বগুড়ায় শীত বাড়ছে বাড়ছে রোগের প্রকোপ | Daily Chandni Bazar বগুড়ায় শীত বাড়ছে বাড়ছে রোগের প্রকোপ | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:৫৪
বগুড়ায় শীত বাড়ছে বাড়ছে রোগের প্রকোপ
এইচ আলিম

বগুড়ায় শীত বাড়ছে বাড়ছে রোগের প্রকোপ

হঠাৎ করেই যেন শীত ও কুয়াশা চেপে বসেছে বগুড়ায়। শীত যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে শীত জনিত ঠান্ডা রোগের প্রকোপ। জেলায় হড়ে এখন প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ জন শিশু, নারী ও বয়স্ক পুরুষ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে বগুড়া সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে দাবী করা হয়েছে, জেলায় শীত বাড়লেও এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। করোনা ভাইরাস থেকে সাবধান থাকতে গিয়ে শীতজনতি কারণে আক্রান্ত সংখ্যা এখনো স্বাভাবিক।

জানা যায়, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতল নামের দুটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। হাসপাতলের বহি:বিভাগে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রুগি আসেছেন ঠান্ডা জনিত কারনে। আর ভর্তি হচ্ছে জেলায় গড়ে ৪০ জন। ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্তের বড় সংখ্যা শিশুরা। এরপরে রয়েছে বয়স্ক নারী পুরুষ। চিকিৎসকরা বলছেন, বগুড়ায় এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। জেলায় শীত পড়ায় বা ডিসেম্বর মাসে বিগত দিনেও প্রায় ৪০ জনের মত করে শীতজনিত কারণে অসুস্থ হওয়োর রেকর্ড রয়েছে। প্রচন্ড শীতের কারেণ শিশু ও বয়স্কদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ^াসকষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর সোমবার পর্যন্ত শীতজনতি কারনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৪০ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। গত এক সপ্তহাহে জেলায় প্রায় ৩০০ জন চিকিৎসা নিয়েছে। তবে জেলায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। 

এদিকে, বগুড়া সুর্য উঠলেও কুয়াশায় ঢেকে থাকছে। দিনে শীত কম অনুভুত হলেও সন্ধ্যা থেকে বেশ শীত পড়ছে। সেই সাথে ঝিড়িঝিড়ি বৃষ্টির মত কুয়াশাও ঝড়ছে। শহরের মধ্যে কুয়াশার পরিমান কম হলেও শহরতলী ও গ্রামে বেশ কুয়াশার কুন্ডলী দেখা মিলছে। দূরের যাত্রীরেদর পরনের পোশাক কিছুটা ভিজে যাচ্ছে কুয়াশায়। শীতের কারণে শহরের ফুটপাত ও হকার্সসহ বিভিন্ন মার্কেটে শীতবস্ত্র বিক্রির হিড়িক পড়েছে। বেলা করে কুয়াশা থাকায় প্রতিদিনই তাপমাত্রার পারদ নিচের দিকে কমছে। নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলো জড়সড় হয়ে পড়েছেন। দিনের বেলাও থাকছে প্রচন্ডশীত। দুঃস্থ ও নিম্ন আয়ের শীতার্ত মানুষদেরকে শহরের স্টেশন এলাকায় খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে। 

বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সামির হোসেন মিশু জানান, শীতের কারণে মানুষের নিউমোনিয়া, সর্দ্দি, জ্বর, কাশি, আমাশয় রোগ দেখা দিতে পারে। এজন্য সাধারণ নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এসব রোগে ইতিমধ্যে ঠান্ডা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংবাদও পাওয়া যাচ্ছে। এর সাথে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ্যযোগ্যহারে। 

বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্রে জানানো হয়েছে, ১৪ ডিসেম্বর ২০৯টি নমুনা পরীক্ষা করে বগুড়ায় নতুন করে ২৮ জনের দেহে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। আর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে আকবর আলী (৬২)। এনিয়ে জেলায় মোট মৃত্যু হলো ২১৫ জনের। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১৯৮ টি নমুনা পরীক্ষায় ২৫ জন এবং টিএমএসএস মেডিকেল হাসপাতালে ১১ টি নমুনা পরীক্ষায় ৩ জনের পজিটিভ হয়। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ২৩৭ জন। মোট সুস্থ হয়েছে ৮ হাজার ৩৬১ জন।

বগুড়া জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বগুড়ায় শীতজনিত রোগের প্রকোপ কিছুটা বাড়লেও এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শীতকালে জেলায় শিশু, বৃদ্ধরা যেভাবে আক্রান্ত হয়ে থাকে সেটা এখনো হয়ে উঠেনি। গড়ে প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ জনের মত রুগি পাওয়া  যাচ্ছে। সেই হিসেবে গত এক সপ্তাতে ২৮০ বা ৩০০ জনের মত চিকিৎসা নিয়েছে। আউটডোরে কিছু রোগী আসছে যারা ঠান্ডা জনতি কারণে প্রাথমিক শ^াকষ্ট, ডায়রিয়া ও সর্দিতে আক্রান্ত হচ্ছে।। তিনি বলেন করোনা ভাইরাসের কারণে অনেকেই সচেতন থাকায় ঠান্ডা রোগে আক্রান্ত হার কম। এঠাড়া ফসলের ক্ষেতে ঘনকুয়াশার কারণে পিঁয়াজ, উঠতি আলুর ক্ষেত, শাকের ক্ষেত ভাল ফলনে প্রকৃতিক বাঁধার সৃষ্টি হতে পারে বলে চাষীরা শংকিত হয়ে পড়েছে। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন