বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে ১৩ ঘণ্টা পর সুমন ব্যাপারি নামে একজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারের পর তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন ফায়ারসার্ভিসের কর্মীরা। সুমনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীর আব্দুল্লাহপুরে। সোমবার (২৯ জুন) রাত ১০টার দিকে ডুবুরিরা টিউবের মাধ্যমে লঞ্চটি ওপরে তোলার চেষ্টা করে। লঞ্চটির একাংশ যখন ওপরে উঠে আসছিল ঠিক তখনই সুমন ব্যাপারি লঞ্চ থেকে বের হয়ে আসেন।
তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। ডুবুরিরা তাকে লাইফ জ্যাকেটে ঢেকে এবং মেসেজ করে তার শরীর গরম করার চেষ্টা করেন। এরপর সে চোখ মেলে তাকান। এরপর চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে পানির নিচে সাধারণত ডুব দিয়ে কতক্ষণ থাকা যায়- এমন প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, সাধারণত পানির নিচে ডুবে গেলে যে কোনো মানুষ এক মিনিট থেকে সর্বোচ্চ দেড় মিনিটের মধ্যে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়াটাই স্বাভাবিক ঘটনা।
তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, ২৯ জুন সকালবেলা রাজধানীর সদরঘাটের অদূরে ময়ূর-২ নামে বড় জাহাজের ধাক্কায় বুড়িগঙ্গা নদীর তলদেশে ডুবে যাওয়া মর্নিং বার্ড নামক লঞ্চের যাত্রী সুমন বেপারি ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় কীভাবে বেঁচে ছিলেন। রাত আনুমানিক ৯টা৩০ মিনিটে ডুবুরিরা যখন টিউবের মাধ্যমে লঞ্চটি ওপরে তোলার চেষ্টা করছিলেন এবং লঞ্চটির একাংশ ওপরে উঠে আসছিল ঠিক তখনই সুমন বেপারি লঞ্চ থেকে বেরিয়ে আসেন।
তার উদ্ধারের ঘটনায় কেউ বলছেন, 'রাখে আল্লাহ মারে কে?,' কেউ বলছে, 'নিশ্চয়ই এর পেছনে বৈজ্ঞানিক কোনো ব্যাখ্যা রয়েছে।' সুমন বেপারি কেন কীভাবে বেঁচে থাকলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিস মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় মর্নিং বার্ড নামক ছোট্ট লঞ্চটি কয়েক সেকেন্ড সময়ের মধ্যে পানিতে তলিয়ে যায়।
লঞ্চটি পানির নিচে উল্টে যাওয়ায় বাতাস আটকে থাকে অর্থাৎ এয়ার পকেট তৈরি হয়। সম্ভবত সুমন বেপারি যেখানে অবস্থান করছিলেন সেখানে পানি প্রবেশ করেনি এবং সুমন বেপারি এয়ার পকেট থেকে অক্সিজেন নিয়েই বেঁচে ছিলেন। এটাই একমাত্র কারণ, এ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো কারণ নেই।
দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন