বগুড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৭৩ কি:মি: পাকা সড়ক মেরামতে ৫৫ কোটি টাকার চাহিদা পত্র প্রেরণ | Daily Chandni Bazar বগুড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৭৩ কি:মি: পাকা সড়ক মেরামতে ৫৫ কোটি টাকার চাহিদা পত্র প্রেরণ | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১ অক্টোবর, ২০১৯ ২১:৩৫
বগুড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৭৩ কি:মি: পাকা সড়ক মেরামতে ৫৫ কোটি টাকার চাহিদা পত্র প্রেরণ
এইচ আলিম

বগুড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৭৩ কি:মি: পাকা সড়ক মেরামতে ৫৫ কোটি টাকার চাহিদা পত্র প্রেরণ

বগুড়ায় অতি বর্ষণ ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৭৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক মেরামতের জন্য ৫৫ কোটি টাকার চাহিদা পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। চলতি বছরের আগস্ট মাসের দিকে এই চাহিদা পত্র প্রেরণ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর কর্মকর্তারা বলছেন জেলা অতি বর্ষণ ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সকল পাকা সড়ক সংস্কার করতে প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ পাওয়া যাচ্ছে না। অতি বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্থ এবং বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরেও সড়কগুলো সংস্কার করা যাচ্ছে না। সড়কগুলো বেহাল হয়ে থাকায় দির্ঘভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারিদের। 

বগুড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলায় চলতি বছরের জুলাই মাসের অতি বর্ষণ ও বন্যায় সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কাঁচা সড়কের কিছু ক্সতি হলেও সিংহভাগ ক্ষতি হয়েছে পাকা সড়কের। এলজিইডি সড়কগুলো ক্ষতি গ্রস্থ হলে গ্রামীণ জনপদের মানুষের সাথে ব্যাবসা, বাণিজ্য, কৃষির উপর চাপ পড়ে। যে কারণে অনেক সময় কৃষিপণ্যর দাম বেড়ে যায়। এ পর্যন্ত জেলায় অতি বর্ষণ ও বন্যায় ক্ষতি হয়েছে  সারিয়াকান্দি উপজেলায় পাকা সড়ক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ কিলোমিটার। এই উপজেলার সড়ক সংস্কারে চাহিদা প্রেরণ করা হওেয়ছে ৮ কোটি টাকা। সোনাতলা উপজেলায় ১৫ কিলোমিটার পাকা সড়ক ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে। সংস্কার বাবদ প্রাথমিক চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে ৫ কোটি টাকা।

গাবতলী উপজেলার ১০ কিলোমিটার সংস্কারে ৩ কোটি টাকা, ধুনট উপজেলার ৭ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ সড়কের জন্য সংস্কার করতে ২ কোটি টাকা, বগুড়া সদরে ৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য দেড় কোটি টাকা, শিবগঞ্জ উপজেলার ৬০ কিলোমিটার সড়কের জন্য ১৪ কোটি টাকা, কাহালু উপজেলায় ১৫ কিলোমিটার সড়কের জন্য সংস্কার ব্যায় ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা, নন্দিগ্রাম উপজেলার ১০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারে ২ কোটি টাকা, আদমদিঘি উপজেলার ১৩ কিলোমিটার সড়কের জন্য ৩ কোটি টাকা, দুপচাঁচিয়া উপজেলার ৯ কিলোমিটার সড়কের জন্য ১ কোটি ২০ লাখ, শাজাহানপুর উপজেলার ৮ কিলোমিটার সড়কের জন্য ২ কোটি ৮০ লাখ, শেরপুর উপজেলায় ১২ কিলোমিটার সড়কের জন্য ৩ কোটি টাকা। সড়ক সংস্কারে মোট প্রায় ৪৪ কোটি টাকার চাহিদা পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।

এর সাথে জেলার ৭টি সেতুসহ সংযোগ সড়কের জন্য আরো প্রায় ১১ কোটি টাকার চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে জেলার সারিয়াকান্দিতে ৩টি, গাবতলী উপজেলায় ৩টি ও কাহালু উপজেলায় ১টি সেতু । যা বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ৭টি সেতুসহ ১৭৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক সংস্কারে মোট ৫৫ কোটি টাকা চেয়ে একটি চাহিদা পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।বগুড়ার সারিয়াকান্দি, শিবগঞ্জ, ধুনট, গাবতলী, সোনাতলাসহ সকল উপজেলায় অতি বর্ষণে ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়কগুলো এখনো মেরামত করা হয়নি। চলতি বছরের ভয়াভহ বন্যায় উপজেলাগুলোর সিংহভাগ সড়কের পীচ পাথর উঠে গিয়ে প্রয়োজনীয় সড়ক এখন মরণ ফাঁদ হয়ে আছে। খানা খন্দকে পরিনত হওয়া পথচারিসহ যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সড়কগুলো সংস্কার না হওয়ায় পথচারীদের দূর্ভোগ চরমে উঠেছে। এই পথ পাড়ি দিতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারিরা। উপজেলাগুলোর সাথে জেলা পর্যায়ের সকল যোগাযোগ হয়ে থাকে এসব সড়কই বেশিক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আছে। এইসব সড়ক পথে কৃষি, যোগাযোগ, চলাচল হয়ে থাকে বেশি। চলতি বছরের বন্যায় বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বিভিন্ন সড়কগুলোতে কার্পেটিং পিচ উঠে গিয়ে ছোট বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি স্বাভাবিক যান চলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। 
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ চরপাড়ার হাটকরমজা সড়কের কয়েকজজন পথচারিসহ ভ্যান চালক আফজাল হোসেন জানান, বন্যার পানি নেমে গেছে।

সড়কের গর্ত আরো বড় হচ্ছে। রাতে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গেলে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। দিনে যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই ভ্যান বিকল হয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ভ্যান ঠিক করতে সময় চলে যাচ্ছে। ভাল আয় হচ্ছে না সড়কের।সোনাতলা উপজেলার হরিখালীহাট-হুয়াকুয়া ভায়া চরপাড়া বাসস্ট্যান্ড সড়কের নিয়মিত যাতায়াতকারি আব্দুর রহমান জানান, বন্যায় সড়কের খুবই ক্ষতি হয়েছে। সড়কগুলো দিয়ে স্থানীয় কৃষকরা জমির বিভিন্ন সবজি, ধান ও পাট পরিবহন করে থাকে। এখন পাটের সময় হলেও রাস্তা ভাঙ্গার কারণে ভ্যান চালকরা সবায় ভ্যানে পাট তুলতে চাইছে না। 

বগুড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী সাইফুল কবীর  জানান, বগুড়ায় চলতি বন্যা ও অতি বর্ষণে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক দিয়ে সাধারণ মানুষ জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করে থাকে। সড়কগুলো গুরুত্বপূর্ন। সড়কগুলো সংস্কারের জন্য ৫৫ কোটি টাকা একটি চাহিদা পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। চাহিদা পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদা পাওয়া গেলে ক্ষতিগ্রস্থ সড়কগুলো মেরামতর করা হবে। বন্যায় কমবেশি সকল উপজেলার সড়ক ক্ষতি হয়েছে।