নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রসায়ন ল্যাবে ব্যবহারিক ক্লাসে সোডিয়াম ক্লোরাইড দ্রবন বিস্ফোরনে সাত শিক্ষার্থীর শরীর ঝলসে যাওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলেজের ল্যারেটরী রুমগুলোর নিরাপত্তা, দায়ী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন ও অধ্যক্ষের অপসারনসহ ৮দফা দাবীতে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ঘন্টাব্যাপী প্রতিষ্ঠানের সামনের রাস্তায় নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাধারন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়।
মানববন্ধনে নওগাঁ পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের কম্পিউটার পর্বের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র নাফিউর রহমান নাফির সভাপতিত্বে ফুড তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কোরায়শি, কম্পিউটার বিভাগের রহমত আলী, ইনভারমেন্ট বিভাগের জাকিরুল ইসলাম, এডিটি প্রথম বর্ষের তুহিন ও আর্টিটেকচার বিভাগের শিহাব উদ্দিন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। এসময় রাস্তার দুইপাশে শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা- অগ্নিদগ্ধ ৭ শিক্ষার্থীর উন্নত চিকিৎসার খরচ ও ক্ষতিপুরন প্রতিষ্ঠান প্রশাসন কর্তৃক নিশ্চিতকরণ, প্রতিষ্ঠান ক্যাম্পাসে স্থায়ী মেডিকেল সেন্টার স্থাপন ও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, দুর্ঘটনার কারণ, সঠিক তদন্ত, অনভিজ্ঞ গেস্ট টিচার দিয়ে ক্লাশ পরিচালনা, ল্যাব পরিচালনা বন্ধ করা এবং শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের অসদাচারন সহ ৮ দফা দাবী জানানো হয়। মানববন্ধনের পর বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার্থীদের কলেজে প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা বলে জানা গেছে।
এদিকে, দ্রবনের বিস্ফোরণের দুর্ঘটনার পর দুইটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়। নওগাঁ জেলা প্রশাসক থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: কামরুজ্জামানকে প্রধান করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডেপুটি সিভিল সার্জন ও কলেজের কম্পিউটার বিষয়ের চীফ ইন্সট্রাক্টর আমিনুল ইসলামকে নিয়ে একটি এবং অপরটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার বিভাগের চীফ ইন্সট্রাক্টর আমিনুল ইসলাম,তানভীর আহম্মেদ বিভাগীয় প্রধান আর্বিটেকচার ও নিরাপত্তা অফিসার সোহাইল ইসলাম।
নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ননটেক বিভাগের চীফ ইনস্ট্যাক্টর নাসিমুজ্জামান বলেন, বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার্থীদের কলেজে প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি করায় কলেজে আসতে পারেনি। শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত থাকায় দ্বিতীয় শিফ্টের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছেনা। কলেজের অধ্যক্ষ রাজশাহীতে আহত শিক্ষার্থীদের কাছে থাকায় পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, রোববার বিকেল ৪টার দিকে দ্বিতীয় শিফটের কম্পিউটার বিভাগের ৪১ জন শিক্ষার্থী রসায়ন ল্যাবে ব্যবহারিক পরীক্ষার সময় সোডিয়াম ক্লোরাইড পরীক্ষা করছিল। এসময় অসাবধানতাবসত সোডিয়াম ক্লোরাইড দ্রবনের বিস্ফোরণে ৭ জন ছাত্রের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঝলসে গিয়ে আহত হয়। আহতরা হলেন, কম্পিউটার বিভাগের ছাত্র তৌহিদ চৌধূরী, নিয়ামুল, রাকিব হাসান, সারোয়ার, শাহরিয়ার জসিম ও সাফিসহ ৭জন। এদের সবার বয়স ১৭ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। আহতদের উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে অর্থপেডিক বিভাগে ৪ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিন জনের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) পাঠানো হয়। তাদের শরীরের ৩০ শতাংশ ঝলসে গেছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক। দুর্ঘটনার পর পুলিশ এবং প্রসাশনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।