মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করে যেতে চাই : প্রধানমন্ত্রী | Daily Chandni Bazar মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করে যেতে চাই : প্রধানমন্ত্রী | Daily Chandni Bazar
logo
প্রকাশিত : ১৪ জানুয়ারী, ২০২১ ১৮:১১
মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করে যেতে চাই : প্রধানমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক

মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করে যেতে চাই : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা সারাজীবন মানুষের সেবায় কাজ করে গেছেন। আমি প্রথম যেদিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিই সেদিনই বলেছিলাম, দেশের মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করব। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ আমার কাছে এটাই যে, আমি কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। আমার দল ও আমি মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করে যেতে চাই।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচির চার ধরনের ভাতা (বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা অসচ্ছল প্রতিবন্ধী এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি) মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এবং ‘বিকাশ’ এর মাধ্যমে গভর্নমেন্ট টু পারসন পদ্ধতিতে ভাতাভোগীর কাছে প্রেরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এ কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় এসব কথা বলেন। এ সময় চার জেলার ভাতাভোগীদের সঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা জীবন উৎসর্গ করে গেছেন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো অত্যন্ত কঠিন কাজ। কিন্তু সে কাজটাই তিনি করতে চেয়েছিলেন। নিজের জীবনের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য দেখেননি। নিজের জীবনের ভবিষ্যতের দিকে তাকাননি। তার পদচিহ্ন পড়েছে, সারা বাংলাদেশ চড়াই উৎরাই পার হয়েছে। বার বার আঘাত এসেছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, তিনি মৃত্যুকে সামনে থেকে দেখেছেন কিন্তু নিজের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হননি। ফাঁসির দড়িও তাকে টলাতে পারেনি। আমার পিতার কাছ থেকে সেই শিক্ষা আমরা পেয়েছি দেশকে ভালোবাসতে। কারণ তিনি বলতেন, আমার সংসার বা পরিবার নয় মানুষের চিন্তাই ছিল তার কাছে বড়। তিনি অনেক কঠিন কাজ করতে পেরেছেন। কারণ তার লক্ষ্য ঠিক ছিল, সততার পথে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। তিনি গ্রাম পর্যায়ের মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো মেয়ে বিধবা হলে তার স্থান কোথায় হয়, ছোট ছোট বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করেছি কেন তোমরা পথে পথে ঘোরো, কেন তারা পথশিশু হয় আমি তাদের সাথে কথা বলেছি। বিরোধী দলে থাকতে তাদের সাথে আলাপ করেছি এবং সরকারের এসেও তাদের ডেকে এনে কথা বলেছি। পারিবারিক সংঘাতের কারণে হয়ত তাকে ঘর ছাড়তে হয়েছে কিংবা বিধবা হয়েছে বা স্বামী তাকে ছেড়ে চলে অন্য একটি বিয়ে করেছে তার যাবার জায়গা নেই। না বাপের বাড়ি না শ্বশুর বাড়ি। তখন সে কাজের খোঁজে আসে এক পর্যায়ে তাকে পতিতালয়ে আশ্রয় নিতে হয়, ছেলে মেয়েগুলো পথশিশু হয়ে যায়।

সরকারপ্রধান বলেন, সামাজিক এই অবিচার থেকে রক্ষা করার জন্যই আমরা স্বামী পরিত্যক্তা বা বিধবাদের ভাতার ব্যবস্থা করেছি। আমি জানি তাদের হাতে টাকা থাকলে পরিবারে তাদের স্থান হবে। সামাজিক সমস্যাও দূর হবে। আমরা প্রথম শুরু করি তবে পরে বিএনপি এসে কিছু কাজ বন্ধ করে দেয়। আমরা যে ভাতাটি দিচ্ছি সেটি যেন সরাসরি যারটা তার হাতে পৌঁছায়। মাঝে যেন কেউ না থাকে। তাদের অর্থ তাদের হাতে যাবে, তারা তাদের অর্থ যেভাবে খুশি ব্যবহার করবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে আমাদের অনেক কর্মসূচি ছিল, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সারাবিশ্বে এই অবস্থা চলছে। আজকের কাজটিও আমি সামনে বসে করতে পারছি না, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। সবার হাতে হাতে এখন মোবাইল, আমরাই এটি তুলে দিয়েছিলাম। আগে ডিজিটাল ফোন ছিলই না। আমরা ক্ষমতায় এসে ডিজিটাল ফোন সারা বাংলাদেশে এনেছি। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশের কোনো মানুষ ঘর ছাড়া থাকবে না এবং কারও ঘর অন্ধকার থাকবে না, এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা যখন সমগ্র বাংলাদেশকে আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তখন তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। পরবর্তী সময়ে আমি মানুষের সমর্থন নিয়ে দেশে ফিরে আসি। বাবার মতো দুস্থ মানুষের কষ্ট দেখতে সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছি। মাইলের পর মাইল হেঁটে তাদের কষ্ট দেখেছি। তখন আমরা দলের পক্ষ থেকে মানুষের পাশে থেকেছি। ৯৬ সালে সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধা, বৃদ্ধ ও স্বামী পরিত্যক্তা মানুষদের সহায়তায় কাজ শুরু করি। পরবর্তী সময়ে প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেছি। পরবর্তী সময়ে গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দেয়ার কাজ করি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে। বস্তিবাসীদের উন্নয়নেও আমরা কাজ করেছি।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু।

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন