কর্ম সংস্থানের নবদিগন্ত কাউনিয়ায় চরাঞ্চলের জাহাজ ঘোড়া গাড়ির ব্যাপক চাহিদা | Daily Chandni Bazar কর্ম সংস্থানের নবদিগন্ত কাউনিয়ায় চরাঞ্চলের জাহাজ ঘোড়া গাড়ির ব্যাপক চাহিদা | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ২ জানুয়ারী, ২০২১ ১৯:২৫
কর্ম সংস্থানের নবদিগন্ত কাউনিয়ায় চরাঞ্চলের জাহাজ ঘোড়া গাড়ির ব্যাপক চাহিদা
সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

কর্ম সংস্থানের নবদিগন্ত
কাউনিয়ায় চরাঞ্চলের জাহাজ ঘোড়া গাড়ির ব্যাপক চাহিদা

উত্তরাঞ্চলের উন্নয়ন বঞ্চিত উপজেলা হিসেবে পরিচিত রংপুরের কাউনিয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরের জাহাজ হিসেবে ঘোড়া গাড়ি ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। চরাঞ্চলে ঘোড়া গাড়ির ব্যবহারের ফলে কর্র্র্ম সংস্থানের নব দিগন্তের সূচনা করেছে।সরেজমিনে উপজেলা সদররের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তিস্তা নদী বেষ্টিত ২২টি চরাঞ্চলের প্রাননাথচর, চর নাজিরদহ, চর সাব্দি, গোপিডাঙ্গা, গদাই চর, আরাজি হরিশ্বর, তালুকশাহবাজ, ঢুসমারা, চর গনাই, হরিচরন শর্মা, চর বিশ্বনাথ, হয়বতখাঁ চর, টাপুর চর, সদরা তালুক, চর আজমখাঁ ঘুরে দেখাগেছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র বাহন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে পরিবেশ বান্ধব ঘোড়ার গাড়ি। বালু আর মরা তিস্তার শাখা নদীর রাস্তাসহ কাঁদা রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রলী, ট্রাক যেতে পারে না সেই সকল রাস্তার জনপ্রিয় বাহন হিসেবে ঘোড়া গাড়ির কদর বেড়েছে। উপজেলার সিংহ ভাগ রবি শস্য, ধান, পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, ডাল এসব অর্থকারী ফসল চরাঞ্চলেই বেশী উৎপাদন হয়। কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটে বাজারে নিয়ে যেতে না পারার কারনে কম দামে ফড়িয়া দালালদের কাছে বাধ্য হয়েই বিক্রয় করতে হতো। বর্তমানে ঘোড়ার গাড়ি চালু হওয়ায় কৃষক এখন তার উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে গিয়ে ন্যায্য দামে বিক্রয় করতে পাচ্ছে। কাউনিয়ায় এ সব চরাঞ্চলে প্রায় ৩ শতাধিক ঘোড়া গাড়ি রয়েছে। কাউনিয়ায় থানা রোডে কথা হয় হারাগাছ ইউনিয়নের চর নাজির দহ গ্রামের ঘোড়াগাড়ি চালক আঃ খালেক সাথে, সে জানায় এক সময় তার সংসার চলতো না, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে পরিবার পরিজন নিয়ে। বাড়িতে তার স্ত্রীর পরামর্শে একটি এনজিও থেকে ঋন নিয়ে লালমনিরহাট জেলার  দুর্গাপুর হাট থেকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ঘোড়া কিনে আনে ও ৫ হাজার টাকা খরচ করে গাড়ি তৈরী করে। শুরু হয় তার পথ চলা। এর পর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। ইতি মধ্যে সে ঋন পরিশোধ করেছে, ২৫ শতক জমি ১ লাখ টাকা দিয়ে বন্ধক নিয়েছে। বর্তমানে তার প্রতিদিন ৬ থেকে ৭শ টাকা আয় হয়। ঘোড়ার পিছনে তার এক থেকে দেড়শ টাকা খাদ্য বাবদ ব্যয় হয়। ঘোড়া গাড়ির চাকা তার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে সে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে আছে। ঘোড়া গাড়ির ব্যাপারে হারাগাছ ইউপি চেয়ারম্যান রকিবুল হাসান পলাশ, বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী, টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, শহীদবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ হান্নান জানান ঘোড়া গাড়ির ফলে পরিবহনের সুবিধাসহ ব্যাপক কর্মস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আগে এ উপজেলায় ঘোড়া দেখা যেতনা, এখন প্রায় গ্রামে ঘোড়া গাড়ি হয়েছে। উপজেলা প্রাণী সম্পাদ কর্মকর্তা ডাঃ মনোজিৎ কুমার জানান গোড়ার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বেশী তাই এর তেমন কোন রোগ হয় না। এই বাহনটি পরিবেশ বান্ধব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আলম জানান গোড়া গাড়ির ফলে কৃষক তার উৎপদিত পন্য বাজারে নিয়ে গিয়ে ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় করতে পাচ্ছে। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন