রোদে পুড়ে সবুজ শীষ হয়েছে সোনালী চাল আকারে ফলন হবে ৫ লাখ মে. টন | Daily Chandni Bazar রোদে পুড়ে সবুজ শীষ হয়েছে সোনালী চাল আকারে ফলন হবে ৫ লাখ মে. টন | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর, ২০১৯ ২০:১১
রোদে পুড়ে সবুজ শীষ হয়েছে সোনালী চাল আকারে ফলন হবে ৫ লাখ মে. টন
এইচ আলিম

রোদে পুড়ে সবুজ শীষ হয়েছে সোনালী চাল আকারে ফলন হবে ৫ লাখ মে. টন

রোদে পুড়ে সবুজ শীষ হয়েছে সোনালী। মাঝে মাঝে বাতাস দোল দিয়ে যায়। মাঝে মাঝে ঝনঝন শব্দ করে যায়। মুখরিত সেই সব শব্দের মাঝেই সোনালী রঙের শীষে ডাক দিয়ে গেছে পাকা আমন ধান কাটার ডাক। ফসলের নতুন গন্ধ মেখে চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে আমন ধান গরে তুলতে। কৃষি অফিস বলছে চাল আকারে জেলায় এবার বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। চলতি মৌসুমে আমনের ফলন পাওয়া যাবে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন। 

পল্লী কবি জসীমউদ্দীন লিখেছেন, 'আশ্বিন গেল কার্তিক মাসে পাকিল ক্ষেতের ধান/সারামাঠ ভরি গাহিছে কে যেন হলদি কোটার গান/ধানে ধান লাগি বাজিছে বাজনা, গন্ধ উড়িছে বায়/ কলমীলতায় দোলন লেগেছে, হেসে কূল নাহি পায়। এভাবেই কার্তিকের রূপের কথা বলেছেন তাঁর অমর সৃষ্টি কাব্যকাহিনী নক্সী-কাঁথার মাঠে। কবির সেই ধান পাকার গন্ধ নিয়েই কৃষি ¤্রমিক আর আমন চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে।

বগুড়া জেলা শহরের শাখারিয়া, সাবগ্রাম, নন্দীগ্রাম সড়ক, কাহালু সড়ক, শিবগঞ্জ সড়ক বেশ কিছু এলাকায় ধান কাটা চলছে। শ্রমিকরা ধলবেঁধে ধানকেটে মাড়ায় করছে। গতকাল রোববার বগুড়া শহরের চারমাথা, তিনমাথা, মাটিডালি, মহাস্থান এবং রেলওয়ে স্টেশনে ধান কাটার শ্রমিকদের দেখা গেছে। তারা উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে বগুড়ায় আসছে ধান কাটতে। গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর থেকে আসা ধান কাটার শ্রমিক মো: রহমত মিয়া জানান, তারা ৮জন এক সাথে ধানকাটতে গাবতলী উপজেলায় যাচ্ছে। তারা কয়েক বছর ধরে ধান কাটার সময় ওই এলাকায় যায়। সেখানে ধান কেটে মাড়ায় শেষে অন্য কৃষকের ধান কাটবেন। ধান কাটার এই সময়টাতে তারা এখন এলাকা এলাকায় ধান কাটবেন। 

বগুড়ার নন্দীগ্রাম রনবাঘা হাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোটা ধান বিক্রি হয়েছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা মন। আর চিকন ধান ধান বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা মন। 
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তারা জানান, জেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৮৫ হেক্টর। সেখানে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২২৫ হেক্টর। গত বছর ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬০ হেক্টর। উৎপাদন হয় সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন। চলতি বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল। 

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক মো: শাহাদুজ্জামান (শস্য) জানান, বগুড়া কৃষি প্রধান এলাকা। এই এলাকায় আমনের এখন পর্যন্ত ভাল ফলন পাওয়া গেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও বৃদ্ধি পাবে। ধানকাটা মাড়ায় শুরু হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পুরোদমে ধান কাটা হবে। জেলার যেসব এলাকায় আগামজাতের আমন ধান চাষ করা হয়েছে সেগুলোর সিংহ ভাগ কাটা হয়েছে। বগুড়ায় গত বছরের মত এ বছরও চাল আকারে আমনের ভাল ফলন পাওয়া যাবে। এ পর্যন্ত জেলায় প্রায় ২৬ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। ধান কাটা চলমান রয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলন ধরা হয়েছে ২.৮ মেট্রিক টন করে।