![logo](https://dailychandnibazar.com.bd/assets/importent_images/logo.png)
বর্তমান শতাব্দীর সবচাইতে আতংকের নাম করোনা। সম্প্রতি চীনের উহান প্রদেশ থেকে অতি ক্ষুদ্র কভিড ১৯ নামক এক করোনা ভাইরাসের সাথে পরিচয় ঘটে বিশ্ববাসীর। কিছু দিনের মধ্যেই অদৃশ্য জীবানুটি তার স্বভাব ও ক্ষমতা সম্পর্কে জানান দেয়। যার ফলশ্রুতিতে পৃথিবী আজ বিপন্ন! চর্মচোঁখে অদৃশ্য এ ভাইরাসটির ওজন এবং আয়তনের পরিমাপ না করা গেলেও বস্তুত মানব সমাজকে সাভাবিক জীবন যাপনে মারাত্বক বাঁধা সৃষ্টি করে চলেছে।তাই মানব জাতি ঘরে অবস্থান নিয়ে, অধিক সচেতন ও সতর্কতার মধ্য দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের যুদ্ধ শুরু করেছে।ভাইরাসটি নাক,মুখ ও চোঁখ দিয়ে মানব দেহের ফুসফুসে সংক্রমন করে। ফলে তীব্র শ্বাস কষ্টে লক্ষ লক্ষ মানুষ করোনার কাছে পরাজিত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে
বাংলাদেশেও যখন ক্ষুদ্র এ ভাইরাসটি ভয়ানক আক্রমন শুরু করেছে, তাই করোনা মহামারি ঠেকাতে সরকার জনগনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে দেশব্যাপি ২৫ মার্চ থেকে লক ডাউন ঘোষনা করেছে।অফিস আদালত,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,গন পরিবহন,শপিং মল,দোকান পাট বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।ফলে দীর্ঘ সময় ঘর থেকে বের হতে না পারা সমাজে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষগুলি কর্মহীন ও বেকার হয়ে পড়েছে। নিম্নবিত্তের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও পড়েছে চরম বিপাকে। দেখা দিয়েছে খাদ্য সঙ্কট। সরকারের আন্তরিক সাহায্যের পাশাপাশি বিভিন্ এনজিও , সামাজিক সংগঠন ও সামর্থবান উচ্চবিত্তরাও সহযোগীতার হাত প্রসারিত করেছে।
করোনার অমানবিক সংক্রমনের দরুন মানুষের হাহাকারের ধ্বণি গগন বিদারী হয়ে মানব হৃদয়ে প্রভাব ফেলছে। তাইতো সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এমনকি অনেক কিশোর কিশোরী ও শিশু মনেও জেগে উঠছে মানবিকতা। ইতোমধ্যে দেশের অনেক জেলায় দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে সরল মনের শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের অনুপম সহানুভ’তির উদারতা।
তাইতো দয়া, উদারতা ও মানবতার পথ ধরেই গত ২৩ মার্চ জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নিকট ১০০শত প্যাকেট সেমাই চিনি হস্তান্তর করেছে মানবিকতার ফেরিওয়ালা ক্ষুদে এক শিক্ষার্থী। খবর নিয়ে জানা যায় শান্তিনগর নিবাসী জয়পুরহাট সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী পূর্ণতা সাহা। ১২বছর বয়সী পূর্ণতার বাবা মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপনা পেশায় কর্মরত। বর্তমানে সুমন কুমার সাহা জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য।
এমন মানবিক চিন্তা কেন মাথায় এলো? প্রশ্ন করা হলে উত্তরে পূর্ণতা সাহা জানায়- বাবার কাছে প্রতিদিন সাহায্য নিতে আশা অসংখ্য মানুষ জনের করুণ আর্তনাদ দেখে বাবাকে বেশি বেশি সহযোগীতা করার কথা বলতাম। কারন আমার কাছে খুব কষ্ট লাগত । সেজন্য নিজের শিক্ষা উপবৃত্তির জমানো টাকা ও জন্মদিনের অনুষ্ঠানের টাকা বাঁচিয়ে সেই টাকায় ঈদ উপলক্ষে কিছু মানুষকে সহযোগীতার প্রস্তাব দেই বাবার কাছে। বাবা ও মা রাজি হওয়াতে সামান্য এই উপহারগুলি দিতে পেরেছি। তাই আমার কাছে তাই খুব ভাল লাগছে।
মেয়ের এমন মহৎ কমর্ কেমন লাগছে বাবার কাছে জানতে চাইলে, প্রভাষক সুমন সাহা জানান- অনেক অনন্দিত ও অন্তরাত্মা গবির্ত অনুভব হচ্ছে। সেই সাথে তিনি তার আদরের মেয়ের জন্য দেশবাসীর কাছে আশীর্বাদ প্রার্থণা করেছেন।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন চন্দ্র রায় জানিয়েছেন ইতিমধ্যে ঈদ উপহার সামগ্রী গুলো গরীব অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন