![logo](https://dailychandnibazar.com.bd/assets/importent_images/logo.png)
আমন চাষের দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না বগুড়ার চাষিদের। ঝুমবৃষ্টি আর বন্যার সাথে লড়ছে বগুড়ার তিন উপজেলার চাষিরা। শ্রবাণ, বন্যার সাথে যোগ হয়েছে করোনা ভাইরাস। এসব নানা দুর্ভোগ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে জেলার আমন চাষিরা। ১২ উপজেলার মধ্যে তিন উপজেলা বন্যাকবলিত বলে আমনের ফলনে লক্ষ্যমাত্রা পুরন না হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষি কর্মকর্তারা।
জানা যায়, চলতি শ্রাবনের বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আমন ধান চাষে ঝুঁকে পড়ার কথা ছিল চাষিদের। কিন্তু বন্যা ও করোনায় বেশ ঢিমে তালে চলছে আমন চাষ। বন্যায় ক্ষতিরমুখে পড়তে পারে জেলায় আমন চাষ। জেলায় ১২টি উপজেলার মধ্যে পুরো বন্যায় ঢুবে আছে সারিয়াকান্দি উপজেলা। শুক্রবার ৭ আগস্ট এই উপজেলায় যমুনা নদীতে পানি কমে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর সাথে অর্ধেক এলাকা বন্যায় ডুবছে জেলার সোনাতলা ও ধুনট উপজেলা। এছাড়া জেলার সদর উপজেলা, শেরপুর, গাবতলী ও শিবগঞ্জ উপজেলার নদীপাড়ের নিম্নাঅঞ্চল বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে আরো বেশ কয়েক হাজার হেক্টর জমি। গত মাসের ২৫ জুন থেকে বন্যার পানি দেখা দেয়। এক মাস পার হওয়ার পরেও বন্যার পানি নামছে না। সে কারণে আমন চাষ নিয়ে আমন চাষিদের সাথে শঙ্কিত হয়ে আছে জেলার কৃষি কর্মকর্তারা।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, উত্তরের জেলাগুলোর মধ্যে বগুড়া একটি কৃষি প্রধান এলাকা। ধান, পাট, সবজি, মরিচ, ভুট্টা, আলু, সরিষার জন্য বগুড়া কৃষি ক্ষেত্রে বরাবরই অবদান রাখছে। তবে এবার আমন চাষের জন্য তিনি উপজেলায় সঙ্কট রয়েছে। তারপরেও জেলায় এবার আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৩৫ হেক্টর। চাল আকারে ফলন ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৪ মেট্রিক টন। আর গত বছর চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৩৫ হেক্টর। চাল আকারে ফলন ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৪৩০ মেট্রিক টন। গত বছর একই পরিমান জমিতে আমন চাষ করে ফলন বেশি পাওয়া গেলেও এবছর বন্যার কারণে ফলন লক্ষ্যমাত্রা কম ধরা হয়েছে। কিন্তু তারপরও শঙ্কিত হয়ে আছে কৃষি বিভাগ। বন্যা দির্ঘস্থায়ি হলে সময়মত আমন চাষ করতে না পারলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়া নিয়ে চিন্তায় পড়বেন কৃষি কর্মকর্তারা। এবছর আমনের ক্ষেত ও বীজতলাসহ প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমি ক্ষতি হয়ে আছে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলায় কৃষকেরা বন্যার কারণে এখনো পুরোদমে আমন চাষে নামতে পারেনি। দুই একটি উচুঁ স্থানে আমন চাষ হলেও বন্যার কারণে অর্ধেক উপজেলায় এখনো চাষ হয়নি। উপজেলায় আমনের বীজ তলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে ৮০ আটি বীজের দাম ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বগুড়ার ৯টি উপজেলায় বন্যার তেমন বাধা না থাকায় আমন চাষ শুরু হয়েছে। বগুড়া সদরের মাটিডালি, সাবগ্রাম, শ্যামবাড়িয়া, দ্বিতীয় বাইপাস সড়ক, বারপুর ফুলবাড়ি এলাকাসহ বেশ কিছু এলাকায় আমন চাষিদের মাঝে ব্যস্ততা দেখা গেছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ সহকার কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানান, বগুড়ার কয়েকটি এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যা ক্ষতিগ্রস্থ জমি ও কৃষকের তলিকা তৈরী করা হচ্ছে। বন্যার পানি দ্রুত নেমে গেলে আমন চাষের কোন ক্ষতি হবে না। বগুড়ায় এখনো এক মাসের বেশি সময় ধরে বন্যা রয়েছে। চলতি বছর আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৩৫ হেক্টর। চাল আকারে ফলন ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৪ মেট্রিক টন। জেলার অন্যান্য উপজেলায় বন্যা না থাকায় পুরো দমে আমন চাষ হচ্ছে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন