দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ এবং এতে মৃত্যু বাড়ছেই। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে আরও ৩৮ জনের প্রাণ। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই হাজার ৮৭৪ জনে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও দুই হাজার ৫২০ জন। ফলে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল দুই লাখ ২১ হাজার ১৭৮ জনে।শনিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি পিসিআর-ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নয় হাজার ৬১৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং পরীক্ষা করা হয় ১০ হাজার ৪৪৬টি নমুনা। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ১১ লাখ এক হাজার ৪৮০টি। নতুন পরীক্ষা করা নমুনায় করোনা ধরা পড়েছে দুই হাজার ৫২০ জনের। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল দুই লাখ ২১ হাজার ১৭৮ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৮ জনের। ফলে ভাইরাসটিতে মোট মারা গেলেন দুই হাজার ৮৭৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও এক হাজার ৪১৪ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ২২ হাজার ৯০ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৩৮ জন মারা গেছেন তাদের পুরুষ ২৯ এবং নারী নয়জন। এদের মধ্যে ত্রিশোর্ধ্ব ছিলেন তিনজন, চল্লিশোর্ধ্ব ছয়জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব সাতজন, ষাটোর্ধ্ব আটজন, সত্তরোর্ধ্ব নয়জন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী চারজন এবং শতবর্ষী একজন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের চারজন, রাজশাহী বিভাগের আটজন, খুলনা বিভাগের চারজন, সিলেট বিভাগের একজন, রংপুর বিভাগের একজন ও ময়মনসিংহ বিভাগের তিনজন ছিলেন।
গতকালের তথ্য
গতকাল শুক্রবারের (২৪ জুলাই) বুলেটিনে বলা হয়, করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১২ হাজার ২৭টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয় আরও দুই হাজার ৫৪৮ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্ত কমলেও বেড়েছে মৃত্যু। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয়, ৩০ জুনের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড চার হাজার ১৯ জনের, যা জানানো হয় ২ জুলাইয়ের বুলেটিনে।
শনাক্ত, সুস্থতা ও মৃত্যুর হার
শনিবারের বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ১২ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২০ দশমিক ০৮ শতাংশ। আর রোগী শনাক্ত তুলনায় সুস্থতার হার ৫৫ দশমিক ২০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।বুলেটিনে প্রতিদিনের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত ও সুস্থ থাকতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান ডা. নাসিমা।
বৈশ্বিক পরিস্থিতি
গোটা বিশ্বকে এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে করোনাভাইরাস। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন এক কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছয় লাখ ৪৩ হাজারের বেশি। তবে সুস্থ হয়েছেন সাড়ে ৯৭ লাখের মতো রোগী। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। আর এতে প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।
দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন