মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে ১টি গ্রাম কাউনিয়ায় তিস্তা নদী গিলে খাচ্ছে ফসলী জমি আর বাড়ি ঘর | Daily Chandni Bazar মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে ১টি গ্রাম কাউনিয়ায় তিস্তা নদী গিলে খাচ্ছে ফসলী জমি আর বাড়ি ঘর | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৭ জুলাই, ২০২০ ২০:০৯
মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে ১টি গ্রাম কাউনিয়ায় তিস্তা নদী গিলে খাচ্ছে ফসলী জমি আর বাড়ি ঘর
আশ্বাসের বাণী নিরবে কাঁদে
সারওয়ার আলম মুকুর, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে ১টি গ্রাম
কাউনিয়ায় তিস্তা নদী গিলে খাচ্ছে ফসলী জমি আর বাড়ি ঘর

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের পাশ দিয়ে প্রবাহিত খরস্রতা তিস্তা নদী স্বাধীনতার পর থেকে খনন না করায় প্রতি বছর গিলে খাচ্ছে ফসলী জমি আর বাড়ি ঘর। ইতো মধ্যে কাউনিয়ার মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে সুভাঘাট শনশনাটারী নামের একটি মৌজা। প্রতিবছর বন্যা আর নদী ভাঙ্গনে দিশে হারা মানুষ গুলোকে নদী ভাঙ্গন রোধে আশ্বাসের বানী শোনায় মন্ত্রী, এমপি, চেয়ারম্যান আর প্রশাসন। কাজের কাজ কিছুই হয় না। নদী ভাঙ্গনে ফসলী জমি আর বাড়ি ভিটা হারিয়ে পথে বসে যাচ্ছে শত শত মানুষ। তাদের দুঃখ ভাগ করে নেয়ার কেউ নেই।

ইতোমধ্যে উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নের দেড়শতাধিক বাড়ি ভিটাসহ প্রায় ২০০ হেক্টর ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। নদী ভাঙ্গন এলাকা এখনও কোন কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করেনি এবং নদী ভাঙ্গন রোধে কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে আতংকে দিন কাটাচ্ছে নদী তীরবর্তি মানুষেরা। কাউনিয়া-পীরগাছা এলাকার সাংসদ বর্তমান বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি নদী ভাঙ্গন রোধে গার্ড ব্যাংক নির্মাণ ও নদী খননের আশ্বাস প্রদান করেছিলেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এলাকা পরিদর্শন করে একই কথা বলেগেছে। সর্বশেষ গাজির হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষ প্রতিমন্ত্রী নদী ভাঙ্গন থেকে মানুষ কে রক্ষা করার আশ্বাস প্রদান করেগেছেন। সেই আশ্বাসের বাণী আজ নিরবে কাঁদে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ নদী ভাঙ্গন রোধে কতবার মানববন্ধন, স্বারকলিপি প্রদানসহ উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তাদের দারে দারে ঘুরে ছেন তার হিসেব নাই। তাদের ভাগ্যে ফসলী জমি আর ভিটে হারানো ছারা এগুলো রক্ষায় কিছুই জোটে নাই। সরেজমিনে বালাপাড়া ও টেপামধুপুর  ইউনিয়নের চর গদাই, পাঞ্জরভাঙ্গা, নিজপাড়া, ঢুসমারা, তালুকশাহবাজ, হরিচরনশর্মা, চরগনাই, বিশ্বনাথ, হয়তখাঁ গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে প্রায় ২শতাধিক বাড়ি ও ২শ হেক্টর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বালাপাড়া ইউনিয়নে নদী গর্ভে বাড়ি ও জমি বিলীন হয়ে যাওয়া নিপেন, সুশিল মেকার সহ অনেকে জানান, সবাই শুধু আসে দেখে আশ্বাস দেয়, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।

বালাপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, তার এলাকায় প্রায় শতাধিক বাড়ি ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে, আমরা তালিকা তৈরী করছি। টেপামধুপুর ইউপির চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, তার এলাকায় একশোর উপরে বাড়ি-ঘর ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েগেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। নদী ভাঙ্গনের শিকার টুরু ঘাটিয়াল জানান, তার বাড়িসহ ২৭ দোন জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে সেই সাথে নদী পাড়ের শতশত মানুষের বাড়ি জমি নদী গর্ভে গেলেও তাদের খবর কেউ রাখে না।

নজরুল ইসলাম জানান, ইতি মধ্যে তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে সুভাঘাট শনশনাটারী নামের একটি গ্রাম কাউনিয়ার মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেলেও নদী ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করায় আরও প্রায় ১১টি গ্রাম হুমকির মধ্যে রয়েছে। নদী ভাঙ্গন রোধে এলাকার মানুষ তিস্তা সড়ক সেতু থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত গার্ড ব্যাঙ্ক নির্মাণ ও নদী খননের জন্য বানিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুন্শি এমপি কে বহুবার আবেদন নিবেদন, মানব বন্ধন করেও কোন কাজ হয়নি। নদী ভাঙ্গন রোধে এখনই ব্যবস্থা গ্রহন না করলে উপজেলার ১১টি গ্রাম তিস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন