করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এবার অনলাইনে কোরবানির গরু কেনা-বেচায় উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। বুধবার (৮ জুলাই) সচিবালয় কাভার করা সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সদস্যদের জন্য করোনা সংক্রমণ রোধে সুরক্ষা সামগ্রী হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সিনিয়র সচিব এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে অন্যান্য সময় যেভাবে হাটবাজার বসে এবার সেভাবে ট্রাডিশন্যালি হাটবাজার বসবে না। রেললাইনের পাশে তো বসবেই না, এবার গরুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষকে মাস্ক পড়তে হবে, হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করতে হবে। সামনে সাবান-পানি থাকবে। গরুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা সামাজিক দূরত্ব মেনে ক্রয়-বিক্রয় করবে। এভাবে আমরা একটা সিস্টেমের মধ্যে দাঁড় করাতে চেষ্টা করছি।’
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘আমরা সবচেয়ে বেশি উৎসাহিত করছি অনলাইনে গরু কেনার জন্য। গরুর মালিক যাতে ঘরে বসে গরুটি বিক্রি করতে পারেন। যিনি কিনবেন তিনি যাতে তার (বিক্রেতার) বাসায় যেতে পারেন। টাকা-পয়সা ক্রেডিট কার্ড হোক, বিকাশ হোক- এভাবে যদি লেনদেন করা যায় তবে ভালো। এটাই আমরা সব জায়গায় প্রোমোট করছি।’ ‘আরেকটি জিনিস করছি যাতে সিটি করপোরেশন এলাকায়, নির্দিষ্ট জায়গায় যাতে গরুগুলো জবাই হয়। সিটি করপোরেশন গরু জবাইয়ের দায়িত্ব নেবে। গরু জবাইয়ের পর বাড়িতে ওনারা পৌঁছে দেবেন, এখানে কাউকে আসতে হবে না, এজন্য পারিশ্রমিক প্রদান করতে হবে। এই বিষয়গুলো আমরা ভেবেছি। যেখানে সেখানে গরুর হাট না বসানোর জন্য আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এগুলো আমাদের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্যারা নিজেরা এ বিষয়ে সভা করবে। পরে আমরা আবার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা সবাইকে জানিয়ে দেব।’ডেঙ্গুর বিষয়ে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘এডিস মশা রোধের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ হলো মানুষের সচেতনতা, আর ১০ শতাংশ হল সিটি করপোরেশনের কাজ। সেই অ্যাওয়ারনেসের জন্য প্রতিদিনি টেলিভিশন ও রেডিওতে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। যেসব ভবনে জমানো পানি রয়েছে এবং সেখানে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে, জরিমানা করা হচ্ছে, সতর্ক করা হচ্ছে।’
‘করোনার আতঙ্কের মধ্যে যদি আবার ডেঙ্গু আসে তবে আতঙ্ক আরও বেড়ে যাবে। তাই এভাবে এটা আমরা কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছি। জুলাই মাস এ পর্যন্ত এখনও ডেঙ্গুর প্রকোপ লক্ষ্য করিনি।’ করোনা সংক্রমণের মধ্যে বিএসআরএফকে সুরক্ষা সমগ্রী বিতরণের বিষয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘সাংবাদিকরা যেহেতু ফ্রন্ট লাইনে কাজ করে, সব জায়গায় গিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করেন। এজন্য বিসিএস ৮৫ ফোরামের পক্ষ থেকে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করছি।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তপন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদের কাছে মাস্ক তুলে দেন বিসিএস ৮৫ ফোরামের সভাপতি ও সাবেক সচিব মো. মোশাররফ হোসেন এবং সহ-সভাপতি হেলালুদ্দীন আহমদ।এছাড়া বিসিএস ৮৫ ফোরামের পক্ষ থেকে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ও আল-মারকাজুল ইসলামকে সুরক্ষা সামগ্রী ও অর্থের চেক হস্তান্তর করা হয়।
দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন