকরা পাট চাষে অভিজ্ঞ। এছাড়া গত বছরের চেয়ে এবছর ভাল ফলন পাওয়ার কথা ছিল। বন্যার কারণে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু তারপরও জেলায় ভাল অবস্থান রয়েছে। বন্যার সময় বেশিরভাগ এলাকায় পূর্ন পাট ছিল। কিছু জাগ দেয়া পাট ভেসে গেছে।