শেরপুরে ১২ জুয়াড়ী আটক | Daily Chandni Bazar শেরপুরে ১২ জুয়াড়ী আটক | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৩০ জানুয়ারী, ২০২০ ০০:৫৬
জুয়াড়ি বাড়ির আসবাবপত্র তছনছ, মহিলাদের সাথে অশ্লীল আচরণ, অর্ধ লক্ষাধিক টাকা তছরুপ
শেরপুরে ১২ জুয়াড়ী আটক
শুভ কুন্ডু, শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ

শেরপুরে ১২ জুয়াড়ী আটক

বগুড়ার শেরপুরে জুয়া খেলার আস্তানায় অভিযান চালিয়ে আসবাবপত্র তছনছ, অর্ধ লক্ষাধিক টাকা তছরুপ করে ১২জন জুয়াড়িকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। তবে জব্দ দেখানো হয়েছে মাত্র তিন হাজার সাতশত টাকা। এদিকে জুয়াড়ি জুয়েলের স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ তার ব্যাবহৃত পার্স থেকে নগদ টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এসআই আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে।

এবিষয়ে পরদিন বুধবার দুপুরে জুয়াড়ি আটকের খবর সংগ্রহ করতে গেলে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কটাক্ষ আচরণ করেছেন এসআই আতিকুর রহমান।
সরেজমিনে জানা গেছে, শেরপুর উপজেলার শাহ-বন্দেগী ইউনিয়নের সাধুবাড়ী পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে জুয়েল রানার বাড়িতে জুয়ার আস্তানার খবর পেয়ে গত ২৮ জানুয়ারী মঙ্গলবার রাত অনুমান দেড়টার দিকে অভিযান চালায় থানা-পুলিশ। এসময় থানা পুলিশের এসআই আতিকুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নগদ টাকা, জুয়ার সামগ্রী সহ ১২জন জুয়াড়িকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে আস্তানায় অভিযান চলাকালে থানা পুলিশের এসআই আতিকুর রহমানসহ পুলিশ সদস্যরা জুয়াড়ি জুয়েলের বাড়ি-ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে এবং তার স্ত্রী মিনতি খাতুনকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে ওই এসআই আতিকুর রহমানের সঙ্গীয় ফোর্সরা তাদের ঘরের আসবাবপত্র তছনছের কালে মিনতির ব্যবহৃত পার্স থেকে নগদ সাড়ে ৭ হাজার টাকা, ওয়ার ড্রবে থাকা কাপড়ের নিছ থেকে ৩ হাজার ৮’শ টাকা, জুয়াড়ি মহরের কাছে থাকা ১৭ হাজার, রফিকুল ইসলামের কাছে ৭ হাজার টাকাসহ প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নেয়। এমনকি পুলিশি অভিযানে রক্ষা পায়নি টয়লেটের রাখা ব্যবহৃত ন্যাকড়াগুলোও বলে জানিয়েছেন ওই বাড়ির মহিলা সদস্যারা। জুয়া খেলার সরঞ্জামাদি ও খেলায় ব্যবহিত টাকা জব্দের পর আরও টাকা বের করতে জুয়াড়িদের আটকে রেখে ঘটনাস্থলেই লাঠি দিয়ে ৮/১০ টি করে প্রহার করেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। 

পুলিশের অভিযানে গ্রেফতারকৃত জুয়াড়িরা হলো, শেরপুর উপজেলার শাহ-বন্দেগী ইউনিয়নের সাধুবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে জুয়েল রানা (৩২), শেরুয়া রহমতপুরের মহিদুল ইসলামের ছেলে মহর আলী(৩৪), শহীদুল ইসলামের ছেলে সানোয়ার হোসেন(৩২), ধড়মোকাম গ্রামের আজিজুল বেপারীর ছেলে মোখলেছুর রহমান (৪৫), মৃত মহের আলীর ছেলে তফিজ উদ্দিন (৪৫), মৃত আজগর আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৪), আব্দুস আজিজের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪০), ভান্ডারকাফুড়া গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে আশরাফুল (৫০), হামছায়াপুর গ্রামের মৃত জবদুল মন্ডলের ছেলে বেলাল মন্ডল(৫২), গোপালপুর গ্রামের  মৃত মাজেম ফকিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (৪০), রনবীরবালা ঘাটপার গ্রামের মো. আব্দুর রেজ্জাক হোসেনের ছেলে তুহিন (৪২), মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে আলহাজ হোসেন (৪৮)। 

জুয়াড়িদের সাথে  দফারফা করতে এস আই আতিকুর রহমান জুয়াড়িদের মধ্যে একেকজনকে ডেকে বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়ে থানার মধ্যেই মারপিট শুরু করে বলে আটককৃত জুয়াড়িরা ও তাদের আত্নীয় স্বজনরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন। অবশ্য পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে নগদ ৩ হাজার ৭’শ টাকা, বিভিন্ন ধরণের ডন কার্ড (তাস) সহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা নিয়ে মামলা দিলেও ঘটনাস্থল থেকে অর্ধলক্ষাধিক টাকা আদায় এবং মারপিটের কথা অস্বীকার করেন ওই অভিযানকারী পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক আতিকুর রহমান। 

এ ঘটনায় পরদিন বুধবার দুপুরে পুলিশ জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে ১৮৬৭ সালের জুয়া আইনের ৪/৬ ধারায় মামলা দায়ের করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে থানা পুলিশ জানিয়েছেন।এ বিষয়ে শেরপুর থানার চলমান দায়িত্বরত কর্মকর্তা (এসআই) এবাদ আলী মোল্লা জানান, আটক জুয়াড়ি পরিবার থেকে যেসব অভিযোগ উপস্থাপন করেছে, তাহা আদৌ সত্য নয়।এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (শেরপুর সার্কেল) গাজিউর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে জুয়া সামগ্রী উদ্ধার ও আটক ছাড়া পুলিশের আর কোন কাজ নেই। তবে যদি জুয়াড়িদের মারপিট, অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ পরিবারের সদস্যদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজের প্রমাণ মেলে তাহলে ওই অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।