ধুনটে ৫ বছর ধরে লোহার শিকলে বন্দি যুবক ! | Daily Chandni Bazar ধুনটে ৫ বছর ধরে লোহার শিকলে বন্দি যুবক ! | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট, ২০২০ ২৩:৪৫
ধুনটে ৫ বছর ধরে লোহার শিকলে বন্দি যুবক !
ইমরান হোসেন ইমন, ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি:

ধুনটে ৫ বছর ধরে লোহার শিকলে বন্দি যুবক !

বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের কাশিয়াহাটা গ্রামের আব্দুল মান্নান (৩৫) নামে এক যুবককে প্রায় ৫ বছর ধরে লোহার শিকলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সংসারে অভাব-অনটন থাকায় চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না তার। এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দীর্ঘ সময় শিকলে বন্দি থাকায় তার স্ত্রী ও দুই মেয়েও এখন অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। বুধবার ছবিটি তার বাড়ির উঠান থেকে তোলা হয়েছে।

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় প্রায় ৫ বছর ধরে লোহার শিকলে বন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে আব্দুল মান্নান (৩৫) নামে এক যুবক। মানসিক ভারসাম্যহীন এই যুবককে নিজ বসতবাড়ির উঠানে শিকলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। সংসারে অভাব-অনটন থাকায় চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না তার। এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দীর্ঘ সময় শিকলে বন্দি থাকায় তার স্ত্রী ও দুই মেয়েও এখন অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে।     

জানাগেছে, ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের কাশিয়াহাটা গ্রামের মৃত রহমত আলীর ৬ ছেলের মধ্যে আব্দুল মান্নান ৫ম। সে ছোট বেলা থেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকতো। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে এসএসসি পরীক্ষার আগেই পড়ালেখার ইতি টানতে হয় তাকে। এরপর রঞ্জনা খাতুন নামে এক নরীকে বিয়ে করে আব্দুল মান্নান। তাদের দাম্পত্য জীবনে ১২ বছর ও ৬ বছর বয়সের দুই কণ্যা সন্তান রয়েছে।    

আব্দুল মান্নানের স্ত্রী রঞ্জনা খাতুন জানান, দীর্ঘ ৯ বছর ধরে তাঁর স্বামীর মাথায় নানা মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এরকারনে তাকে বিভিন্ন কবিরাজ ও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করেও সুস্থ করা যায়নি। পরবর্তীতে যখন মানসিক সমস্যা বেশি হয় তখন তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তারদের পরিচর্যায় অবস্থার একটু উন্নতি হলে তাকে আবার বাড়ি ফিরে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু বাড়ি আসার পর সে আবারও মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে।

তার মানসিক সমস্যা বৃদ্ধি পেলে ঘরের সব কিছু ভেঙ্গে ফেলে এবং কাউকেই চিনতে পারেনা। তাই বাধ্য হয়ে তাকে ৫ বছর ধরে শিকলে বেঁধে রেখেছি। আর্থিক সংকটের কারনে স্বামীর সু-চিকিৎসা করাতে না পেরে সে এখন ধাপেধাপে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।রঞ্জনা খাতুন আরো জানায়, তাঁত শ্রমিকের কাজ করে স্বামীর ঔষুধ ও সংসারের খরচ চালাতেন। কিন্তু করোনার কারনে তার তেমন কোন কাজ নেই। তাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি দীর্ঘ সময় শিকলে বন্দি থাকায় সন্তানদের নিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সেলিম বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন আব্দুল মান্নানের পরিবারকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সাধ্য অনুযায়ি সহযোগিতা করা হয়।ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, খোঁজ নিয়ে ওই শিকলে বন্দি ব্যক্তিকে চিকিৎসা সহ তার পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন