শেরপুরের আকাশে উড়ছে দিনে-রাতে সখের ঘুড়ি | Daily Chandni Bazar শেরপুরের আকাশে উড়ছে দিনে-রাতে সখের ঘুড়ি | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১০ জুলাই, ২০২০ ০০:০৫
শেরপুরের আকাশে উড়ছে দিনে-রাতে সখের ঘুড়ি
শুভ কুন্ডু, শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ

শেরপুরের আকাশে উড়ছে দিনে-রাতে সখের ঘুড়ি

চলছে এলইডি বাতি স্থাপন করা ডিজিটাল ঘুড়ি আকাশে উড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি। ছবিটি গতকাল সন্ধা ৭টা ১০ মিনিটে শেরপুর ডিজে হাইস্কুল খেলার মাঠ থেকে তোলা। শুভ কুন্ডু, চাঁদনী বাজার।

সারা দেশজুরে চলছে সংকটময় করোনা কাল। চরপাশে অভাব-অনটন আর করোনার শঙ্কায় দিন কাটছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মানুষজনের। রাজধানীসহ বাহিরে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করা মানুষেরাও ফিরেছেন ঘরে। আর ঠিক এমন সময়ে শেরপুর শহর এবং উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ মেতে উঠেছে ঘুড়ি উৎসবে। নীল আকাশে উড়িয়ে চলেছে সখের ঘুড়ি।
তবে রাতের আকাশে ঘুড়ি উড়ানোর এই দৃশ্য ভিন্নধর্মী এক মাত্রা যোগ করেছে। হঠাৎ কেউ দেখলে আকাশের তারা বা ড্রোন ভেবে ভুল করতে পারেন। বিভিন্ন আকৃতির এসব ঘুড়ির মধ্যে এলইডি বাতি স্থাপন করে উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে আকাশে। দিনের পাশাপাশি রাতের আধাঁরেও ঘুড়ি উড়ানোর এই দৃশ্য চোখে পড়েছে শেরপুর শহরসহ উপজেলার প্রায় সব এলাকাগুলোতে। বিভিন্ন বাড়ির ছাদে ছাদেও চলছে ঘুড়ি উৎসব। দেখে মনে হয় ফিরে এসেছে সেই ঘুড়ি উড়ানো বিকেল। করোনার লকডাউনে ঘরবন্দি শিশু কিশোরদের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সের মানুষ মেতে উঠেছে ঘুড়ি উৎসবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘড়িতে তখন সন্ধা ৭ টা ১০ মিনিট। শেরপুর ডিজে হাইস্কুল মাঠে ঘুড়ি উড়ানোর সময় উৎসব নামের এক কিশোরের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনার লকডাউনে ঘরে থাকতে থাকতে একঘেয়েমি এসে গেছে তাদের। পাশাপাশি বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকায় লম্বা ছুটি মিলেছে। তাই গত দুই সপ্তাহ ধরে তারা ঘুড়ি উৎসবে মেতেছে।শেরপুর শহরের ডিজে হাইস্কুল খেলার মাঠসহ বারোদোয়ারী হাটখোলা, করতোয়া নদীর ঘাট, মাদ্রাসা মাঠ, শেরপুর কলেজ মাঠসহ উপজেলাার প্রায় সব এলাকার আকাশেই উড়ছে শত শত ঘুড়ি। রাতে আকাশের দিকে হঠাৎ তাকালে মনে হয় আকাশের তারাগুলো নিচে নেমে এসে খেলা করছে। স্থানীয়রা বলছেন, আকাশে এমন ঘুড়ি উড়ানো, দিনে দেখলেও রাতে দেখেননি তারা। আগে এসব এলাকায় কেবল দিনের বেলাতে উড়ানো হতো ঘুড়ি।
রাতে ঘুড়ি উড়ানোর দৃশ্য এই প্রথম দেখছেন তারা। ঘুড়িগুলো মাটি থেকে কয়েক হাজার ফুট উচ্চতায় শূন্যে ভাসছে। তাতে লাল নীল বাতি জ¦লছে নিভছে। শখের ঘুড়ির নাটাই ধরে রেখেছে শিশু কিশোররা। চারপাশে হালকা বাতাস। নিরব প্রকৃতির বুকে ঘুড়ি উড়ানোর মনোহর এই দৃশ্য যে কোনো মানুষকেই মুগ্ধ করবে।শেরপুর পৌর ৫নং ওয়ার্ডের যুবক মো: মনিরুজ্জামান মনি ও ৪নং ওয়ার্ডের লতিফুল বাড়ি লাবলু বলেন, আমরা ব্যবসা করি। করোনার কারণে অলস সময় কাটছে। তাই সন্ধার পরে বন্ধু বান্ধব মিলে ঘুড়ি উড়ানোর উদ্যোগ নেই। যদিও মনে শান্তি নেই তবুও নাটাই হাতে নিলে মনে প্রশান্তি আসে। একজন দুজন করে এখন অনেকেই অংশগ্রহন করছে। দীর্ঘদিন পরে এভাবে ঘুড়ি উড়ানোর সুযোগ পেলাম। সময়টা ভালোই কাটছে।
বিভিন্ন আকৃতির এসব ঘুড়ি বাজারের বিভিন্ন দোকানে আনাচে কানাচে পাওয়া যাচ্ছে যা আগে দেখা যায়নি। এসব ঘুড়ির মধ্যে রয়েছে চিল ঘুড়ি, ডোল ঘুড়ি, ফরিং, ব্যঙ ঘুড়ি সহ আরো বিভিন্ন আকৃতির। শেরপুর বৈকাল বাজারস্থ “ওয়ান টু নাইনটি নাইন প্লাস” থেকে ব্যবসায়ী অশোক সরকার জানান, সাধারণ ঘুড়ি ও বিভিন্ন আকৃতির এসব ঘুড়ি ৩০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। শেরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: লিয়াকত আলী সেখ চাঁদনী বাজারকে বলেন, করোনায় ক্লান্ত শেরপুর বাসীর এই ঘুড়ি উড়ানোর দৃশ্য সত্যিই মনমুগ্ধকর। এভাবেই আর কিছুদিন কষ্ট করে ঘরে অবস্থান করতে হবে এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আশা করছি খুব শীঘ্রই আমরা এই বিপদ থেকে মুক্তি পাবো।
দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন