রোগ নিরাময়ের জন্য এসো! নিষ্পেষিত হয়ে বেরিয়ে যাও! | Daily Chandni Bazar রোগ নিরাময়ের জন্য এসো! নিষ্পেষিত হয়ে বেরিয়ে যাও! | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ০৮:৩৯
রোগ নিরাময়ের জন্য এসো! নিষ্পেষিত হয়ে বেরিয়ে যাও!
শুভ কুন্ডু, শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ

রোগ নিরাময়ের জন্য এসো! নিষ্পেষিত হয়ে বেরিয়ে যাও!

মেডিল্যাব ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক! বগুড়া শেরপুরের মহাসড়ক সংলগ্ন খেজুরতলা এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাইভেট ক্লিনিক। যেখানে সঠিক স্বাস্থ সেবার প্রত্যয় ও রোগ নিরাময়ের মহান চিন্তা চেতনার কথা বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকের ব্যানারে উপস্থাপন করা থাকলেও বাস্তব চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। আসলে তাদের একটি অংশ বর্তমানে - “রোগ নিরাময়ের জন্য এসোÑনিষ্পেষিত হয়ে বেরিয়ে যাও” এই চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসী। একটি সমাজে বসবাসকৃত নাগরিকদের পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মধ্যে চিকিৎসা হলো অন্যতম। একটু সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিটি মানুষেরই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

আর তাই রোগ নিরাময়ের জন্য মানুষ ডাক্তার, হাসপাতাল ও ক্লিনিকের স্মরণাপন্ন হয় এবং সেখানে অবস্থান করে। কিন্তু রোগ নিরাময়ের নামে রোগীদের বিভিন্ন ভাবে নিষ্পেষিত, প্রতারিত এমনকি রোগীকে জিম্মি করে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও রোগীর সাথে থাকা আত্নীয় স্বজনদের সাথে খারাপ ব্যবহার সহ গভীর রাতে তাদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, ও মালামাল চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে “মেডিল্যাব ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক” নামের এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে।

সচেতন মহলের প্রশ্ন, আজকে যেখানে মালামাল চুরি হচ্ছে কালকে যে সেখানে নবজাতক চুরি হবেনা তার কি নশ্চিয়তা আছে? 
এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার (৩ফেব্রুয়ারি) বিকালে ওই ক্লিনিকের পরিচালক আবু সাইদকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিলেও মিমাংসার স্বার্থে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে গত বুধবার (৫ফেব্রুয়ারি) বুধবার দুপুরে ওই ক্লিনিকে গিয়ে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার শিমুলদাইড় গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে সাকিল(১৫) কে অ্যাপেন্ডিসাইটিস রোগের অপারেশনের জন্য গত ২৪ জানুয়ারি ভর্তি করা হয় শেরপুরের মেডিল্যাব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। মাত্র ৪ হাজার টাকায় রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে- এমন  প্রলোভন দেখিয়ে রোগীকে ভতির্র ব্যবস্থা করেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। এদিকে ওই রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে পূর্বের চুক্তি ভঙ্গ করে পুনরায় ৮ হাজার টাকা না দিলে অপারেশন হবেনা মর্মে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেন।

রোগীর স্বজনেরা চিকিৎসার স্বার্থে রাজি হলে অস্ত্রপচার সর্ম্পূন্ন করা হয়। অপরদিকে ওই রোগী ভর্তির ১০ দিনেও সুস্থ না করে অতিরিক্ত বিল আদায়ের জন্য রোগীকে ছাড়পত্র দিলেও স্বজনেরা টাকা পরিশোধ না করায় রোগীকে জিম্মি করেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া ওই রোগীর সাথে চুক্তির টাকা ব্যতিত অতিরিক্ত বিল বাবদ সার্জন ফি ৮ হাজার, অজ্ঞান ডাক্তার ফি ৩হাজার, ডিউটি ডাক্তার ফি ৪ হাজার, মেডিসিন ৬হাজার ৫’শ, সার্ভিস চার্জ ৩ হাজার ২’শ টাকা মিলে ২৪ হাজার ৭’শ টাকা বিল ভাউচার হিসেবে দাবী করে। এতে রোগীর স্বজনেরা দিতে রাজী না হওয়ায় ওই রোগীকে ক্লিনিক থেকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছেনা অভিযোগ করেন রোগীর মা ও নানী। এছাড়া ওই রোগী সহ অন্য ২টি কেবিনের রোগী যথাক্রমে- মোছা: দুনিয়া খাতুন ও আছমা খাতুনের সাথে থাকা তাদের স্বজনদের দুইটি মোবাইল সেট, নগদ ১৪ হাজার টাকা ও অন্যান্য মালামাল চুরি হয়েছে বলে রোগীর স্বজনেরা জানায়।

এ ব্যাপারে মেডিল্যাব ক্লিনিকের পরিচালক আবু সাঈদ বলেন, রোগীর স্বজনদের মালামাল চুরি হয়েছে ঘটনাটি সত্য। ইতিপূর্বে এরকম চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে রোগীকে চুক্তির বাইরে কোন অতিরিক্ত অর্থ দাবী করা হয়নি। তাছাড়া রোগীকে ছেড়ে দেয়া ও অতিরিক্ত বিল নিয়ে থানায় একটি মিমাংসা বৈঠক রয়েছে।এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোঃ গওসুল আজিম চৌধুরী বলেন, ক্লিনিকের কোন অনিয়মের তথ্য আমার কাছে আসেনি। তবে ওই ক্লিনিক গুলোর কনো অনিয়মের খবর পেলেই ব্যাবস্থা নেয়া হবে।